আনার হত্যা অনুসরণ
কিশোরের লাশ টুকরো করে ট্রাংকে
ঈশ্বরদী (পাবনা) প্রতিনিধি
প্রকাশ: ২৪ জুন ২০২৪, ১২:০০ এএম
প্রিন্ট সংস্করণ
টেলিভিশনে প্রচারিত ক্রাইম পেট্রলে ক্রাইমসিন দেখে ও ঝিনাইদহের এমপি আনোয়ারুল আজিম আনার হত্যার মতো লাশ গুমের পরিকল্পনা করে পাবনার ঈশ্বরদীতে এক কিশোরকে হত্যার পর লাশ টুকরো করে ট্রাংকে রেখেছে খুনিরা। আটক তিনজন প্রাথমিকভাবে এ কথা স্বীকার করেছে বলে রোববার জানিয়েছেন ঈশ্বরদী থানা পুলিশের পরিদর্শক (তদন্ত) মনিরুল ইসলাম।
তিনি বলেন, মরদেহ শনাক্তের লক্ষ্যে ডিএনএ পরীক্ষার জন্য অপেক্ষা করা হচ্ছে। পুলিশ পাবনার ঈশ্বরদী উপজেলা শহরের একটি ছাত্রাবাস থেকে তপু হোসেন (১৪) নামে এক কিশোরের খণ্ডিত মরদেহ উদ্ধার করেছে। ৭ দিন ধরে ওই কিশোর নিখোঁজ ছিল। শনিবার সন্ধ্যায় ঈশ্বরদী সরকারি কলেজের পেছনে মশুরিয়াপাড়ার অরণ্য ছাত্রাবাসের তিন তলার ৩০৫নং কক্ষে তপুর লাশের সন্ধান পাওয়া যায়। সে সরকারি কলেজ এলাকার বাসিন্দা আবুল কাশেমের ছেলে। তপুর বড় ভাই অপু জানান, ১৫ জুন বেলা ১১টা থেকে তপুর মোবাইল বন্ধ পাওয়া যায়। রাত ১০টার দিকে তপুর ফোন থেকে জানানো হয়, আপনার ছেলেকে অপহরণ করা হয়েছে। বিকাশে ৩০ হাজার টাকা না দিলে তপুকে হত্যা করা হবে। তখন খরচসহ ৭ হাজার টাকা দেওয়া হয়। এরপর থেকেই তপুর ফোন বন্ধ পাওয়া যায়। পরদিন আমার মা ঈশ্বরদী থানায় জিডি করেন। এরপর পুলিশ লাশের খোঁজ পায়।
অপু আরও জানান, স্থানীয়দের সঙ্গে পূর্বশত্রুতার জেরে পূর্ব পরিকল্পিতভাবে বাড়ির পাশের ছাত্রাবাসে নিয়ে তাকে হত্যা করা হয়েছে। এরপর লাশ টুকরো করে ট্রাংকে রেখে হত্যাকারীরা পালিয়েছে। ছাত্রাবাসের ৩০৪নং কক্ষে থাকা কৃষি প্রশিক্ষণ ইনস্টিটিউটের শিক্ষার্থী তানভীর আহমেদ বলেন, ঈদের ছুটিতে আমি ১১ জুন বাড়ি চলে যাই। শনিবার ছাত্রাবাসে ফিরি। কক্ষের দরজার কাছে এলে ভিতর থেকে দুর্গন্ধ পাই। তখন পাশের কক্ষের ভেতর থেকে বের হওয়া রক্ত দেখতে পেয়ে আমি মেস মালিককে জানাই। এরপর পুলিশ এসে কক্ষের তালা খুলে ট্রাংকের ভিতরে রাখা লাশের টুকরো দেখতে পান। পুলিশ ও স্থানীয়রা জানান, নিহত তপু একই এলাকার কয়েকজন উঠতি বয়সি মাদকাসক্তের সঙ্গে চলাফেরা করত। ঈদের আগে মাদক সেবনকে কেন্দ্র করেই হত্যার ঘটনা ঘটে থাকতে পারে।
ঈশ্বরদী থানা পুলিশের পরিদর্শক (তদন্ত) মো. মনিরুল ইসলাম জানান, হত্যার ঘটনায় ইতোমধ্যে সন্দেহজনক তিনজনকে আটক করা হয়েছে। তারাসহ নিহত তপু মাদকসেবী ছিল। মাদক সেবনকে কেন্দ্র করেই তাকে হত্যা করা হয়েছে।
পাবনা পুলিশ সুপার (অতিরিক্ত ডিআইজি পদে পদোন্নতি প্রাপ্ত) আকবর আলী মুন্সি বলেন, হত্যার রহস্য উদঘাটনের লক্ষ্যে সন্দেহভাজন তিনজনকে আটক করা হয়েছে। প্রকৃত হত্যাকারীদের ছাড় দেওয়া হবে না।