কোটা বাতিল দাবিতে শিক্ষার্থীদের আন্দোলন চলবে
বাংলা ব্লকেডে স্থবির সড়ক
ঢাকায় শাহবাগ, সায়েন্সল্যাব, নীলক্ষেতসহ গুরুত্বপূর্ণ মোড় অবরোধ * সারা দেশের বিভিন্ন সড়ক-মহাসড়ক ২ থেকে সাড়ে ৪ ঘণ্টা পর্যন্ত অবরোধে তীব্র যানজট
যুগান্তর ডেস্ক
প্রকাশ: ০৮ জুলাই ২০২৪, ১২:০০ এএম
প্রিন্ট সংস্করণ
সরকারি চাকরিতে নিয়োগের ক্ষেত্রে কোটাব্যবস্থা বাতিলের দাবিতে রোববার ‘বাংলা ব্লকেড’ কর্মসূচি পালন করেন আন্দোলনরত শিক্ষার্থীরা। সারা দেশে বিভিন্ন সড়ক-মহাসড়ক এবং গুরুত্বপূর্ণ মোড় ২ থেকে সাড়ে ৪ ঘণ্টা পর্যন্ত অবরোধ করেন তারা। শিক্ষার্থীদের কোটাবিরোধী নানা স্লোগানে মুখরিত হয় এসব এলাকা।
এ সময় কার্যত অচল হয়ে পড়ে এসব সড়ক-মহাসড়ক। রাজধানীতে শিক্ষার্থীরা শাহবাগ মোড়, সায়েন্সল্যাব, নীলক্ষেত, চানখাঁরপুল, হোটেল ইন্টারকন্টিনেন্টালের সামনের মোড় ও আগারগাঁও মোড় অবরোধ করায় এসব এলাকা দিয়ে যান চলাচল বন্ধ হয়ে যায়। স্থবির হয়ে পড়ে রাজধানীর বড় এলাকা। ফলে অফিস শেষে ঘরমুখী মানুষ ভোগান্তিতে পড়েন।
এছাড়া ঢাকা-চট্টগ্রাম, ঢাকা-বরিশাল, ঢাকা-আরিচা, কুষ্টিয়া-খুলনা, সিলেট-সুনামগঞ্জ ও ঢাকা-খুলনাসহ বিভিন্ন মহাসড়কেও তীব্র যানজটের সৃষ্টি হয়েছে। ঢাকা-চট্টগ্রাম মহাসড়কে প্রায় ৩০ কিমি. যানজটে আটকা পড়ে শত শত গাড়ি। এতে চরম দুর্ভোগের শিকার হন যাত্রী ও পরিবহণ শ্রমিকরা।
এদিন কলেজ-বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষার্থীরা ক্লাস-পরীক্ষা বর্জন করে সর্বাত্মক ছাত্র ধর্মঘটও পালন করেন। ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষার্থীরা বিকাল ৪টা থেকে রাত ৮টা পর্যন্ত শাহবাগ মোড়ে অবস্থান নেন। পরে আজও একই কর্মসূচি চালিয়ে যাওয়ার ঘোষণা দিয়ে ফিরে যান তারা।
শিক্ষার্থীরা কোটাব্যবস্থা বাতিল করে ২০১৮ সালে জারি করা পরিপত্র পুনর্বহালসহ চার দাবিতে আন্দোলন করছেন। দাবিগুলো হলো-১. ২০১৮ সালে ঘোষিত সরকারি চাকরিতে কোটা পদ্ধতি বাতিল ও মেধাভিত্তিক নিয়োগের পরিপত্র বহাল রাখা। ২. কমিশন গঠন করে দ্রুত সময়ের মধ্যে সরকারি চাকরির সব গ্রেডে অযৌক্তিক ও বৈষম্যমূলক কোটা বাদ দেওয়া (সুবিধাবঞ্চিত ও প্রতিবন্ধী ছাড়া)। ৩. সরকারি চাকরির নিয়োগ পরীক্ষায় কোটা সুবিধা একাধিকবার ব্যবহার না করা এবং কোটায় যোগ্য প্রার্থী না পাওয়া গেলে শূন্যপদগুলোতে মেধা অনুযায়ী নিয়োগ দেওয়া। ৪. দুর্নীতিমুক্ত, নিরপেক্ষ ও মেধাভিত্তিক আমলাতন্ত্র নিশ্চিত করতে কার্যকর ব্যবস্থা গ্রহণ করা। ব্যুরো ও প্রতিনিধিদের পাঠানো খবর-
