সহপাঠীদের স্মরণ করে শিক্ষার্থীদের ক্লাস শুরু
ঢাকার স্কুলে উপস্থিতি কম
যুগান্তর প্রতিবেদন
প্রকাশ: ১৯ আগস্ট ২০২৪, ১২:০০ এএম
প্রিন্ট সংস্করণ
কোটা সংস্কার ও ছাত্র-জনতার আন্দোলন ঘিরে দীর্ঘদিন বন্ধ থাকার পর খুলেছে দেশের সব শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান। আন্দোলনে প্রাণ হারানো শিক্ষার্থীদের স্মরণ করে শুরু হয় পাঠদান। তবে রাজধানীর শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানে শিক্ষার্থী উপস্থিতি ছিল কম। উপস্থিতির হার ছিল প্রায় ৬০ শতাংশের মতো। আজ থেকে উপস্থিতি বাড়তে পারে বলে জানান সংশ্লিষ্টরা।
এদিন রাজধানীর বিএফ শাহীন কলেজের শিক্ষার্থীরা ক্লাসে-পরীক্ষার টেবিলে ফিরলেও ফেরেনি তাদের সহপাঠী আহনাফ। আহনাফের টেবিলটা আজ ফাঁকা। তার স্মরণে বন্ধুরা সেখানে ফুল রেখেছে। শোকাহত বন্ধুরা তাদের প্রিয় সহপাঠীকে কখনো ভুলতে পারবে না। বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনকে কেন্দ্র করে সংঘর্ষে ৪ আগস্ট রাজধানীর মিরপুর ১০ নম্বরে গুলিতে নিহত হন শাফিক উদ্দিন আহমেদ আহনাফ। তার বয়স হয়েছিল ১৭ বছর। একাদশ শ্রেণির শিক্ষার্থী ছিল আহনাফ।
একই ভাবে ১৮ জুলাই পুলিশের গুলিতে মারা যান ঢাকা রেসিডেন্সিয়াল মডেল স্কুল এন্ড কলেজের শিক্ষার্থী ফারহান ফাইয়াজ। এদিন স্কুলের শিক্ষার্থীরা তার হারানো সহপাঠী স্মরণ করেছে। স্কুলের গেটে সামনে ফাইয়াজের ছবি ঝুলানো হয়। তার ছবির দিকে আবেগ আপ্লুত হয়ে তাকিয়ে ছিল সহপাঠী ও স্কলের শিক্ষার্থীরা। শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান খোলার প্রথম দিন এভাবেই শোকাহত ছিলেন সহপাঠী ও শিক্ষক-শিক্ষার্থীরা।
সরেজমিন দেখা যায়, রাজধানীর মতিঝিল আইডিয়াল স্কুল অ্যান্ড কলেজের উপস্থিতি ছিল মাত্র ৪০ শতাংশ। ভিকারুননিসা নূন স্কুল অ্যান্ড কলেজে উপস্থিতি ছিল ৬০ থেকে ৭০ শতাংশ। তবে ঢাকা রেসিডেন্সিয়াল মডেল স্কুল এন্ড কলেজের ৮০ শতাংশের মতো শিক্ষার্থী উপস্থিত ছিল।
এদিকে গত ৭ আগস্ট আন্তঃবাহিনী জনসংযোগ পরিদপ্তর (আইএসপিআর) এক বিজ্ঞপ্তিতে সব শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান খুলে দেওয়ার নির্দেশনার কথা জানায়। এতে রাজধানীর শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানে শিক্ষার্থীদের উপস্থিতি ছিল অনেক কম। এই উপস্থিতির হার ছিল প্রায় ১০ শতাংশের মতো। তবে সকালের শিফটে বেশি থাকলেও বিকালের শিফটে এ উপস্থিতির হার অনেক কম দেখা গেছে। আবার গত বৃহস্পতিবার শিক্ষা মন্ত্রণালয়ের এক প্রেস বিজ্ঞপ্তি রোববার শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান খোলার সিদ্ধান্ত জানায়।
চাকরিতে কোটা সংস্কারের দাবিতে আন্দোলনের একপর্যায়ে সংঘর্ষের ঘটনা ঘটে। এর পরিপ্রেক্ষিতে ১৭ জুলাই থেকে শিক্ষার্থীদের নিরাপত্তার কথা বিবেচনা করে অনির্দিষ্টকালের জন্য শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানের শ্রেণি কার্যক্রম বন্ধ ঘোষণা করা হয়। এরপর প্রথমে ৪ আগস্ট থেকে ১২টি সিটি করপোরেশন ও নরসিংদী পৌরসভা বাদে বাকি সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ে ক্লাস শুরুর কথা থাকলেও সেটিও বন্ধ করা হয়।
একদফা দাবির মুখে প্রধানমন্ত্রীর পদ থেকে পদত্যাগ করে দেশ ছাড়েন শেখ হাসিনা। দেশ পরিচালনায় অন্তর্বর্তীকালীন সরকার গঠনের লক্ষ্যে আলোচনা শুরু হয়েছে। এ পরিস্থিতিতে স্কুল, কলেজ, মাদ্রাসা, বিদ্যালয়সহ সব শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান খুলে দেওয়া হয়েছে।