শেখ হাসিনার শাসনামলে গায়েবি মামলা
জড়িতদের চিহ্নিত করতে কমিশন গঠনে রিট
যুগান্তর প্রতিবেদন
প্রকাশ: ২৫ সেপ্টেম্বর ২০২৪, ১২:০০ এএম
প্রিন্ট সংস্করণ
শেখ হাসিনার আমলে গায়েবি মামলা সূত্রে হয়রানি, গ্রেফতার ও নির্যাতনে জড়িতদের চিহ্নিত করে আইনের আওতায় আনতে উচ্চক্ষমতাসম্পন্ন বিচার বিভাগীয় তদন্ত কমিশন গঠনের নির্দেশনা চেয়ে রিট হয়েছে। সুপ্রিমকোর্টের এক আইনজীবী মঙ্গলবার হাইকোর্টের সংশ্লিষ্ট শাখায় এই রিট করেন। এই তদন্ত কমিশন গঠন করার আবেদন জানিয়ে সংশ্লিষ্ট কর্তৃপক্ষের বরাবর ২৮ আগস্ট আইনি নোটিশ পাঠান সুপ্রিমকোর্টের আইনজীবী তৈমুর আলম খান। নোটিশে তিনি নিজেকে গায়েবি মামলার অভিযোগপত্রভুক্ত আসামি উল্লেখ করেন।
ওই নোটিশের জবাব না পেয়ে মঙ্গলবার রিটটি করেছেন বলে জানিয়েছেন আইনজীবী তৈমুর আলম খন্দকার। তিনি যুগান্তরকে বলেন, শেখ হাসিনার আমলে অনেক গায়েবি মামলা হয়েছে। এসব গায়েবি মামলায় হয়রানি, গ্রেফতার ও নির্যাতনে জড়িতদের চিহ্নিত করে আইনের আওতায় আনার পাশাপাশি ক্ষতিগ্রস্তদের ক্ষতির পরিমাণ নির্ধারণে উচ্চক্ষমতাসম্পন্ন বিচার বিভাগীয় তদন্ত কমিশন গঠনের নির্দেশনা চাওয়া হয়েছে। তিনি বলেন, আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনীর সদস্যদের কাজে বাধা, বিস্ফোরক দ্রব্যাদি ও বিশেষ ক্ষমতা আইনে যেসব ‘গায়েবি মামলা’ হয়েছে, সেগুলোর কার্যক্রম স্থগিত চাওয়া হয়েছে রিটে। শিগগিরই রিট শুনানির জন্য আদালতে উপস্থাপন করা হবে। আইন সচিব, স্বরাষ্ট্র সচিব, পুলিশের মহাপরিদর্শক ও র্যাবের মহাপরিচালককে রিটে বিবাদী করা হয়েছে।
২০১৮ সালের জাতীয় সংসদ নির্বাচনের আগে সারা দেশে এ রকম অসংখ্য মামলা হয়েছিল যেসবের বাদী ছিল পুলিশ। ওই নির্বাচনের আগের ৩ মাসে (সেপ্টেম্বর-নভেম্বর) শুধু ঢাকা মহানগরে নাশকতার অভিযোগে ৬৯৭টি মামলা হয়। এর ২০১৮ সালের সেপ্টেম্বরেই ঢাকায় মামলা হয়েছিল ৫৭৮টি। বিস্ফোরক দ্রব্য ও বিশেষ ক্ষমতা আইনে করা এসব মামলা তখন ‘গায়েবি মামলা’ নামে পরিচিতি পায়। নির্বাচনকে সামনে রেখে ওই সময়ের মতো ২০২৪-এর নির্বাচনের আগেও ‘গায়েবি’ মামলা করা হচ্ছে উল্লেখ করে বিএনপির নেতাকর্মীরা বলেছেন, এসব মামলার উদ্দেশ্য, বিএনপির নেতাকর্মীদের ঘরছাড়া করা। তবে এবারের ব্যতিক্রম হচ্ছে, ক্ষমতাসীন দলের নেতাকর্মীরা মামলার বাদী হন। এক তথ্যমতে ২০২২ সালের ১৭ নভেম্বর থেকে ২০২৩ সালের ৩০ মে পর্যন্ত সময়ে করা মামলায় আসামি হিসাবে বিএনপি ও এর অঙ্গসংগঠনের ১ হাজার ৭০১ জন নেতাকর্মীর নামোল্লেখ করা হয়। অজ্ঞাতনামা আসামির সংখ্যা আরও ২ হাজার ৫৭৫ জন।