রাজধানীর বিভিন্ন গুরুত্বপূর্ণ মোড় অবরোধ : রোববার বিকাল ৩টা থেকে ‘বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলন’-এর ব্যানারে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষার্থীরা কর্মসূচি শুরু করেন। প্রথমে তারা বিশ্ববিদ্যালয়ের বিভিন্ন হল থেকে মিছিল নিয়ে কেন্দ্রীয় গ্রন্থাগারের সামনে জড়ো হন। পরে সেখান থেকে মিছিল নিয়ে ক্যাম্পাসের বিভিন্ন এলাকা প্রদক্ষিণ করে বিকাল ৪টার দিকে শাহবাগে অবস্থান নেন। একই সময় তারা চানখাঁরপুল এবং হোটেল ইন্টারকন্টিনেন্টালের সামনের মোড়ও অবরোধ করেন।
এ সময় শিক্ষার্থীরা ‘অবরোধ অবরোধ, শাহবাগ অবরোধ’, দফা এক দাবি এক, কোটা নট কাম ব্যাক’, ‘সংবিধানের/মুক্তিযুদ্ধের মূলকথা, সুযোগের সমতা’, ‘সারা বাংলায় খবর দে, কোটা প্রথার কবর দে’, ‘দালালি না রাজপথ, রাজপথ রাজপথ,’ ‘আঠারোর হাতিয়ার, গর্জে উঠুক আরেকবার’, ‘জেগেছে রে জেগেছে, ছাত্রসমাজ জেগেছে’, ‘লেগেছে রে লেগেছে, রক্তে আগুন লেগেছে’, ‘কোটা প্রথা, বাতিল চাই বাতিল চাই’, ‘কোটা প্রথার বিরুদ্ধে, ডাইরেক্ট অ্যাকশন’, ‘কোটা না মেধা, মেধা মেধা’, ইত্যাদি স্লোগান দিতে থাকেন।
একই সময় সায়েন্সল্যাব এলাকা অবরোধ করেন ঢাকা কলেজ ও এর আশপাশের শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানের শিক্ষার্থীরা। নীলক্ষেত মোড়ে অবস্থান নেন ইডেন কলেজের ছাত্রীরা, আগারগাঁও মোড় অবরোধ করেন শেরেবাংলা কৃষি বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষার্থীরা এবং পুরান ঢাকার কবি নজরুল কলেজের শিক্ষার্থীরাও রাস্তায় নেমে বিক্ষোভ শুরু করেন। এতে পুরান ঢাকার তাঁতীবাজার, রায় সাহেব বাজার মোড়, বংশাল, গুলিস্তান, পুরানা পল্টন, শাহবাগ, কাওরান বাজার, ফার্মগেট, আগারগাঁও, মিরপুরের কাজীপাড়া, শেওড়াপাড়া ও মিরপুর ১০ নম্বর গোলচত্বর এলাকা, নিউমার্কেট, সায়েন্সল্যাবসহ রাজধানীর গুরুত্বপূর্ণ সড়কে যান চলাচল প্রায় বন্ধ হয়ে যায়।
এদিকে রাত ৮টায় পরবর্তী কর্মসূচি ঘোষণা করে শাহবাগ ছাড়েন আন্দোলনকারীরা। এ সময় আন্দোলনের অন্যতম সংগঠক নাহিদ ইসলাম বলেন, আমাদের আন্দোলন ছড়িয়ে পড়েছে শহর থেকে শহরে। আগামী দিনে এটা আরও ছড়িয়ে পড়বে। আমরা সংবিধানের সব নাগরিকের সমান অধিকার আদায়ে লড়াই করছি। আমাদের আদালত দেখালে আমরা সংবিধান দেখাব। তিনি বলেন, আমাদের আদালতের জন্য অপেক্ষা করার কথা বলা হচ্ছে। আমরা ৫০ বছর অপেক্ষা করছি। আর কত? শিক্ষার্থীদের পিঠ দেওয়ালে ঠেকে গেছে। হয় কোটা দূর করতে হবে, নয়তো বা পুরো বাংলাদেশকে শতভাগ কোটার আওতায় নিয়ে আসতে হবে। কর্মসূচি ঘোষণা করে তিনি বলেন, অনির্দিষ্ট সময়ের জন্য ক্লাস-পরীক্ষা বর্জন করে ছাত্র ধর্মঘট চলবে।
