Logo
Logo
×

প্রথম পাতা

হার্ডলাইনে এনবিআর

সালমান-নজরুলসহ ৫ প্রভাবশালীর কর ফাঁকির খোঁজ

Icon

সাদ্দাম হোসেন ইমরান

প্রকাশ: ২২ আগস্ট ২০২৪, ১২:০০ এএম

প্রিন্ট সংস্করণ

সালমান-নজরুলসহ ৫ প্রভাবশালীর কর ফাঁকির খোঁজ

সালমান এফ রহমান ও নজরুল ইসলাম মজুমদার। ফাইল ছবি

আওয়ামী লীগ সরকারের আশ্রয়-প্রশ্রয়ে বিজনেস টাইকুন হয়ে ওঠা ৫ শিল্পপতির আয়কর ফাঁকি অনুসন্ধান শুরু করেছে জাতীয় রাজস্ব বোর্ড (এনবিআর)। এ তালিকায় আছেন-সদ্য পদত্যাগী প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার বেসরকারি শিল্প ও বিনিয়োগ বিষয়ক উপদেষ্টা এবং বেক্সিমকো গ্রুপের কর্ণধার সালমান এফ রহমান, নাসা গ্রুপের চেয়ারম্যান নজরুল ইসলাম মজুমদার, সামিট গ্রুপের চেয়ারম্যান মুহাম্মদ আজিজ খান, বসুন্ধরা গ্রুপের চেয়ারম্যান আহমেদ আকবর সোবহান ও ওরিয়ন গ্রুপের চেয়ারম্যান ওবায়দুল করিম। শুরুতে এসব ব্যক্তিদের ব্যক্তিগত আয়কর ফাঁকির অনুসন্ধান করা হবে। পর্যায়ক্রমে তাদের মালিকানাধীন কোম্পানিগুলোর কর ফাঁকি উদ্ঘাটনে এনবিআরের কেন্দ্রীয় গোয়েন্দা সেলের (সিআইসি) বিশেষ টিম কাজ করবে। দায়িত্বশীল সূত্রে এ তথ্য জানা গেছে।

সূত্র জানায়, আওয়ামী লীগ সরকারের আমলে কতিপয় ব্যবসায়ী গ্রুপ অলিগার্ক হয়ে ওঠে। এরা দেশের প্রচলিত আইন-কানুনকে তোয়াক্কা না করে ব্যাংক লুট, অর্থ পাচারে নেতৃত্বে দিয়েছে। সরকারের প্রশ্রয়ে থাকায় তাদের বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নেওয়া যায়নি। এনবিআরের নতুন চেয়ারম্যান আব্দুর রহমান খান এসব অলিগার্কের কর ফাঁকি অনুসন্ধানের নির্দেশ দিয়েছেন। এর প্রেক্ষিতে বৃহস্পতিবার সংশ্লিষ্ট কর অঞ্চলগুলোকে চিঠি দিয়ে তাদের ফাইল সিআইসিতে পাঠাতে বলা হবে। পাশাপাশি অনুসন্ধানের স্বার্থে শিগগিরই তাদের ব্যাংক হিসাব, ক্রেডিট কার্ডের তথ্য তলব করা হবে। সূত্র আরও জানায়, প্রাথমিকভাবে এসব ব্যক্তিদের ব্যক্তিগত আয়কর ফাইল অডিট করা হবে। এসব ব্যক্তিদের ফাইল ৩৬০ ডিগ্রি অডিট করা হবে। এই অডিটে তাদের স্বার্থ সংশ্লিষ্ট অন্য কোনো ব্যক্তির সম্পৃক্ততা পাওয়া গেলে তাদেরও ফাইল অডিট করা হবে। বিশেষ টিম গঠনের মাধ্যমে তাদের গ্রুপের অধীনে থাকা সব কোম্পানির আয়কর, ভ্যাট ও শুল্কসংক্রান্ত অনিয়ম অনুসন্ধানের পরিকল্পনা আছে।

