Logo
Logo
×

প্রথম পাতা

তিন বছরে ৩৬ হাজার কোটি টাকা বরাদ্দের প্রস্তাব

পানিসম্পদ মন্ত্রণালয়ের চাহিদা

Icon

হামিদ-উজ-জামান

প্রকাশ: ১৬ মে ২০২৪, ১২:০০ এএম

প্রিন্ট সংস্করণ

তিন বছরে ৩৬ হাজার কোটি টাকা বরাদ্দের প্রস্তাব

চলতি অর্থবছরে প্রকল্প বাস্তবায়নে খুব একটা দক্ষতা না থাকলেও আগামী তিন অর্থবছরের জন্য ৩৬ হাজার ৮১৫ কোটি ১৭ লাখ টাকা বরাদ্দ চেয়ে প্রস্তাব দিয়েছে পানিসম্পদ মন্ত্রণালয়। এর মধ্যে ২০২৪-২৫ অর্থবছরের জন্য ১১ হাজার ১৯৬ কোটি ৬৯ লাখ, ২০২৫-২৬ এর জন্য ১২ হাজার ২৩৭ কোটি ৮৬ লাখ এবং ২০২৬-২৭ অর্থবছরের জন্য ১৩ হাজার ৩৮১ কোটি ১৯ লাখ টাকা বরাদ্দ চাওয়া হয়েছে। নতুন বার্ষিক উন্নয়ন কর্মসূচি (এডিপি) এবং মধ্যমেয়াদি বাজেট কাঠামোর (এমটিবিএফ) আওতায় এ বরাদ্দ প্রস্তাব করা হয়েছে পরিকল্পনা কমিশনে।

৫ মে এ সংক্রান্ত একটি চিঠি পরিকল্পনা বিভাগের সিনিয়র সচিব সত্যজিত কর্মকারের কাছে পাঠানো হয়। এর আগে ২৮ এপ্রিল বাজেট ব্যবস্থাপনা কমিটির (বিএমসি) বৈঠকে সক্ষমতা বিবেচনা করে বরাদ্দ নির্ধারণ করে পানিসম্পদ মন্ত্রণালয়। এদিকে চলতি অর্থবছরের বরাদ্দ ব্যয়ে দক্ষতা দেখাতে পারেনি মন্ত্রণালয়টি। গত নয় মাসে ব্যয় করেছে মোট বরাদ্দের মাত্র ৩২ দশমিক ৯৯ শতাংশ। খবর সংশ্লিষ্ট সূত্রের। জানতে চাইলে সাবেক পরিকল্পনা সচিব মামুন-আল-রশীদ বুধবার যুগান্তরকে বলেন, এমটিবিএফ একটি প্রগ্রেসিভ ধারণা। এটি খুবই চমৎকার উদ্যোগ। কেননা পরিকল্পনামাফিক কাজ করতে হলে এ ধরনের প্রক্ষেপণ থাকতে হবে। ফলে আগামী তিন বছর কোন মন্ত্রণালয়ের কত চাহিদা, সেটি পরিষ্কার থাকে। এতে অর্থ বিভাগের জন্য সুবিধা হয়। কিন্তু অনেক ক্ষেত্রে মন্ত্রণালয় ও বিভাগগুলো এই এমটিবিএফ সিলিং মানে না। যে কারণে পরবর্তী সময়ে অর্থ বরাদ্দের ক্ষেত্রে একটা চাপ সৃষ্টি হয়। পাশাপাশি পরিকল্পনা শৃঙ্খলাও নষ্ট হয়। কাজেই পরিকল্পনা শৃঙ্খলা রক্ষার্থে প্রক্ষেপণ তৈরির ক্ষেত্রে মন্ত্রণালয় ও বিভাগগুলোর অনেক চিন্তাভাবনা করা দরকার। সূত্র জানায়, রাজস্ব আদায় খুব বেশি না হলেও অর্থ বরাদ্দ চাওয়া হয়েছে বেশি। এক্ষেত্রে অর্থ বিভাগ পানিসম্পদ মন্ত্রণালয়ের বিভিন্ন দপ্তর থেকে আগামী অর্থবছরের জন্য রাজস্ব আয়ের লক্ষ্যমাত্রা নির্ধারণ করেছে ৬৭ কোটি ৯৬ লাখ টাকা। এর বিপরীতে বরাদ্দ চাওয়া হয়েছে ১১ হাজার কোটি টাকার বেশি। এছাড়া ২০২৫-২৬ অর্থবছরের জন্য রাজস্ব আয়ের লক্ষ্য দেওয়া হয়েছে ৭১ কোটি ৩৬ লাখ টাকা। এর বিপরীতে বরাদ্দ চাওয়া হয়েছে ১২ হাজার ২৩৭ কোটি টাকার বেশি। ২০২৬-২৭ অর্থবছরে ৭৪ কোটি ৯৩ লাখ টাকার রাজস্ব আয়ের বিপরীতে বরাদ্দ চাওয়া হয়েছে ১৩ হাজার কোটি টাকার বেশি।