একই সঙ্গে সারা দেশে ‘বাংলা ব্লকেড’ কর্মসূচিও চলবে। আজকে শাহবাগ থেকে বাংলামোটর পর্যন্ত অবরোধ গেছে। কালকে ফার্মগেট পর্যন্ত যাবে। আরেক সমন্বয়ক হাসনাত আব্দুল্লাহ বলেন, এতদিন আমরা চার দফা নিয়ে আন্দোলন করেছি, আজ থেকে আমরা এক দফা নিয়ে আন্দোলন করব আর সেটি হলো সব গ্রেডে বৈষম্যমূলক কোটা বাতিল করে সংবিধানে উল্লেখিত অনগ্রসর জনগোষ্ঠীর জন্য যে কোটা রয়েছে সেটাকে ন্যূনতম মাত্রায় এনে সংসদে আইন পাশ করতে হবে।
কোটা আন্দোলনে গণতান্ত্রিক ছাত্র জোটের একাত্মতা : শিক্ষার্থীদের চলমান কোটাবিরোধী আন্দোলনে একাত্মতা পোষণ করেছে বাম ছাত্র সংগঠনগুলোর মোর্চা গণতান্ত্রিক ছাত্র জোট। একই সঙ্গে দুই দফা দাবিও জানিয়েছেন সংগঠনটির নেতারা। রোববার ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের মধুর ক্যান্টিনে এক সংবাদ সম্মেলনে এ ঘোষণা দেওয়া হয়। তাদের দাবিগুলো হলো, বৈষম্যমূলক মুক্তিযোদ্ধা কোটা বাতিল করতে হবে এবং অনগ্রসর জাতিসত্তা ও বঞ্চিত শ্রেণির জন্য যৌক্তিক মাত্রায় কোটা নিশ্চিত করতে হবে। সংবাদ সম্মেলনে লিখিত বক্তব্যে গণতান্ত্রিক ছাত্র জোটের সমন্বয়ক ও ছাত্র ইউনিয়নের সভাপতি রাগীব নাঈম বলেন, রাষ্ট্রীয় বৈষম্যের বিরুদ্ধে শিক্ষার্থীদের লড়াকু অবস্থানের প্রতি গণতান্ত্রিক ছাত্র জোট একাত্মতা পোষণ করছে। একই সঙ্গে কোটা প্রথার যৌক্তিক সংস্কারের দাবিতে সারা দেশে সচেতন ছাত্র আন্দোলন গড়ে তোলার আহ্বান জানাচ্ছে।
সংবাদ সম্মেলনে বিপ্লবী ছাত্র মৈত্রীর সভাপতি দিলীপ রায়, সমাজতান্ত্রিক ছাত্রফ্রন্টের সভাপতি সালমান সিদ্দিকী, গণতান্ত্রিক ছাত্র কাউন্সিলের সভাপতি ছায়েদুল হক নিশান, বৃহত্তর পার্বত্য চট্টগ্রাম পাহাড়ি ছাত্র পরিষদের সভাপতি অঙ্কন চাকমা, ছাত্র ফেডারেশনের সহসভাপতি দীপা মল্লিক এবং বিপ্লবী ছাত্র যুব আন্দোলনের ভারপ্রাপ্ত সভাপতি তওফিকা প্রিয়া প্রমুখ উপস্থিত ছিলেন।
কোটা সংস্কারের দাবি মেনে নেওয়ার আহ্বান সাইফুল হকের : কোটাব্যবস্থা সংস্কারের যৌক্তিক ও ন্যায্য দাবি মেনে নিতে সরকারের প্রতি আহ্বান জানিয়েছেন বিপ্লবী ওয়ার্কার্স পার্টির সাধারণ সম্পাদক সাইফুল হক। রোববার এক বিবৃতিতে এ আহ্বান জানান তিনি। সাইফুল হক বলেন, পানি বেশি ঘোলা না করে কোটাব্যবস্থা সংস্কারের যৌক্তিক ও ন্যায্য দাবি মেনে নিন। উচ্চ আদালতের অজুহাত দিয়ে কোটা সংস্কারের দাবি এড়িয়ে যাওয়ার সুযোগ নেই। কোটা সংস্কার কোনো আইনি বিষয় নয়, এটা মূলগতভাবেই রাজনৈতিক সিদ্ধান্তের বিষয়।
