আন্দোলনকারীদের ওপর ছাত্রলীগের হামলা : পালটাপালটি ধাওয়া
যুগান্তর প্রতিবেদন
প্রকাশ: ১৬ জুলাই ২০২৪, ১২:০০ এএম
প্রিন্ট সংস্করণ
ছবি সংগৃহীত
ঢাকা, জাহাঙ্গীরনগরসহ বিভিন্ন বিশ্ববিদ্যালয়ে কোটা সংস্কার আন্দোলনকারীদের ওপর রোববার রাত থেকে সোমবার রাত পর্যন্ত দফায় দফায় হামলা চালিয়েছেন ছাত্রলীগের নেতাকর্মীরা। রামদা, রড, লাঠিসোঁটা ও স্টাম্প নিয়ে এ হামলায় অন্তত চারশ আন্দোলনরত শিক্ষার্থী আহত হয়েছেন।
হামলার পর দুই পক্ষের মধ্যে পালটাপালটি ধাওয়া-ইটপাটকেল নিক্ষেপে ঢাবি ও জাবি ক্যাম্পাস রণক্ষেত্রে পরিণত হয়। ঢাবিতে ককটেল বিস্ফোরণে কেঁপে ওঠে এলাকা। হেলমেট পরা এক ব্যক্তিকে শিক্ষার্থীদের লক্ষ্য করে গুলি করতেও দেখা যায়।
ঢামেকের জরুরি বিভাগে ঢুকেও শিক্ষার্থীদের পিটিয়েছে ছাত্রলীগ। রাত ৯টায় এ রিপোর্ট লেখা পর্যন্ত ঢাবিতে তিনশ এবং জাবিতে শতাধিক শিক্ষার্থী আহত হওয়ার খবর পাওয়া গেছে। জাবিতে তখনও সংঘর্ষ চলছিল। হামলা-সংঘর্ষে বেশ কয়েকজন সংবাদকর্মীও আহত হয়েছেন। ছাত্রলীগেরও বেশ কয়েকজন নেতাকর্মী আহত হয়েছেন বলে তারা দাবি করেছেন। তবে এ দিন পুলিশ কোনো অ্যাকশনে যায়নি। এছাড়া চট্টগ্রাম বিশ্ববিদ্যালয়ে (চবি) ২, শাহজালাল বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি বিশ্ববিদ্যালয়ে (শাবি) ৩, ইসলামী বিশ্ববিদ্যালয়ে (ইবি) ১, চট্টগ্রাম শহরে ৫ এবং কুড়িগ্রামে ৩ জন আহত হয়েছেন।
সরকারি চাকরিতে ‘মুক্তিযোদ্ধা কোটা’ নিয়ে প্রধানমন্ত্রীর দেওয়া বক্তব্য প্রত্যাহারের দাবিতে রোববার মধ্যরাত থেকে ফের আন্দোলন শুরু করে বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলন। সোমবার বেলা ১২টায় ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের বিভিন্ন হল ছাড়াও বাংলাদেশ প্রকৌশল বিশ্ববিদ্যালয় (বুয়েট), জগন্নাথ বিশ্ববিদ্যালয় (জবি), ঢাকা কলেজ, ইডেন কলেজসহ রাজধানীর বিভিন্ন সরকারি-বেসরকারি শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানের শিক্ষার্থীরা টিএসসির রাজু ভাস্কর্যের সামনে জড়ো হন। একই সময় ছাত্রলীগের নেতাকর্মীরাও ঢাকার বিভিন্ন এলাকা থেকে মধুর ক্যান্টিনে এসে জড়ো হন।
বেলা ৩টার দিকে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের বিজয় একাত্তর হলের সামনে থেকে সংঘর্ষের সূচনা হয়। আন্দোলনকারী শিক্ষার্থীদের একটি দল বিজয় একাত্তর হলে প্রবেশ করতে গেলে তাদের বাধা দেওয়া হয়। সেখানে আগে থেকে দেশীয় অস্ত্রশস্ত্র নিয়ে সুসজ্জিত থাকা ছাত্রলীগের নেতাকর্মীরা তাদের ওপর হামলা চালান। মুহূর্তেই আশপাশের হলগুলো থেকে ছাত্রলীগ নেতাকর্মীরা এসে একজোট হয়ে সংঘর্ষে লিপ্ত হন। নিরস্ত্র সাধারণ শিক্ষার্থীরা এ সময় দিশেহারা হয়ে অন্যান্য হলে আশ্রয় নিতে চাইলে সেখানেও ছাত্রলীগ নেতাকর্মীরা হামলা করেন।
