বর্তমান সরকার ভারতের কাছে অত্যন্ত দুর্বল
ফারাক্কা লংমার্চ দিবসের আলোচনায় মির্জা ফখরুল

যুগান্তর প্রতিবেদন
প্রকাশ: ১৭ মে ২০২৪, ১২:০০ এএম
প্রিন্ট সংস্করণ

সরকার পরিবর্তনে ঐক্যবদ্ধ আন্দোলনের কোনো বিকল্প নেই বলে জানিয়েছেন বিএনপি মহাসচিব মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর। তিনি বলেছেন, দেশ ও জনগণ, স্বাধীনতা ও সার্বভৌমত্ব রক্ষা করতে হলে তাহলে দল-মত ভুলে একত্র হয়ে ভয়াবহ ‘দানবীয়’ সরকারকে সরাতে হবে।
বৃহস্পতিবার জাতীয় প্রেস ক্লাবের ‘মওলানা আবদুল হামিদ খান ভাসানীর ফারাক্কা লংমার্চ দিবসটি উপলক্ষ্যে’ আলোচনা সভায় তিনি এ কথা বলেন। ভাসানী অনুসারী পরিষদের উদ্যোগে আলোচনা সভায় বিভিন্ন রাজনৈতিক দল ও সুশীল সমাজের নেতারা অংশ নেন।
বর্তমান সরকার ভারতের কাছে অত্যন্ত দুর্বল বলে মন্তব্য করে মির্জা ফখরুল বলেন, তারা (ভারত) সব সময় বাংলাদেশটাকে নিয়ন্ত্রণে রাখার জন্য সব কার্যক্রম পরিচালনা করেছে। শুধু ফারাক্কা বাঁধ নয়, গঙ্গার পানি নয়। বাংলাদেশের ১৫৪টি অভিন্ন নদীর পানিবণ্টনের ক্ষেত্রে ভারত সব সময়ই গড়িমসি করেছে। তারা এই সমস্যার সমাধান করেনি, করছে না। দীর্ঘকাল ধরে তিস্তা নদীর পানিবণ্টন নিয়ে টালবাহানা করে এই সরকার (ক্ষমতাসীন আওয়ামী লীগ) সময় পার করেছে। এই ব্যর্থতার মূল কারণ হচ্ছে, ক্ষমতাসীনরা পুরোপুরিভাবে একটা নতজানু সরকার। আওয়ামী লীগ জনগণের স্বার্থে স্টান্ট নিতে ব্যর্থ হচ্ছে। ব্যর্থ হচ্ছে কারণ তারা (সরকার) তাদের (ভারত) কাছে অত্যন্ত দুর্বল। বাংলাদেশের জন্ম হওয়ার পর থেকেই প্রতিবেশী দেশ বাংলাদেশকে নিয়ন্ত্রণের চেষ্টা করেছে।
তিনি বলেন, সরকার তাদের প্রভুদের স্বার্থ রক্ষার জন্য জনগণের ওপর নির্যাতন চালিয়ে যাচ্ছে। পরাজয়ের ভয়ে, নিশ্চিহ্ন হওয়ার ভয়ে নিজেদের মতো নির্বাচন করে ক্ষমতা ধরে রেখেছে আওয়ামী লীগ।
বিএনপি মহাসচিব বলেন, আমরা আমাদের গণতান্ত্রিক অধিকারকে হারিয়ে ফেলেছি। গণতান্ত্রিক অধিকার ফিরে পাওয়ার জন্য সংগ্রাম করছি। এজন্য আমাদের অনেকে প্রাণ দিয়েছেন, অনেককে নিপীড়ন-নির্যাতন সহ্য করতে হচ্ছে। বিএনপি চেয়ারপারসন খালেদা জিয়াকে মিথ্যা মামলায় সাজা দিয়ে আটক করে রাখা হয়েছে। আমাদের নেতা তারেক রহমানকে মিথ্যা মামলায় বিদেশে নির্বাসিত করে রাখা হয়েছে। ৬০ লাখ মানুষের বিরুদ্ধে মিথ্যা মামলা দেওয়া হয়েছে। ৭ জানুয়ারি নির্বাচনের আগে তিন মাসে ২৭ হাজার নেতাকর্মীকে গ্রেফতার করা হয়েছে। এখনো নিপীড়ন-নির্যাতন-গ্রেফতার চলছে।
সভায় নাগরিক ঐক্যে সভাপতি মাহমুদুর রহমান মান্না বলেন, আজ হোক কাল হোক বর্তমান সরকার বদলাবেই। আমি দেখি সরকার এমনিই নড়ছে। কারণ রিজার্ভ নেই। সরকার ভয়াবহ রকমের একটা অর্থনৈতিক সংকটে আছে।
বাংলাদেশের বিপ্লবী ওয়ার্কার্স পার্টির সাধারণ সম্পাদক সাইফুল হক বলেন, প্রতিদিন সীমান্ত হত্যা হচ্ছে। আমরা যখন বলছি, ভারত-বাংলাদেশের সম্পর্ক এখন সর্বোচ্চ শিখরে। ভারতের সঙ্গে বাংলাদেশের রক্তের সম্পর্ক, রক্তের বাঁধন। তারা এই রক্তের বাঁধনের জন্য প্রতিদিন সীমান্তে বাংলাদেশিদের হত্যা করে। জীবন দিয়ে, রক্ত দিয়ে এই অসম সম্পর্কের দায় শোধ করতে হচ্ছে।
ভাসানী অনুসারী পরিষদের আহ্বায়ক শেখ রফিকুল ইসলাম বাবলুর সভাপতিত্বে ও সদস্য সচিব আবু ইউসুফ সেলিমের সঞ্চালনায় সভায় জাতীয় পার্টির (কাজী জাফর) মোস্তফা জামাল হায়দার, অর্থনীতিবিদ অধ্যাপক ড. মাহবুব উল্লাহ, গণসংহতি আন্দোলনের প্রধান সমন্বয়কারী জোনায়েদ সাকি, রাষ্ট্র সংস্কার আন্দোলনের হাসনাত কাইয়ুম, জেএসডির তানিয়া রব, ভাসানী অনুসারী পরিষদের বাবুল বিশ্বাস, ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের অধ্যাপক ড. আসিফ নজরুল প্রমুখ বক্তব্য রাখেন।