Logo
Logo
×

প্রথম পাতা

মায়ের সঙ্গে সেফ-হাউজে দেখা করলেন পুতুল

আর মাত্র ৪৮ ঘণ্টা ভারতে শেখ হাসিনা!

Icon

কৃষ্ণকুমার দাস, কলকাতা

প্রকাশ: ০৮ আগস্ট ২০২৪, ১২:০০ এএম

প্রিন্ট সংস্করণ

মায়ের সঙ্গে সেফ-হাউজে দেখা করলেন পুতুল

ছবি: সংগৃহীত

আরও ৪৮ ঘণ্টা ভারতে থাকবেন বাংলাদেশের সদ্য ইস্তফা দিয়ে চলে আসা প্রাক্তন প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা। কিন্তু এর পর কোথায় যাবেন মুজিবকন্যা? শোনা যাচ্ছে, ব্রিটেন তাকে আশ্রয় দিতে রাজি নয়। আবার আমেরিকাও নাকি ভিসা বাতিল করেছে। মার্কিন মুলুকে রয়েছেন তার ছেলে সজীব ওয়াজেদ জয়। এই পরিস্থিতিতে প্রশ্ন উঠছে, ভারতে কি রাজনৈতিক আশ্রয় চাইতে পারেন হাসিনা? যদিও বুধবার রাতের খবর, নয়াদিল্লির নরেন্দ্র মোদির সরকার প্রতিবেশী বাংলাদেশের পরবর্তী সরকারের সঙ্গে ‘সুসম্পর্ক’ গড়ে তোলার লক্ষ্যেই আপাতত তাকে ভারতে স্থায়ীভাবে আশ্রয় দিতে রাজি নয়। তাৎপর্যপূর্ণ হলো, মঙ্গলবার গভীর রাতে দিল্লির সেফ-হাউজে গিয়ে মায়ের সঙ্গে দেখা করেন হাসিনা-কন্যা সায়মা ওয়াজেদ পুতুল। ঘণ্টা দেড়েক মা ও মেয়ের কথা হয়। তখন সেখানে ছিলেন শেখ রেহানাও। কিন্তু কী কথা হয়েছে এবং পরবর্তীতে মায়ের সঙ্গেই বিদেশে চলে যাবেন কি না তা এখনো রহস্যে ঘেরা।

শেখ হাসিনাকে আশ্রয় না দেওয়া প্রসঙ্গে ব্রিটেন দূতাবাসের তরফে এদিন নয়াদিল্লিতে জানানো হয়েছে, এই সব ক্ষেত্রে সেই ব্যক্তির উচিত প্রথম যে দেশে তিনি নিরাপত্তা পাচ্ছেন সেখানেই আশ্রয় নেওয়া। স্বাভাবিকভাবেই মনে করা হচ্ছে তার ইঙ্গিত ভারতের দিকেই। যদিও এখনও পর্যন্ত শেখ হাসিনা যে নয়াদিল্লির কাছে আশ্রয় চেয়েছেন এমন খবর নেই। কিন্তু যদিও তিনি তা চান, তাহলে মোদি সরকার তা দেবে না বলেই মনে করছে ওয়াকিবহাল মহল। এর পেছনে প্রধান কারণ, এখনও পর্যন্ত বাংলাদেশের সাম্প্রতিক পরিস্থিতি নিয়ে ‘ধীরে চলো’ নীতিই নিয়েছে ভারত। কিন্তু হাসিনাকে আশ্রয় দিলে এই সংঘর্ষে কোনো একটি পক্ষ নিয়ে ফেলবে নয়াদিল্লি। কিন্তু বাংলাদেশের পরবর্তী সরকারের সঙ্গেও কূটনৈতিক সম্পর্ক রাখতে হলে এই পদক্ষেপ নিতে না চাওয়াই বোধহয় স্বাভাবিক হবে। শেখ হাসিনাকে আশ্রয় না দিলে ভারতের তরফে এই বার্তা দেওয়া সম্ভব হবে যে, কোনো নির্দিষ্ট নেতা নয়, বাংলাদেশের প্রশাসনের সঙ্গে কূটনৈতিক সম্পর্ক রাখতে চায় নয়াদিল্লি।