এছাড়া ঢাকা মহানগর ছাত্রলীগের হাজার হাজার নেতাকর্মী দেশীয় অস্ত্র, রড, হকিস্টিক, রামদা, লোহার পাইপ নিয়ে ক্যাম্পাসে প্রবেশ করেন। তারা টিএসসিতে থাকা আন্দোলনকারী শিক্ষার্থীদের ওপর হামলা করেন। ঢাকা মহানগর ছাত্রলীগের কর্মীদের ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের কয়েকটি বাস ভাঙচুর করতে দেখা যায়।
ধাওয়া-পালটা ধাওয়া ও ইটপাটকেল নিক্ষেপের একপর্যায়ে আন্দোলনকারী শিক্ষার্থীরা উপাচার্যের বাসভবনের সামনের জায়গা থেকে পিছু হটেন। তাদের একদল ফুলার রোড এবং আরেক দল স্যার এএফ রহমান হলের সামনের রাস্তা দিয়ে নীলক্ষেতের দিকে সরে যান। অপরদিকে বিজয় একাত্তর হলের সামনে ছাত্রলীগ নেতাকর্মীদের সঙ্গে সংঘর্ষ চালিয়ে আসা শিক্ষার্থীরাও বিকাল ৪টার দিকে পিছু হটেন।
শিক্ষার্থীরা পিছু হটলে যাকে সামনে পান, তার ওপর হামলা চালান ছাত্রলীগের নেতাকর্মীরা। ইন্টারন্যাশনাল হলের সামনে বেশ কয়েকজন নারী শিক্ষার্থীকে মারধর করা হয়। আন্দোলনকারীদের স্লোগান দেওয়ার মাইক ও রিকশা ভেঙে গুঁড়িয়ে দেন ছাত্রলীগ নেতাকর্মীরা। সংঘর্ষের সময় ডেইলি স্টার ও প্রথম আলোর ফটোসাংবাদিক প্রবীর দাশ ও দিপু মালাকারসহ বেশ কয়েকজন সাংবাদিক আহত হন।
আহত শিক্ষার্থী ইয়াকুব আলী বলেন, ছাত্রলীগ আমাদের ওপর বর্বর ও ন্যক্কারজনক হামলা চালিয়েছে। আমাদের দুই শতাধিক শিক্ষার্থী গুরুতর আহত হয়েছেন। সবাই ঢাকা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে চিকিৎসা নিচ্ছেন। রিয়া আক্তার নামে এক শিক্ষার্থী বলেন, ছাত্রলীগ আমাদের নারী শিক্ষার্থীদেরও নিপীড়ন করেছে। তাদের গায়ে হাত তুলেছে। আমাদের শারীরিক ও মানসিকভাবে শ্লীলতাহানি করেছে।
ছাত্রলীগের এক নেতা বলেন, কোটা আন্দোলনকারীদের হামলায় ছাত্রলীগের বেশ কয়েকজন নেতাকর্মী আহত হয়েছেন। বিজয় ৭১ হলে ছাত্রলীগের নেতাকর্মীদেরই তারা জিম্মি করে রাখে। ইটপাটকেল নিক্ষেপে অনেকের মাথা ফেটে যায়।
এদিকে সংঘর্ষের সময় ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় প্রশাসনের কাউকে দেখা যায়নি। সংঘর্ষ শেষে কয়েকজন শিক্ষক হলপাড়ায় এলেও এ সময় তাদের নির্বিকার থাকতে দেখা যায়। এ বিষয়ে বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রক্টর অধ্যাপক ড. মাকসুদুর রহমানকে একাধিকবার কল করেও পাওয়া যায়নি।
