Logo
Logo
×

প্রথম পাতা

ভোটার উপস্থিতি নিয়ে শঙ্কায় আওয়ামী লীগ

ভোটারদের কেন্দ্রমুখী করতে দায়িত্বপ্রাপ্ত নেতারা মাঠে সরব, বেশি গুরুত্ব প্রচার-প্রচারণায়

Icon

রফিকুল ইসলাম

প্রকাশ: ০৫ মে ২০২৪, ১২:০০ এএম

প্রিন্ট সংস্করণ

ভোটার উপস্থিতি নিয়ে শঙ্কায় আওয়ামী লীগ

উপজেলা পরিষদ নির্বাচনে ভোটার উপস্থিতি নিয়ে শঙ্কায় আওয়ামী লীগ। বিএনপিবিহীন নির্বাচনে ভোট প্রয়োগে অনীহা দেখা দিতে পারে সাধারণ ভোটারদের মধ্যে-এমন আশঙ্কা উড়িয়ে দিচ্ছে না ক্ষমতাসীনরা।

তবে দলটির দাবি-উপজেলায় রেকর্ড সংখ্যক ভোটার উপস্থিত দেখাতে চান তারা। এজন্য ভোটারদের কেন্দ্রমুখী করতে গুরুত্ব দিতে চান প্রচার-প্রচারণায়। ইতোমধ্যে তৃণমূলে শুরু হয়েছে লিফলেট বিতরণ। এমপি-মন্ত্রীসহ দলীয় নেতারা নির্বাচনি পরিবেশ নষ্ট করলে সাংগঠনিক শাস্তির আওতায় আনা হবে।

ফলে বিএনপির নেতারা ভোটারদের নিরুৎসাহিত করলেও তা খুব বেশি কাজে আসবে না-এমনটি মনে করছেন দলের নীতিনির্ধারকদের অনেকে।

জানতে চাইলে আওয়ামী লীগের সভাপতিমণ্ডলীর সদস্য ডা. মোস্তফা জালাল মহিউদ্দিন যুগান্তরকে বলেন, সব শ্রেণি-পেশার মানুষ যেন ভোটকেন্দ্রে আসে এবং নিজেদের ভোটাধিকার প্রয়োগ করে, এ বিষয়গুলো মাথায় রেখেই আওয়ামী লীগ দলীয় কার্যক্রম পরিচালনা করছে। এ বিষয়ে ইতোমধ্যেই দলের তৃণমূলে নির্দেশনা দেওয়া হয়েছে এবং তারা কার্যক্রম শুরু করেছেন। এখন পর্যন্ত নির্বাচনের যে পরিবেশ, তাতে মনে হচ্ছে ভোটার উপস্থিতি ও নির্বাচন অনেক ভালো হবে।

তিনি আরও বলেন, বিএনপি ভোটারদের ভোট না দিতে নিরুৎসাহিত করছে। ওটা তাদের দলীয় বিষয়। তবে কীভাবে ভোটার উপস্থিতি বৃদ্ধি করা যায়, সে বিষয়ে আমরা কাজ করছি।

৮ মে প্রথম ধাপে ভোটগ্রহণের মধ্য দিয়ে শুরু হবে উপজেলা পরিষদ নির্বাচন। ইতোমধ্যে নির্বাচনের সব প্রস্তুতি শেষ করেছে নির্বাচন কমিশন (ইসি)। প্রচার-প্রচারণায় ব্যস্ত প্রার্থী ও তার কর্মী-সমর্থকরা। ভোটারদের দ্বারে দ্বারে গিয়ে ভোট প্রার্থনা করছেন তারা।

অন্যদিকে নির্বাচন বর্জনের পর ভোটারদের নিরুৎসাহিত করছে বিএনপি। ভোটাররা যেন ভোটকেন্দ্রে না যান এবং নিজেদের ভোট প্রয়োগ থেকে দূরে থাকেন, সেজন্য লিফলেট বিতরণ অব্যাহত রেখেছেন তারা। দলটির এমন তৎপরতা নির্বাচনের মাঠে বড় ধরনের প্রভাব ফেলতে পারে বলে মনে করছেন ক্ষমতাসীন আওয়ামী লীগের শীর্ষ নেতারা।

ফলে ভোটারদের কেন্দ্রমুখী করতে দলীয় কর্মসূচির দিকে মনোযোগ দিতে চান তারা। বিশেষ করে সবাই যেন কেন্দ্রে আসেন এবং নিজেদের ভোটাধিকার প্রয়োগ করেন, সেজন্য দলের পক্ষ থেকে ইতোমধ্যে কর্মপরিকল্পনা নেওয়া হয়েছে।

শুধু আওয়ামী লীগ নয়, ভোটার উপস্থিতি বৃদ্ধি করতে দলের সহযোগী এবং ভ্রাতৃপ্রতিম সংগঠনের নেতাকর্মীদের নির্দেশনা দেওয়া হয়েছে। সর্বশেষ দলের কেন্দ্রীয় কার্যালয়ে দলটির প্রচার ও প্রকাশনা উপকমিটির এক সভায় এ নির্দেশনা দেন আওয়ামী লীগ সাধারণ সম্পাদক ওবায়দুল কাদের। লিফলেট বিতরণের পাশাপাশি জনসংযোগ করার নির্দেশনাও দেন তিনি।

