জিহাদের স্বপ্ন থেমে গেল পঁচিশেই
দশমিনা ও দক্ষিণ (পটুয়াখালী) প্রতিনিধি
প্রকাশ: ৩০ জুলাই ২০২৪, ১২:০০ এএম
প্রিন্ট সংস্করণ
ছবি সংগৃহীত
পঁচিশ বছর বয়সি তরুণ জিহাদ মোল্লা। স্বপ্নবাজ জিহাদ যেমন ছিলেন মেধাবী, ঠিক তেমনই ছিলেন প্রতিবাদী। কিন্তু এই প্রতিবাদ তাকে পঁচিশেই থামিয়ে দিয়েছে। কোটা সংস্কার আন্দোলনে সংঘাতের সময় ১৯ জুলাই রাজধানীর যাত্রাবাড়ীতে গুলিতে নিহত হন তিনি। আদরের সন্তানকে হারিয়ে এখন বাকরুদ্ধ পরিবার। জিহাদ পটুয়াখালীর দশমিনা উপজেলা সদরের মোল্লাবাড়ির নুরুল আমিন মোল্লার ছোট ছেলে। দুই ভাই ও দুই বোনের মধ্যে জিহাদ ছিলেন সবার ছোট।
জানা যায়, ২০১৬ সালে দশমিনা সরকারি মডেল মাধ্যমিক বিদ্যালয় থেকে এসএসসিতে বিজ্ঞান বিভাগে ঈর্ষণীয় ফল করেন জিহাদ। মধ্যবিত্ত পরিবারের বাবা-মা তাকে মানসম্মত শিক্ষার জন্য ওই বছরই ঢাকার স্যার সলিমুল্লাহ কলেজে ভর্তি করেন। সেখান থেকে ২০১৮ সালে এইচএসসি পাশ করেন। পরে কবি নজরুল সরকারি কলেজ থেকে ইতিহাস বিভাগে স্নাতক সম্পন্ন করেন। একই কলেজে এমএ প্রথমবর্ষে ভর্তি হন।
জিহাদ ঢাকার যাত্রাবাড়ীর একটি ভাড়া বাসায় থেকে পড়াশোনা করতেন। ১৯ জুলাই যাত্রাবাড়ীতে কোটা আন্দোলনে গিয়ে বিকাল ৪টার দিকে গুলিবিদ্ধ হন জিহাদ। পরে সহপাঠীরা ঢাকা মেডিকেল কলেজ (ঢামেক) হাসপাতালে নিয়ে গেলে এক ঘণ্টা পর তার মৃত্যু হয়। ২০ জুলাই রাতে তার লাশ দশমিনার বাড়িতে নেওয়া হয়। পরদিন ভোরে জানাজা শেষে পারিবারিক কবরস্থানে তার লাশ দাফন করা হয়।
জিহাদের বড় ভাই জিন্নাত হোসেন যুগান্তরকে বলেন, জিহাদের স্বপ্ন ছিল পরাশোনা শেষ করে সে পরিবারের হাল ধরবে। ওর ইচ্ছা ছিল একজন ব্যবসায়ী হবে। কিন্তু যৌক্তিক আন্দোলনে গিয়ে নিহত হয় সে। তাকে হারিয়ে স্বজনরা বাকরুদ্ধ। সঠিক তদন্তের মাধ্যমে আমার ভাইয়ের হত্যাকারীদের বিচার চাই।
এদিকে কোটা আন্দোলনে গুলিবিদ্ধ হয়ে জাকির হোসেন নামে এক শ্রমিক নিহত হয়েছেন। তিনি দশমিনার মাছুয়াখালী গ্রামের মৃত মান্নান হাওলাদারের ছেলে। ১৯ জুলাই ঢাকার রায়েরবাগে গুলিবিদ্ধ হন তিনি। ২৫ জুলাই ঢামেক হাসপাতালে চিকিৎসাধীন অবস্থায় তার মৃত্যু হয়। এছাড়াও উপজেলার কয়েকজন নিখোঁজের গুঞ্জন থাকলেও কারও নাম-ঠিকানা পাওয়া যায়নি।