অন্যদিকে কর অঞ্চল-১৫ থেকে আরেক ব্যবসায়ী গোষ্ঠী এস আলম ও তার পরিবারের কর ফাঁকি অনুসন্ধান শুরু করেছে। গত ১৫ আগস্ট এস আলমের (সাইফুল আলম) স্ত্রী ফারজানা পারভীন, মা চেমন আরা বেগম এবং ভাই আবদুল্লাহ হাসানের ব্যাংক হিসাব তলব করা হয়েছে। পাশাপাশি তাদের পিতা-মাতা, স্ত্রী, ছেলে-মেয়ে, ভাই বা বোনের যৌথ নামে অথবা ব্যবসা প্রতিষ্ঠানের নামে থাকা ব্যাংক হিসাবের তথ্য চাওয়া হয়েছে। এছাড়া তাদের নামে থাকা ক্রেডিট কার্ড, জাতীয় সঞ্চয় অধিদপ্তর ও ডাক বিভাগের কাছে থাকা হিসাবের তথ্য চাওয়া হয়েছে।

গত ২২ জুলাই প্রধানমন্ত্রীর কার্যালয়ে আয়োজিত সভায় গণঅভ্যুত্থানকে ষড়যন্ত্র আখ্যা দিয়ে সালমান এফ রহমান বলেন, স্বাধীনতাবিরোধীরা সব সময় সক্রিয় ছিল। এখন তারাই আবার ষড়যন্ত্র করছে। নাসা গ্রুপের চেয়ারম্যান ও ব্যাংক মালিকদের সংগঠন বিএবির (ব্যাংকার্স অ্যাসোসিয়েশন অব বাংলাদেশ) সভাপতি নজরুল ইসলাম মজুমদার বলেন, যেই চক্রটি বঙ্গবন্ধুকে হত্যা করেছে, সেই চক্রটি প্রধানমন্ত্রী হত্যার মাধ্যমে স্বার্থ হাসিল করতে চায়। এ সহিংসতার সেটাই উদ্দেশ্য ছিল। না হলে এতে অল্প সময়ে সুপরিকল্পিতভাবে অগ্নিসন্ত্রাস ও প্রলয় চালানো সম্ভব ছিল না। শুধু পুলিশ নয়, সবাই মিলে এদের প্রতিহত করতে হবে। তিনি আরও বলেন, প্রধানমন্ত্রীর সঙ্গে আমরা ছিলাম, আছি এবং আমরা থাকব। প্রধানমন্ত্রীর উন্নয়নের সব প্রচেষ্টা বাস্তবায়নে কাজ করব।

পদত্যাগী প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনাকে উদ্দেশ্য করে বসুন্ধরা গ্রুপের চেয়ারম্যান আহমেদ আকবর সোবহান বলেন, কারফিউ আরও আগে দেওয়া হলে এত ক্ষয়ক্ষতি হতো না। এক মাস ব্যবসা বন্ধ থাকলে কিছু হবে না। কিন্তু এই জঙ্গি বাহিনীকে ধ্বংস করতে হবে। তা না হলে কেউ ব্যবসায়ী হিসাবে থাকতে পারবে না। আপনার নেতৃত্বে আমরা এগিয়ে গেছি। ১৪ বছর আগে আমি কোথায় ছিলাম, এখন কোথায় এসেছি। আমার ব্যবসা ১৪ গুণ বেড়েছে। আপনার নেতৃত্বের প্রতি আস্থা আছে। মৃত্যুর আগের দিন পর্যন্ত আপনার প্রতি আমাদের আস্থা থাকবে, মৃত্যুর পরও আস্থা-বিশ্বাস থাকবে।

 

Jamuna Electronics

Logo

সম্পাদক : সাইফুল আলম

প্রকাশক : সালমা ইসলাম