মিনিস্টার ফ্রিজ ৬৬% পর্যন্ত বিদ্যুৎসাশ্রয়ী
এম এ রাজ্জাক খান রাজ, চেয়ারম্যান, মিনিস্টার-মাইওয়ান গ্রুপ
যুগান্তর প্রতিবেদন
প্রকাশ: ০৪ জুন ২০২৪, ১২:০০ এএম
প্রিন্ট সংস্করণ
যুগান্তর : এ বছর ফ্রিজের চাহিদা কেমন? আপনাদের ব্র্যান্ড কেমন সাড়া পাচ্ছে?
রাজ্জাক খান : দেশের মার্কেটে এ বছর ফ্রিজের চাহিদা তুলনামূলকভাবে বেশি। আবহাওয়া এবং ঈদ মৌসুমকে সামনে রেখে আমাদের বেচাকেনাও বিগত বছরের তুলনায় বেশ বেড়েছে। আশা করছি, আগামী কয়েকদিনের মধ্যে ঈদের আমেজ শুরু হলে বিক্রি আরও কয়েকগুণ বৃদ্ধি পাবে।
যুগান্তর : ঈদুল আজহা সামনে রেখে আপনারা কী কী অফার দিচ্ছেন?
রাজ্জাক খান : কুরবানির ঈদ ঘিরে আমাদের প্রস্তুতি এখন পর্যন্ত বেশ রমরমা। তবে প্রতিবছরের তুলনায় এবারের চাহিদা বেশি। কারণ, এবার অত্যধিক গরমের কারণে ফ্রিজের চাহিদা বেড়েছে। এছাড়াও ঈদুল আজহা সামনে রেখে গ্রাহকদের জন্য মিনিস্টার নিয়ে এসেছে ‘ফ্রিজ কিনুন, হাম্বা জিতুন অফার’। যেখানে ফ্রিজ কিনলেই গ্রাহক পাবেন স্ক্র্যাচ কার্ড। আর কার্ড ঘষলেই গ্রাহক পেতে পারেন অসংখ্য গরু ফ্রি বা ফ্রিজ কিনে আরেকটি ফ্রিজ ফ্রি। এছাড়াও রয়েছে নিশ্চিত মূল্যছাড়সহ আকর্ষণীয় সব উপহার।
যুগান্তর : আপনাদের ব্র্যান্ডের নতুন কোন কোন মডেল এসেছে? এগুলোর বিশেষত্ব কী?
রাজ্জাক খান : আসন্ন ঈদ উপলক্ষ্যে বাজারে আমরা অসংখ্য নতুন মডেলের ফ্রিজ নিয়ে আসছি। এর মধ্যে সবচেয়ে আকর্ষণীয় সিরিজ হচ্ছে মিনিস্টারের এজলেস রেফ্রিজারেটর সিরিজ। বাজারের অন্যান্য রেফ্রিজারেটরের তুলনায় মিনিস্টার দিচ্ছে ৬৬% পর্যন্ত বিদ্যুৎসাশ্রয়। এছাড়াও মিনিস্টার রেফ্রিজারেটরে রয়েছে হাই টেমপার্ড গ্লাস ডোর, যা অত্যধিক চাপেও ভাঙে না। রয়েছে বিল্ট-ইন স্ট্যাবিলাইজার। এই রেফ্রিজারেটরগুলো সম্পূর্ণ ফুডগ্রেডেড এবং এতে ব্যবহার করা হয়ে থাকে আর ৬০০এ গ্যাস, যা একই সঙ্গে বিদ্যুৎসাশ্রয়ী এবং পরিবেশবান্ধব। সর্বাধুনিক প্রযুক্তি ব্যবহার করতে আমাদের একটি দক্ষ টিম দিনরাত কাজ করছে।
যুগান্তর : ফ্রিজের চাহিদার কতটুকু স্থানীয় উৎপাদনের জন্য পূরণ হয়? আমদানি হয় কত শতাংশ?
রাজ্জাক খান : পরিসংখ্যান বলছে, বাংলাদেশে ফ্রিজের বাজার এখন এক বিলিয়ন ডলারের কাছাকাছি। আগামী পাঁচ বছরে বাংলাদেশের ফ্রিজের বাজারের বার্ষিক গড় প্রবৃদ্ধি হবে ৫ দশমিক ২ শতাংশ হারে। গত কয়েক বছরে মিনিস্টারের মার্কেটও বেড়েছে। রেফ্রিজারেটরের চাহিদার প্রায় ৮০ শতাংশই বর্তমানে পূরণ হয় দেশীয় কোম্পানির রেফ্রিজারেটরে। বাকি ২০ শতাংশ আমদানির ওপর নির্ভরশীল। মিনিস্টার রেফ্রিজারেটর দেশীয় রেফ্রিজারেটরের মার্কেটে বিশেষ অবদান রাখছে। আমরা আশা করছি খুব শীঘ্রই আন্তর্জাতিক মার্কেটেও পদার্পণ করতে পারব।
যুগান্তর : স্থানীয় উৎপাদন বাড়াতে সরকার কী কী সহযোগিতা দিচ্ছে? বাজেটে আরও কিছু কি করণীয় রয়েছে?
রাজ্জাক খান : স্থানীয় উৎপাদন বাড়াতে রেফ্রিজারেটর বা ফ্রিজ সংযোজন শিল্পে খুচরা যন্ত্রাংশ আমদানির ক্ষেত্রে উল্লেখযোগ্য হারে শুল্ক কমানো হয়েছে। ২০২৩-২৪ অর্থবছরের প্রস্তাবিত বাজেটে দেশীয় শিল্পগুলোর জন্য আরও এক থেকে দুই বছর কর সুবিধা অব্যাহত রাখা হয়েছে। দেশীয় শিল্পের সক্ষমতা অর্জনে বিদ্যমান এ সুবিধা বাড়ানো হয়েছে। আমি মনে করি, আগমী অর্থবছরসহ আগামী কয়েক বছর এ সুবিধা বৃদ্ধি করা হলে আমাদের মতো দেশীয় কোম্পানিগুলোর জন্য বিশেষ সুবিধা হবে।
যুগান্তর : ফ্রিজের রপ্তানি সম্ভাবনা কেমন? রপ্তানি বাড়াতে কী কী পদক্ষেপ দরকার?
রাজ্জাক খান : আমরা এখনো ফ্রিজের রপ্তানি শুরু করিনি। প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা এ বছর বাণিজ্য মেলায় ‘মিনিস্টার-মাইওয়ান গ্রুপ’ পরিদর্শনকালে আমাদের পণ্য রপ্তানি করার ওপর বিশেষ আলোকপাত করেন। খুব শীঘ্রই মিনিস্টার ব্র্যান্ড আন্তর্জাতিক বাজারে পা রাখতে যাচ্ছে। বৈশ্বিক তাপমাত্রা যে হারে বৃদ্ধি পাচ্ছে, তাতে পৃথিবীব্যাপী ফ্রিজের চাহিদা বাড়ছে। সে অনুযায়ী ফ্রিজের বাজারের আকৃতিও বৃদ্ধি পাচ্ছে। এ কারণে আমরা উন্নত বিশ্বের সঙ্গে তাল মিলিয়ে অত্যাধুনিক প্রযুক্তি সংবলিত বিশ্বমানের ফ্রিজ উৎপাদন করছি। আশা করছি, দেশের মানুষের চাহিদা পূরণ করে অচিরেই দেশের বাইরে ফ্রিজ রপ্তানি করে বৈদিশিক মুদ্রা অর্জন করে দেশের অর্থনীতিকে আরও শক্তিশালী করতে সক্ষম হব।