বিকালে ফের সংঘর্ষ, ককটেল বিস্ফোরণ : ঢাবি ক্যাম্পাসে সংঘর্ষের পর আহতরা ঢাকা মেডিকেলে চিকিৎসা নিতে এলে সেখানে এসে জড়ো হন ছাত্রলীগের নেতাকর্মীরা। বিকাল ৫টার পরপর ঢামেকের একুশে হল, শহীদুল্লাহ হলসহ আশপাশের এলাকায় সংঘর্ষ শুরু হয়। এ সময় ১০টির বেশি ককটেল বিস্ফোরণের শব্দও পাওয়া যায়। তবে কারা এসব ককটেলের বিস্ফোরণ ঘটিয়েছে, তা নিশ্চিত হওয়া যায়নি। শহীদুল্লাহ হল এলাকায় হেলমেট পরিহিত এক ব্যক্তিকে শিক্ষার্থীদের লক্ষ্য করে গুলি করতে দেখা যায়। ঘটনাস্থলে ছাত্রলীগের বিভিন্ন হলের নেতাকর্মীদের লাঠিসোঁটা নিয়ে সড়কে অবস্থান করতে দেখা যায়। ঘটনাস্থলে ছাত্রলীগের কেন্দ্রীয় সভাপতি সাদ্দাম হোসেন এবং সাধারণ সম্পাদক শেখ ওয়ালি আসিফ ইনানসহ অন্য নেতাকর্মীদের উপস্থিত দেখা যায়।
হামলায় আহত হলেন যারা : ছাত্রলীগের হামলায় ঢামেকে ২৯৭ জন চিকিৎসা নিতে যান। তাদের মধ্যে ভর্তি হয়েছেন ১২ জন। আহতদের মধ্যে রয়েছেন-এস কেয়া (২৪), মাহমুদ হাসান (২৩), নাজিব (২৩), জাহিদ (২২), সাইমন (২৪), সাকিব (২২), ইভা (২২), ইমরান (২৩), শাকিল (২৫), শাকিন (২২), ইভা (২৩), ফাহিম (২২), ইনামুল (২৪), হামজা (২৫), রিফাত রশিদ (২৪), জহির (২০), তিশা (২১), রাফিম (২২), শাফিম (২২), ইতি (১৯) পপি (২২), উজ্জ্বল (২০), খোকন (২৫), আহসান উল্লাহ (২২), মেহেদী (২২), সুকান্ত (২২), জুনায়েদ (২২), শাহনুর (২২), শুভ (২১), আবু সাইদ (২২), ইমন (২২), ফাহিম (২২), মাসুম (২১), সাব্বির (২৩), প্রিয়া (২৫), শাকিল (২৪), রিয়ের (২২), ফাহমিদুল (২২), লাবিব (২২), আহসান উল্লাহ (২২), শাকিব (২৩), রাহাত (২৩), কাইয়ুম (২২), সাব্বির (২২), নাঈম (২২), সাজ্জাদ (২২), লিমন (২২), জুয়েল (২২), রুবেল (২২), ইসরাত (২২), ইমু (২২), সাখাওয়াত (২২), সীমা (২০), রফিক (২২), সাখাওয়াত (২৫), রানা (২২), সুজন (২৪), তিসা (২১), জিন্নাত (২২), জহির (২০) এবং অজ্ঞাত পাঁচজন।
জাবিতে আহত শতাধিক, প্রাধ্যক্ষের পদত্যাগ : জাহাঙ্গীরনগর বিশ্ববিদ্যালয়ের (জাবি) আন্দোলনরত শিক্ষার্থীরা সোমবার সন্ধ্যায় বিক্ষোভ মিছিল নিয়ে বঙ্গবন্ধু হলের সামনে দিয়ে যাওয়ার সময় অতর্কিত হামলা চালায় ছাত্রলীগ। হামলাকারীদের হাতে ছিল রামদা, রড, স্টাম্প ও লাঠিসোঁটা। এ সময় ছাত্রলীগের শাখা সভাপতি আকতারুজ্জামান সোহেল ও সাধারণ সম্পাদক হাবিবুর রহমান লিটনকে হেলমেট পরিহিত অবস্থায় সংঘর্ষে নেতৃত্ব দিতে দেখা যায়। পরে দুই পক্ষের মধ্যে ধাওয়া-পালটা ধাওয়া হয়েছে। এতে যুগান্তর প্রতিনিধি মোসাদ্দেকুর রহমানসহ দুই সাংবাদিক এবং শতাধিক শিক্ষার্থী আহত হয়েছেন। তাদের বিভিন্ন হাসপাতালে ভর্তি করা হয়েছে। রাত ৯টায় এ রিপোর্ট লেখা পর্যন্ত সংঘর্ষ চলছিল।
