Logo
Logo
×

প্রথম পাতা

দেশজুড়ে টানা কারফিউ ৩ দিনের সাধারণ ছুটি

ব্যাংক, আর্থিক প্রতিষ্ঠান ও আদালত বন্ধ, ট্রেনও চলবে না

Icon

যুগান্তর প্রতিবেদন

প্রকাশ: ০৫ আগস্ট ২০২৪, ১২:০০ এএম

প্রিন্ট সংস্করণ

দেশজুড়ে টানা কারফিউ ৩ দিনের সাধারণ ছুটি

বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলন ঘিরে সহিংসতা ও অসহযোগ কর্মসূচিতে স্থবির হয়ে গেছে গোটা দেশ। এরকম পরিস্থিতিতে রোববার সন্ধ্যা ৬টা থেকে অনির্দিষ্টকালের জন্য কারফিউ জারি করেছে সরকার। রোববার (৪ আগস্ট) স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের সিনিয়র তথ্য অফিসার শরীফ মাহমুদ অপু এক সংবাদ বিজ্ঞপ্তিতে কারফিউ জারির বিষয়টি নিশ্চিত করেন।

অপরদিকে সোমবার থেকে নির্বাহী আদেশে ৩ দিনের সাধারণ ছুটি ঘোষণা করা হয়েছে। এর ফলে সোমবার, মঙ্গলবার ও বুধবার সব সরকারি, অধা-সরকারি, স্বায়ত্তশাসিত, আধাস্বায়ত্তশাসিত এবং বেসরকারি অফিসগুলো বন্ধ থাকবে। রোববার জনপ্রশাসন মন্ত্রণালয় থেকে নির্বাহী আদেশে দেওয়া ছুটির প্রজ্ঞাপন জারি করা হয়। সাধারণ ছুটির কারণে ব্যাংক ও আর্থিক প্রতিষ্ঠানসহ আদালতের কার্যক্রমও বন্ধ থাকবে। রেলওয়ে সূত্র জানিয়েছে, পরবর্তী নির্দেশ না দেওয়া পর্যন্ত ট্রেনও চলবে না। তবে ছুটির সময় জরুরি সরকারি পরিষেবা যেমন-বিদ্যুৎ, পানি, গ্যাস, জ্বালানি, ফায়ার সার্ভিস এবং বন্দরের কার্যক্রম চালু থাকবে। পরিচ্ছন্নতা কার্যক্রম, টেলিফোন, ইন্টারনেট ও ডাক সেবা এবং সংশ্লিষ্ট কাজে নিয়োজিত ব্যক্তি ও পরিবহণ ছুটির বাইরে থাকবে। অর্থাৎ তারা স্বাভাবিক সময়ের মতোই অফিস করতে হবে। হাসপাতাল ও জরুরি সেবা চিকিৎসক, সেবা সংশ্লিষ্ট কর্মীগণ এ ছুটির বাইরে থাকবে। অর্থাৎ তারা স্বাভাবিক সময়ের মতো অফিস করতে হবে। চিকিৎসা সেবার সঙ্গে সম্পৃক্ত ডাক্তার, নার্স, ওষুধ, সরঞ্জাম এবং পরিবহণ স্বাভাবিক নিয়মে আগের মতোই চলবে। জরুরি সেবার সঙ্গে সম্পৃক্ত অফিসসমূহ এ আদেশের বাইরে থাকবে। ব্যাংকিং কার্যক্রম পরিচালনায় বাংলাদেশ ব্যাংক এবং দেশের আদালতগুলো পরিচালনার জন্য পৃথক নির্দেশনা জারি করবে যথাক্রমে বাংলাদেশ ব্যাংক ও সুপ্রিমকোর্ট।

স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয় থেকে জারি করা সংবাদ বিজ্ঞপ্তিতে বলা হয়, সন্ধ্যা ৬টা থেকে পরবর্তী নির্দেশ না দেওয়া পর্যন্ত ঢাকা মহানগরসহ সব বিভাগীয় সদর, সিটি করপোরেশন, পৌরসভা, শিল্পাঞ্চল, জেলা সদর ও উপজেলা সদরে সান্ধ্য আইন বলবৎ করা হলো।

কারফিউর বিষয়ে স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের সিনিয়র তথ্য অফিসার শরীফ মাহমুদ অপু গণমাধ্যমকে বলেন, পরবর্তী নির্দেশ না দেওয়া পর্যন্ত কারফিউ নন-স্টপ চলতে থাকবে। আগে যেমন শিডিউলভিত্তিক কারফিউ জারি ছিল এখন সেটা না থেকে একটানা চলবে।