উপজেলা নির্বাচনে ভোটার বাড়াতে দলীয় নির্দেশনার পর কাজ শুরু করেছেন আওয়ামী লীগের নেতাকর্মীরা। তারা বাড়ি বাড়ি গিয়ে নারী ভোটারদের উৎসাহ দেওয়া, তরুণ ভোটারদের কেন্দ্রেমুখী করা, নির্বাচনকেন্দ্রিক দলীয় সংঘাত-সহিংসতা রোধ করা, নির্বাচন এমপি-মন্ত্রীদের প্রভাবমুক্ত রাখা, সরকারবিরোধী অপপ্রচার সম্পর্কে সচেতন করা, সরকারের উন্নয়নচিত্র তুলে ধরাসহ নানামুখী কার্যক্রম শুরু করেছেন। এছাড়া কীভাবে ভোটার বৃদ্ধি করা যায়, তা নিয়েও কাজ করছেন দলের দায়িত্বপ্রাপ্ত নেতারা।

জানতে চাইলে আওয়ামী লীগের সভাপতিমণ্ডলীর সদস্য মৎস্য ও প্রাণিসম্পদমন্ত্রী আব্দুর রহমান যুগান্তরকে বলেন, ‘উপজেলা নির্বাচনের পরিবেশ নষ্ট করতে চায় বিএনপি। তাই নির্বাচন বর্জন করলেও তারা অপপ্রচার চালাচ্ছে। তাদের এ অপপ্রচার কোনো কাজে আসবে না। মানুষ ভোটকেন্দ্রে যাবে এবং পছন্দের প্রার্থীকে ভোট দিয়ে নির্বাচিত করবে। তিনি আরও বলেন, ভোটার উপস্থিতি নিয়ে কোনো ধরনের সংকট, সংশয় ও শঙ্কা নেই। তবে আমরা সতর্ক আছি।’

বিএনপিবিহীন উপজেলা পরিষদ নির্বাচন প্রতিযোগিতাপূর্ণ ও অংশগ্রহণমূলক করতে দলীয় প্রতীকে প্রার্থী দেয়নি আওয়ামী লীগ। তবে কোনোভাবেই নিয়ন্ত্রণে রাখা যাচ্ছে না দলটির অধিকাংশ এমপি-মন্ত্রীকে। তারা মাইম্যান তৈরি করতে পছন্দের প্রার্থীকে সমর্থন দিচ্ছেন। তাদের এমন অবস্থানের কারণে নির্বাচনের পরিবেশ নষ্ট হওয়ার আশঙ্কা রয়েছে। কোথাও কোথাও ঘটতে পারে সংঘাত-সহিংসতা। তবে নির্বাচনের মাঠে বিশৃঙ্খল পরিবেশ সৃষ্টি করলে অভিযুক্তদের বিরুদ্ধে সাংগঠনিক ব্যবস্থা নেবে আওয়ামী লীগ। মূলত এমপি-মন্ত্রীদের প্রভাবমুক্ত রাখতে পারলে নির্বাচনে ভোটার সংখ্যা বৃদ্ধি পাবে।

আওয়ামী লীগের সাংগঠনিক সম্পাদক আফজাল হোসেন যুগান্তরকে বলেন, ‘নির্বাচনের মাঠে কারও বিশৃঙ্খলা করার সুযোগ নেই। কেউ নির্বাচনের পরিবেশ নষ্ট করলে তার বিরুদ্ধে সাংগঠনিক ব্যবস্থা নেওয়া হবে। তিনি আরও বলেন, স্থানীয় সরকার নির্বাচনে প্রার্থীদের গ্রহণযোগ্যতার ওপর নির্ভর করে ভোটার উপস্থিতি কেমন হবে। জনপ্রিয় প্রার্থীরা যদি ভোটের মাঠে থাকেন, তাহলে ভোটার উপস্থিত বৃদ্ধি পায়। এবার যেহেতু দলীয় প্রার্থী দেওয়া হয়নি এবং একটি পদে একাধিক প্রার্থী নির্বাচন করছেন, সেজন্য ভোটার উপস্থিতি অনেক ভালো হবে বলেই আমরা বিশ্বাস করি।

এবার উপজেলা পরিষদ নির্বাচনে নারী ভোটারদের বিশেষ গুরুত্ব দিচ্ছে আওয়ামী লীগ। তারা যেন কেন্দ্রে আসেন এবং ভোট দেন, সেদিকেও মনোযোগ দিয়েছে ক্ষমতাসীন দলটি। একই সঙ্গে তরুণ ভোটারদের কেন্দ্রমুখী করতে চান তারা।

জানতে চাইলে যুব মহিলা লীগ সভাপতি ডেইজী সারোয়ার যুগান্তরকে বলেন, স্থানীয় সরকার নির্বাচনে নারী ভোটারদের গুরুত্ব অনেক। উপজেলা পরিষদ নির্বাচনে প্রত্যেক নারী যেন কেন্দ্রে যান এবং ভোট দেন, সেজন্য আমরা কাজ শুরু করেছি। সংগঠনের পক্ষ থেকে সারা দেশে নারীদের মাঝে লিফলেট বিতরণ করা হচ্ছে। আশা করি, রেকর্ড সংখ্যক নারী এবার ভোট দেবেন।’

Jamuna Electronics

Logo

সম্পাদক : সাইফুল আলম

প্রকাশক : সালমা ইসলাম