বিশ্ববিদ্যালয়ের চিকিৎসা কেন্দ্রের দায়িত্বপ্রাপ্ত চিকিৎসক ডা. অমিতাভ বলেন, আমি ৮টায় ২০-৩০ জনকে রক্তাক্ত অবস্থায় পেয়েছি। রাত সাড়ে ৮টায় মেডিকেল সেন্টারের সর্বশেষ তথ্যমতে, অন্তত অর্ধশত শিক্ষার্থী আহত হয়ে চিকিৎসা নিয়েছেন।
এর আগে রোববার রাতে বিশ্বকবি রবীন্দ্রনাথ ঠাকুর হলে আন্দোলনকারী শিক্ষার্থীদের জিজ্ঞাসাবাদ ও মোবাইল ফোন চেক করে ছাত্রলীগ। এ ঘটনায় মধ্যরাতে বিক্ষুব্ধ শিক্ষার্থীরা হলের সামনে অবস্থান নিলে তাদের ওপর হামলা চালায় ছাত্রলীগ।
এতে চার আন্দোলনকারী শিক্ষার্থীসহ ৫ জন আহত হন। তাদের মধ্যে আহত এক নারী শিক্ষার্থীকে সাভারের একটি বেসরকারি মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে নেওয়া হয়েছে। একজন বিশ্ববিদ্যালয়ের চিকিৎসা কেন্দ্র থেকে প্রাথমিক চিকিৎসা নিয়েছেন। হামলার ভিডিও ফুটেজ বিশ্লেষণে দেখা যায়, হল ছাত্রলীগের সভাপতি পদপ্রার্থী প্রাচুর্যসহ বেশ কয়েকজন হামলায় অংশ নেন।
এ ঘটনায় মৌখিকভাবে পদত্যাগ করেছেন হলটির প্রাধ্যক্ষ অধ্যাপক নাজমুল হাসান তালুকদার। তিনি বলেন, আমার হলে নানা ধরনের সমস্যা রয়েছে। এসব সমস্যা নিয়েই আমি অনেকদিন ধরে হল চালিয়ে আসছিলাম। তাই আমি পদত্যাগের ঘোষণা দিয়েছি।
চবিতে আহত ২ : চট্টগ্রাম বিশ্ববিদ্যালয়ে (চবি) সোমবার বিকাল সাড়ে ৩টায় শহিদ মিনার এবং রোববার রাত সাড়ে ১১টার দিকে কাটাপাহাড় সড়কে আন্দোলনকারীদের ওপর হামলা চালায় ছাত্রলীগ। এতে দুই শিক্ষার্থী আহত হন। তাদের মধ্যে মাহবুবুর রহমানের মাথা ফেটে যায়। তিনি কম্পিউটার সায়েন্স অ্যান্ড ইঞ্জিনিয়ারিং বিভাগের শিক্ষার্থী। দুপুর আড়াইটার শহরগামী শাটল ট্রেন থেকে কোটা আন্দোলনে চবির সমন্বয়ক খান তালাত মাহমুদ রাফিকে তুলে নিয়ে যান ছাত্রলীগের নেতাকর্মীরা। পরে তাকে প্রক্টর অফিসে নিয়ে যাওয়া হয়। এ সময় রাফির ছাত্রত্ব বাতিলের জন্য প্রক্টরের সঙ্গে উচ্চবাচ্য করতে দেখা যায় ছাত্রলীগের অনুসারীদের।
কুড়িগ্রামে আহত ৩ : আন্দোলনকারীরা জানান, বেলা সাড়ে ১১টায় শহরের কলেজ মোড় থেকে বিক্ষোভ মিছিল নিয়ে জিরো পয়েন্টে গিয়ে বিক্ষোভ সমাবেশ করেন। সভা শেষে পুনরায় বিক্ষোভ মিছিল কলেজ মোড়ের স্টেশন ক্লাবের সামনে এসে শেষ হয়। এ সময় কুড়িগ্রাম সরকারি কলেজ শাখা ছাত্রলীগের সাধারণ সম্পাদক মো. গাদ্দাফিসহ কলেজ শাখার কয়েকজন নেতাকর্মী