পানিসম্পদ মন্ত্রণালয় সূত্র জানায়, প্রস্তাবিত বরাদ্দের মধ্যে খাত ও সংস্থাভিত্তিক আলাদা করে অর্থ চাওয়া হয়েছে। এগুলোর মধ্যে পরিচালন খাতে আগামী অর্থবছরের এডিপিতে বরাদ্দ চাওয়া হয়েছে ২২ কোটি ৫০ লাখ টাকা, পরের অর্থবছরে ৩০ কোটি ৭৫ লাখ এবং ২০২৬-২৭ অর্থবছরে চাওয়া হয়েছে ৩৩ কোটি ৮২ লাখ টাকা। সচিবালয় ঋণ খাতে প্রতিবছর ৫ লাখ টাকা করে ধরা হয়েছে।

এছাড়া আন্তর্জাতিক সংস্থার চাঁদা (আইসিআইডি-এর জন্য) পরিশোধের জন্য পর্যায়ক্রমে ৪, ৫ ও ৬ কোটি টাকা ধরা হয়েছে। আন্তর্জাতিক সংস্থা ইনওয়াড্যামের চাঁদার জন্য ৫ দশমিক ৬ ও ৭ লাখ টাকা চাওয়া হয়েছে। অপর আন্তর্জাতিক সংস্থা ওয়েটল্যান্ড ইন্টারন্যাশনালের চাঁদার জন্য পর্যায়ক্রমে ৩, ৩ ও ৪ লাখ টাকা বরাদ্দ ধরা হয়েছে।

নতুন প্রকল্পের জন্য থোক হিসাবে তিন অর্থবছরের জন্য পর্যায়ক্রমে ধরা হয়েছে ৩৫০ কোটি, ১১০ কোটি এবং ১১৫ কোটি টাকা। এছাড়া পানি উন্নয়ন বোর্ডের জন্য মোট পরিচালন ও উন্নয়ন ব্যয় মিলে চাওয়া হয়েছে ২১ কোটি, ১২০ কোটি এবং ১২৮ কোটি টাকা। পানিসম্পদ পরিকল্পনা সংস্থার জন্য পরিচালন ও উন্নয়ন ব্যয় মিলে চাওয়া হয়েছে যথাক্রমে ৪৩ কোটি ২১ লাখ, ৪৫ কোটি এবং ২৪ কোটি ৩৪ লাখ টাকা। নদী গবেষণা ইনস্টিটিউটের জন্য ২১ কোটি ৯৩ লাখ, ২৭ কোটি ৭৪ লাখ এবং ২৯ কোটি ৫৯ লাখ টাকা। যৌথ নদী কমিশনের জন্য ৬ কোটি ৭১ লাখ, ৮ কোটি ৫০ লাখ এবং ২০২৬-২৭ অর্থবছরের জন্য চাওয়া হয়েছে ৮ কোটি ৬০ লাখ টাকা।

এদিকে চলতি অর্থবছরের ৯ মাস পেরিয়ে গেলেও এডিপিতে পাওয়া বরাদ্দ খরচে খুব বেশি দক্ষতা দেখাতে পারেনি পানিসম্পদ মন্ত্রণালয়। চলতি ২০২৩-২৪ অর্থবছরের ১২৪টি প্রকল্পের অনুকূলে বরাদ্দ ছিল ১২ হাজার ১৯২ কোটি ৭৫ লাখ টাকা। কিন্তু মার্চ পর্যন্ত খরচ হয়েছে ৪ হাজার ২১ কোটি ৯০ লাখ টাকা, যা মোট বরাদ্দের মাত্র ৩২ দশমিক ৯৯ শতাংশ। এছাড়া মোট বরাদ্দের মধ্যে বৈদেশিক অর্থায়ন আছে ১ হাজার ৭৬৬ কোটি ৭৪ লাখ টাকা। মার্চ পর্যন্ত খরচ হয়েছে ৯২৫ কোটি ৫৯ লাখ টাকা, যা মোট বরাদ্দের ৫২ দশমিক ৩৯ শতাংশ।

Jamuna Electronics

Logo

সম্পাদক : আবদুল হাই শিকদার

প্রকাশক : সালমা ইসলাম