ঢাকা-আরিচা মহাসড়ক : জাহাঙ্গীরনগর বিশ্ববিদ্যালয়ের (জাবি) শিক্ষার্থীরা ঢাকা-আরিচা মহাসড়ক অবরোধ করেছে। বেলা ১১টা থেকে দুপুর ১টা পর্যন্ত বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রধান ফটকসংলগ্ন এ মহাসড়ক অবরোধ করে তারা। এতে সড়কে যানজটের সৃষ্টি হয়। শুরুতে বিকাল ৩টা থেকে ৬টা পর্যন্ত অবরোধের সূচি থাকলেও সাভারের ধামরাইয়ে সনাতন ধর্মাবলম্বীদের রথযাত্রা থাকায় সময় পরিবর্তন করে শিক্ষার্থীরা। তারা এদিন ক্লাস-পরীক্ষায়ও অংশ নেননি। ইংরেজি বিভাগের শিক্ষার্থী জাহিদুল ইসলাম বাপ্পি বলেন, আমাদের এ আন্দোলন দেশের সব শিক্ষার্থীর জন্য। আমাদের এ দাবির সঙ্গে সবাই একমত। বৈষম্যমূলক এ কোটা প্রথার অবসান না হওয়া পর্যন্ত আমাদের আন্দোলন চলবে।
ঢাকা-চট্টগ্রাম মহাসড়ক : বিকাল সাড়ে ৩টা থেকে রাত ৮টা পর্যন্ত সাড়ে চার ঘণ্টা মহাসড়ক অবরোধ করেন কুমিল্লা বিশ্ববিদ্যালয়ের (কুবি) শিক্ষার্থীরা। মহাসড়কে আটকে পড়ে দূরপাল্লার শত শত যানবাহন। প্রায় ৩০ কিলোমিটার যানজটের সৃষ্টি হয়। এতে চরম ভোগান্তির শিকার হন যাত্রীরা। কুবি শিক্ষার্থীদের এ আন্দোলনে একাত্মতা পোষণ করেন কুমিল্লা ভিক্টোরিয়া সরকারি কলেজ, জাতীয় বিশ্ববিদ্যালয় অধিভুক্ত কলেজ, জেলার বিভিন্ন প্রাইভেট বিশ্ববিদ্যালয় ও মেডিকেল কলেজের শিক্ষার্থীরা।
ঢাকা-বরিশাল মহাসড়ক : দুপুর ১২টা থেকে বিকাল ৩টা পর্যন্ত তিন ঘণ্টাব্যাপী ঢাকা-বরিশাল মহাসড়ক অবরোধ করে রাখে বরিশাল বিশ্ববিদ্যালয়ের (ববি) শিক্ষার্থীরা। এছাড়া দুপুর ১২টা থেকে ১টা পর্যন্ত কেন্দ্রীয় বাস টার্মিনালের সামনে একই মহাসড়ক ঘণ্টাব্যাপী অবরোধ করে ব্রজমোহন (বিএম) কলেজ শিক্ষার্থীরা। এ সময় তারা জাতীয় পতাকা ও বিভিন্ন প্ল্যাকার্ড নিয়ে বিক্ষোভ করেন। একপর্যায়ে তারা মহাসড়কে ক্রিকেট ও ফুটবল খেলেন। অবরোধের ফলে সারা দেশের সঙ্গে বরিশালের যোগাযোগ অচল হয়ে যায়। অন্তত ৫ কিলোমিটার এলাকায় দেখা দেয় তীব্র যানজট। চরম বিপাকে পড়েন যাত্রীরা। অনেকে হেঁটে গন্তব্যে রওয়ানা হন।
কুষ্টিয়া-খুলনা মহাসড়ক : বেলা সাড়ে ১১টায় কুষ্টিয়া-খুলনা মহাসড়ক অবরোধ করে প্রায় দুই ঘণ্টা আন্দোলন করেছে ইসলামী বিশ্ববিদ্যালয়ের (ইবি) শিক্ষার্থীরা। এ সময় তারা সড়কে আগুন জ্বালিয়ে ও গাছের গুঁড়ি ফেলে যান চলাচল বন্ধ করে দেন। এতে কুষ্টিয়া ও ঝিনাইদহ অভিমুখে দীর্ঘ যানজটের সৃষ্টি হয়। এ সময় বিভিন্ন প্রতিবাদী গান ও কবিতা আবৃত্তি করেন আন্দোলনরতরা।