কোটা সংস্কার আন্দোলন ঘিরে সৃষ্ট পরিস্থিতিতে গত ১৯ জুলাই কারফিউ জারি করে সরকার। এরপর ধাপে ধাপে বিভিন্ন জেলায় শিথিল রাখা হয়। সর্বশেষ গত শনিবার কেন্দ্রীয় শহিদ মিনারে কোটা আন্দোলনকারীদের বিক্ষোভ সমাবেশ থেকে সরকার পদত্যাগের একদফা ঘোষণা করা হয়। একইসঙ্গে আজ থেকে দেশজুড়ে অসহযোগ আন্দোলনের ঘোষণা দেয় আন্দোলনকারীরা।

শনিবার রাতে সচিবালয়ে আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনীর ঊর্ধ্বতন কর্মকর্তাদের সঙ্গে বৈঠকের পর স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী আসাদুজ্জামান খান কামাল জানান, ঢাকা, নারায়ণগঞ্জ, গাজীপুর ও নরসিংদীতে পরবর্তী নির্দেশনা না দেওয়া পর্যন্ত সকাল ৬টা থেকে রাত ৯টা পর্যন্ত অর্থাৎ ১৫ ঘণ্টা কারফিউ শিথিল থাকবে। অন্যান্য জেলায় স্থানীয় প্রশাসন কারফিউ সময়সীমা নির্ধারণ বিষয়ে সিদ্ধান্ত নেবে। স্বরাষ্ট্রমন্ত্রীর এ ঘোষণার পর রোববার বিকালে নতুন এ সিদ্ধান্তের কথা জানানো হয়।

ইতোপূর্বে কোটা সংস্কার আন্দোলন ঘিরে সহিংসতা-সংঘাত ছড়িয়ে পড়লে গত ১৯ জুলাই রাতে সারা দেশে কারফিউ জারি করে সেনা মোতায়েনের সিদ্ধান্ত নেয় সরকার। পরে ২১ থেকে ২৩ জুলাই পর্যন্ত সাধারণ ছুটি ঘোষণা করা হয়। ২৪ ও ২৫ জুলাই বেলা ১১টা থেকে বিকাল ৩টা পর্যন্ত সীমিতভাবে চলে সরকারি-বেসরকারি অফিস। পরিস্থিতি আরও স্বাভাবিক হলে গত রবি, সোম ও মঙ্গলবার (২৮, ২৯ ও ৩০ জুলাই) অফিস চলে সকাল ৯টা থেকে বিকাল ৩টা পর্যন্ত। বুধবার (৩১ জুলাই) থেকে স্বাভাবিক সময় ধরে চলছে সরকারি-বেসরকারি অফিস।

ফের পরিস্থিতি আবারও উত্তপ্ত হতে শুরু করেছে। বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনের সমন্বয়ক মো. নাহিদ ইসলাম ঢাকায় কেন্দ্রীয় শহিদ মিনারে বিক্ষোভ সমাবেশ থেকে সরকার পদত্যাগের একদফা দাবি ঘোষণা করেন। শনিবার বিকাল সাড়ে ৫টার দিকে শহিদ মিনারে সমবেত ছাত্র-জনতার উদ্দেশে বক্তব্য দেন নাহিদ। তিনি বলেন, প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা এবং তার মন্ত্রিসভাকে পদত্যাগ করতে হবে। নাহিদ ইসলাম বলেন, আর এক মিনিটও এ সরকার থাকবে না। এক দফা এক দাবি শেখ হাসিনার পদত্যাগ।

ব্যাংক ও আর্থিক প্রতিষ্ঠানও বন্ধ

সরকার সাধারণ ছুটি ঘোষণা করায় তিন দিন ব্যাংক ও আর্থিক প্রতিষ্ঠানও বন্ধ থাকবে। ফলে সোমবার, মঙ্গলবার ও বুধবার এই তিন দিন ব্যাংক ও আর্থিক প্রতিষ্ঠান বন্ধ থাকবে। ফলে ওই তিন দিন ব্যাংকগুলোতে কোন লেনদেন হবে না। রোববার সন্ধ্যায় বাংলাদেশ ব্যাংকের নির্বাহী পরিচালক মুখপাত্র মেজবাউল হক এ তথ্য জানিয়েছেন।

এদিকে ব্যাংকগুলোর সূত্র জানায়, ব্যাংকগুলোর এটিএম সেবা ও অনলাইন ব্যাংকিং চালু থাকবে। তবে ইন্টারনেট বন্ধ হয়ে গেলে এসব লেনদেন কার্যক্রমও বাধাগ্রস্ত হবে।

Jamuna Electronics

Logo

সম্পাদক : সাইফুল আলম

প্রকাশক : সালমা ইসলাম