এদিকে দেশের পূর্ব দিকে বাংলাদেশের সঙ্গে ৪ হাজার ৯৬ কিমি সীমান্ত রয়েছে ভারতের। শেখ হাসিনাকে আশ্রয় দিলে নয়াদিল্লিকে ‘হস্তক্ষেপকারী’ হিসাবে ধরে নিয়ে বড়সড় ষড়যন্ত্র করতে পারে বাংলাদেশের জঙ্গি গোষ্ঠীগুলো। এমনিতেই বর্তমান পরিস্থিতিতে সীমান্তে নজরদারি কড়া করা হয়েছে। নতুন করে বিপদ বাড়াতে চাইবে না ভারত, এমনটাই মনে করছে ওয়াকিবহাল মহল। ফলে সব মিলিয়ে হাসিনাকে এ দেশে আশ্রয় না দেওয়ার পথেই নয়াদিল্লি হাঁটবে বলে মনে করা হচ্ছে।

প্রধানমন্ত্রী পদে ইস্তফার পর তড়িঘড়ি বাংলাদেশ ছেড়েছেন শেখ হাসিনা। সাময়িকভাবে ভারতে আশ্রয় নিয়েছেন তিনি। বাংলাদেশি সংবাদমাধ্যম ‘প্রথম আলো’য় প্রকাশ, তাকে প্রায় ৪৫ মিনিট সময় দেওয়া হয়েছিল বাংলাদেশ ছাড়ার জন্য। শেখ হাসিনা বাংলাদেশ ছাড়তেই প্রধানমন্ত্রীর বাসভবন গণভবনে ধরা পড়েছিল আন্দোলনকারীদের উল্লাসের ছবি। শুধু উল্লাস নয়, যে যা পেরেছেন, গণভবন থেকে তা-ই নিয়ে গেছেন। তাড়াহুড়োর মধ্যে কি কিছুই সঙ্গে নিয়ে আসতে পারেননি হাসিনা? সংবাদমাধ্যম ‘এনডিটিভি ইন্ডিয়া’ এক সূত্রকে উদ্ধৃত করে জানাচ্ছে, শেখ হাসিনা দুটি স্যুটকেস নিয়ে বাংলাদেশ ছেড়েছিলেন। এ ছাড়া আর কিছুই সঙ্গে আনতে পারেননি তিনি। ওই স্যুটকেসগুলোতে ছিল কিছু পোশাক ও জরুরি নথিপত্র। বাংলাদেশের রাজনীতিতে অন্যতম চর্চিত, আলোচিত ও সমালোচিত মুখ শেখ হাসিনা। মুজিব-কন্যা হাসিনার সম্পত্তির পরিমাণ কত, সেই হিসাব-নিকাশও তুলে ধরা হয়েছে ওই প্রতিবেদনে। চলতি বছরে বাংলাদেশের ভোটের আগে সে দেশের নির্বাচন কমিশনকে সম্পত্তির হিসাব দিয়েছিলেন হাসিনা। ‘এনডিটিভি ইন্ডিয়া’র ওই প্রতিবেদনে প্রকাশ, নির্বাচন কমিশনকে দেওয়া হিসাব অনুযায়ী শেখ হাসিনার চার কোটি ৩৬ লাখ টাকার (বাংলাদেশি মুদ্রায়) সম্পত্তি রয়েছে। ভারতীয় মুদ্রায় তিন কোটি ১৪ লাখ টাকা।

শেখ হাসিনা বাংলাদেশ ছাড়ার পরের দিনই দেশটির রাষ্ট্রপতি মো. সাহাবুদ্দিন ভেঙে দেন বাংলাদেশের জাতীয় সংসদ। চলতি বছরের শুরুর দিকেই বাংলাদেশে সাধারণ নির্বাচন ছিল। টানা চতুর্থবার জয়ী হয়েছিল হাসিনার দল। বাংলাদেশের সংসদে আওয়ামী লীগ ও তার শরিক দলগুলো মিলে ৩০০ আসনের মধ্যে জিতেছিল ২২৫ আসন। তার পর এক বছরও স্থায়ী হলো না হাসিনার চতুর্থ সরকার। কোটা সংস্কার আন্দোলন ও বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলন-দুই দফার আন্দোলনে তিনশর বেশি মানুষের মৃত্যু হয়েছে। পরিস্থিতি এমন পর্যায়ে পৌঁছায় যে ইস্তফা দিয়ে দেশত্যাগ করতে বাধ্য হন হাসিনা।

‘এনডিটিভি ইন্ডিয়া’য় প্রকাশ, কোনো কোনো সূত্রের দাবি, তিনি বাংলাদেশ ছাড়ার পর তার ব্যাংক অ্যাকাউন্ট ফ্রিজ করা হয়ে থাকতে পারে। যদিও সরকারিভাবে এমন কোনো তথ্য পাওয়া যায়নি।

Jamuna Electronics

Logo

সম্পাদক : সাইফুল আলম

প্রকাশক : সালমা ইসলাম