তাদের ওপর হামলা চালান। এতে তিনজন আহত হয়েছেন। তারা হলেন-ছাত্র ইউনিয়ন জেলা সংসদের সভাপতি ও কুড়িগ্রাম কোটা সংস্কার আন্দোলনের আহ্বায়ক অনিরুদ্ধ প্রণয়, সংস্কার আন্দোলন কুড়িগ্রামের যুগ্ম আহ্বায়ক সাদিকুর রহমান ও সাধারণ শিক্ষার্থী রতন অধিকারী। তাদের কুড়িগ্রাম জেনারেল হাসপাতালে ভর্তি করা হয়েছে। এ বিষয়ে মো. গাদ্দাফি বলেন, অভিযোগ সম্পূর্ণ মিথ্যা।
ইবিতে শিক্ষার্থীকে মারধর ও হলছাড়ার হুমকি : ইসলামী বিশ্ববিদ্যালয়ের (ইবি) এক শিক্ষার্থীকে মারধর ও হলছাড়ার হুমকির অভিযোগ উঠেছে শাখা ছাত্রলীগের যুগ্মসাধারণ সম্পাদক মেহেদী হাসান হাফিজের বিরুদ্ধে। এ ঘটনায় ভুক্তভোগী মাহফুজ উল হক নিরাপত্তা চেয়ে প্রক্টর বরাবর লিখিত অভিযোগ দিয়েছেন। তিনি বিশ্ববিদ্যালয়ের আইন বিভাগের ২০১৮-১৯ শিক্ষাবর্ষের শিক্ষার্থী। হাফিজের বিচার ও বহিষ্কার দাবি করে বিকালে প্রশাসন ভবনের সামনে মানববন্ধন করেন আইন বিভাগের শিক্ষার্থীরা।
শাবিতে হামলায় আহত ৩, বিক্ষোভ : শাহজালাল বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি বিশ্ববিদ্যালয়ের (শাবি) কেন্দ্রীয় গ্রন্থাগার ভবনের সামনে রোববার রাত সাড়ে ১২টায় আন্দোলনকারীদের ওপর হামলা চালান ছাত্রলীগের নেতাকর্মীরা। এতে অন্তত তিনজন আহত হয়েছেন। এর প্রতিবাদে সোমবার দুপুরে ক্যাম্পাসে বিক্ষোভ মিছিল করেন আন্দোলনরত শিক্ষার্থীরা।
চট্টগ্রাম : বিকাল ৫টার দিকে নগরীর পাঁচলাইশ থানার মুরাদপুর এলাকায় শিক্ষার্থীরা সড়ক অবরোধ করে অবস্থান নেন। তারা কোটা সংস্কারের দাবিতে স্লোগান দিতে থাকেন। এ সময় হঠাৎ পেছন থেকে ছাত্রলীগ দলবল ও লাঠিসোঁটা নিয়ে শিক্ষার্থীদের ওপর হামলা করে। এতে অন্তত ৫ জন আহত হন। এ সময় ভীতিকর পরিস্থিতির সৃষ্টি হয়। নগরীর প্রধান সড়কে যান চলাচল বন্ধ হয়ে যায়। প্রত্যক্ষদর্শী আবুল কাশেম জানান, মুরাদপুর থেকে বহদ্দারহাট সড়কে যান চলাচল বন্ধ। দুপাশে শত শত যানবাহন আটকে পড়েছে। অফিস ফেরত লোকজনকে সীমাহীন দুর্ভোগ পোহাতে হচ্ছে।
বেগম রোকেয়া বিশ্ববিদ্যালয় : বেগম রোকেয়া বিশ্ববিদ্যালয়ে রোববার রাতে কোটা সংস্কারের দাবিতে বিক্ষোভ মিছিলে ছাত্রলীগের হামলায় ৫ শিক্ষার্থী আহত হন।
বিভিন্ন স্থানে ছাত্রলীগের বিক্ষোভ ও অবস্থান : রাজশাহীতে মহানগর যুবলীগ এবং বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি বিশ্ববিদ্যালয়ে (বশেমুরবিপ্রবি) ছাত্রলীগ অবস্থান কর্মসূচি পালন করেছে। ময়মনসিংহে বাংলাদেশ কৃষি বিশ্ববিদ্যালয়, মাগুরা ও লক্ষ্মীপুরে বিক্ষোভ মিছিল করেছে ছাত্রলীগ।