সিলেট-সুনামগঞ্জ মহাসড়ক : শাহজালাল বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষার্থীরা সিলেট-সুনামগঞ্জ মহাসড়ক অবরোধ করেছেন। বিকাল সাড়ে ৩টায় তারা ক্যাম্পাসে বিক্ষোভ মিছিল বের করেন। পরে বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রধান ফটকের সামনের ওই মহাসড়ক অবরোধ করেন। এতে মহাসড়কের দুপাশে দীর্ঘ যানজট হয়েছে। তবে জরুরি কাজের যানবাহনসহ অ্যাম্বুলেন্স ছেড়ে দেওয়া হয়েছে।
দিনাজপুর-রংপুর মহাসড়ক : দিনাজপুর-রংপুর মহাসড়ক প্রায় দেড় ঘণ্টা অবরোধ করে বিক্ষোভ করেছেন দিনাজপুরের হাজী মোহাম্মদ দানেশ বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি বিশ্ববিদ্যালয় (হাবিপ্রবি) শিক্ষার্থীরা। বেলা সাড়ে ১১টায় বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রধান ফটকের সামনের ওই মহাসড়ক অবরোধ করেন তারা। এতে মহাসড়কের উভয় পাশে যানবাহন চলাচল বন্ধ হয়ে যায়।
ঢাকা-খুলনা মহাসড়ক : বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি বিশ্ববিদ্যালয়ের (বশেমুরবিপ্রবি) শিক্ষার্থীরা বিকাল সাড়ে ৫টা থেকে সন্ধ্যা ৭টা পর্যন্ত বিশ্ববিদ্যালয়সংলগ্ন মহাসড়ক অবরোধ করেন। এতে পাঁচ শতাধিক শিক্ষার্থী অংশ নেন। অবরোধে ঢাকা ও খুলনাগামী যানবাহন আটকা পড়ে। প্রায় তিন কিলোমিটার যানজটের সৃষ্টি হয়।
আগারগাঁও মোড় : বেলা সাড়ে ৩টা থেকে ৬টা পর্যন্ত আগারগাঁও মোড়ে অবস্থান নেন শেরেবাংলা কৃষি বিশ্ববিদ্যালয়ের (শেকৃবি) শিক্ষার্থীরা। এতে মিরপুর থেকে ফার্মগেট এবং শিশুমেলা থেকে মহাখালী পর্যন্ত তীব্র যানজটের সৃষ্টি হয়। এর আগে ক্যাম্পাস থেকে বিক্ষোভ মিছিল বের করেন শিক্ষার্থীরা।
রাবিতে ব্যতিক্রমী সাংস্কৃতিক প্রতিবাদ : পথনাটক, পুঁথিপাঠ, বিপ্লবী গান ও কবিতা পরিবেশন করে ব্যতিক্রমী সাংস্কৃতিক প্রতিবাদ জানিয়েছেন রাজশাহী বিশ্ববিদ্যালয়ের (রাবি) শিক্ষার্থীরা। বিকাল ৩টা থেকে বিশ্ববিদ্যালয়ের প্যারিস রোডে এ কর্মসূচি পালন করেন তারা। শিক্ষার্থীরা দাবি আদায় না হওয়া পর্যন্ত ক্লাস-পরীক্ষাও বর্জন করেছেন। আজ তারা বিশ্ববিদ্যালয়সংলগ্ন রেলপথ অবরোধের ঘোষণা দিয়েছেন। তারা।
চট্টগ্রামে দুই নম্বর গেট মোড় ও লালখান বাজার মোড় অবরোধ : বিশ্ববিদ্যালয় ও কলেজের শিক্ষার্থীরা বিকাল ৪টা থেকে প্রায় দুই ঘণ্টা নগরের দুই নম্বর গেট মোড় অবরোধ করেন। পরে এক ঘণ্টা লালখান বাজার মোড় অবরোধ করেন তারা। এতে অংশ নেন চট্টগ্রাম বিশ্ববিদ্যালয় (চবি), চট্টগ্রাম কলেজ, মোহসীন কলেজ, সিটি কলেজসহ অন্যান্য প্রতিষ্ঠানের প্রায় ৫০০ শিক্ষার্থী। এ সময় ষোলশহর স্টেশন, দুই নম্বর গেট ও লালখান বাজার মোড় মুহুর্মুহু স্লোগানে মুখরিত হয়।