Logo
Logo
×

প্রথম পাতা

বিশ্লেষকদের অভিমত

জ্বালানি তেলের দাম সমন্বয়ের সুফল পাবে না ভোক্তা

Icon

যুগান্তর প্রতিবেদন

প্রকাশ: ০৮ মার্চ ২০২৪, ১২:০০ এএম

প্রিন্ট সংস্করণ

জ্বালানি তেলের দাম সমন্বয়ের সুফল পাবে না ভোক্তা

জ্বালানি তেলের দাম সমন্বয়ের সুফল পাবে না ভোক্তা, ফাইল ছবি

জ্বালানি তেলের মূল্য বিশ্ববাজারের সঙ্গে সমন্বয়ের উদ্যোগে ভোক্তা পর্যায়ে তেমন কোনো সুফল মিলবে না। কারণ বাংলাদেশে বাস্তবায়ন কাঠামো শক্তিশালী নয়। এখানে তেলের দাম কমলে, পরিবহণ ভাড়া কমে না। কিন্তু দাম বাড়লে সঙ্গে সঙ্গে ভাড়া বেড়ে যায়। এ অবস্থায় তেলের দাম স্থিতিশীল রাখতে বিকল্প উদ্যোগ নিতে হবে। অর্থাৎ যখন বিশ্ববাজারে দাম কম এবং দেশে বেশি থাকে, তখন বাড়তি মুনাফা আলাদা তহবিলে রাখতে হবে। আবার যখন বিশ্ববাজারে দাম বাড়বে, তখন দেশে দাম না বাড়িয়ে ওই তহবিলের অর্থ দিয়ে সমন্বয় করতে হবে। যুগান্তরের সঙ্গে আলাপকালে সংশ্লিষ্ট বিশেষজ্ঞরা এসব কথা জানিয়েছেন।

প্রসঙ্গত বিশ্ববাজারের সঙ্গে সমন্বয়ে স্বয়ংক্রিয় মূল্য নির্ধারণ চালু করেছে সরকার। এতে ডিজেল ও কেরোসিনের দাম লিটারে ৭৫ পয়সা কমিয়ে ১০৮ দশমিক ২৫ টাকা নির্ধারণ করেছে। এছাড়া পেট্রোলের দাম লিটারে ৩ টাকা কমিয়ে ১২২ টাকা এবং অকটেনে ৪ টাকা কমিয়ে ১২৬ টাকা করা হয়েছে। আজ শুক্রবার থেকে নতুন দাম কার্যকর হবে। বিশ্ববাজারের সঙ্গে সমন্বয় রেখে প্রতি মাসেই মূল্য সমন্বয় করা হবে।

এ প্রসঙ্গে জানতে চাইলে বাংলাদেশ উন্নয়ন গবেষণা প্রতিষ্ঠান বিআইডিএসের সাবেক মহাপরিচালক ড. এমকে মুজেরী যুগান্তরকে বলেন, জ্বালানি তেলের এই দাম কমানো তেমন কোনো প্রভাব ফেলবে না। কারণ জ্বালানি তেলের দাম খুব সামান্য কমানো হয়েছে। কিন্তু এর আগে বিদ্যুৎ ও গ্যাসের দাম বাড়িয়েছে সরকার। এর ফলে জিনিসপত্রের দামে প্রভাব পড়েছে। অর্থাৎ বেশ কিছু পণ্যের দাম বেড়েছে। এ অবস্থায় বিশ্ববাজারের সঙ্গে মিল রেখে দাম সমন্বয়ের কথা বলা হয়েছে। অর্থাৎ প্রতি মাসেই দাম ওঠানামা করবে। এতে ভোক্তা পর্যায়ে খুব বেশি প্রভাব পড়ার কারণ নেই।

ড. মুজেরী বলেন, জ্বালানি তেল সবচেয়ে বেশি প্রভাব ফেলে পরিবহণ খাতে। কিন্তু দাম কমানোর ফলে পরিবহণ মালিকরা গণপরিবহণের ভাড়া কমানোর ব্যাপারে কোনো সিদ্ধান্ত নেবে না। তবে যাদের ব্যক্তিগত পরিবহণ আছে, তাদের খরচ সামান্য কিছু কমবে।

কনজুমার অ্যাসোসিয়েশন অব বাংলাদেশের (ক্যাব) সভাপতি গোলাম রহমান যুগান্তরকে বলেন, বিশ্ববাজারের সঙ্গে দাম সমন্বয়ের কথা বলা হয়েছে। এর মানে হলো প্রায় সময়ই দাম ওঠানামা করবে। এতে বাংলাদেশের ভোক্তাদের ক্ষেত্রে সুফল পাওয়া যাবে না। কারণ তেলের দাম কমানো হলে, বাস বা ট্রাকের ভাড়া কমবে না। কিন্তু তেলের দাম বাড়ানো হলে, পরিবহণ ভাড়া বেড়ে যাবে। অর্থাৎ দাম ওঠানামার কার্যক্রমের সঙ্গে বাংলাদেশের অর্থনীতি এবং মানুষ এখনো অভ্যস্ত হয়ে ওঠেনি। তিনি বলেন, ক্যাবের সুপারিশ ছিল জ্বালানি তেলের দাম স্থিতিশীল রাখতে হবে। এক্ষেত্রে আমরা বলেছিলাম, যখন বিশ্ববাজারে দাম কম থাকবে, কিন্তু আমাদের দেশে থাকবে বেশি, সেই সময় বাড়তি মুনাফা আলাদা একটি তহবিলে রাখতে হবে।

আবার যখন বিশ্ববাজারে দাম বাড়বে, তখন দেশে দাম না বাড়িয়ে ওই তহবিলের অর্থদিয়ে সমন্বয় করতে হবে। না হলে ভোক্তারা সুফল পাবে না।

বেসরকারি গবেষণা প্রতিষ্ঠান সেন্টার ফর পলিসি ডায়ালগের গবেষণা পরিচালক ড. খোন্দকার গোলাম মোয়াজ্জেম মনে করেন, পাশের দেশ ভারতে জ্বালানি তেলের দাম নিয়মিত সমন্বয় করা হয়। এটি তাদের পক্ষে সম্ভব। কারণ তাদের বাস্তবায়নের কাঠামোটি যথেষ্ট শক্তিশালী। কিন্তু বাংলাদেশে তেমন নয়। দেশে তেলের দাম কমানোর পর বাস ভাড়া বা অন্যান্য ভাড়া পুনর্নির্ধারিত হবে কিনা সেটি এখনো নিশ্চিত নয়। এছাড়া মূল্য নির্ধারণের ক্ষেত্রে বাংলাদেশ পেট্রোলিয়াম করপোরেশনকে কেন ২ থেকে ৩ শতাংশ লাভ রাখতে হবে, তাও পরিষ্কার নয়। তিনি বলেন, মূল্য সমন্বয়ের ক্ষেত্রে কোনো উৎসগুলো ব্যবহার করা হবে, তা যেন সামঞ্জস্যপূর্ণ হয় সেটি নিশ্চিত করতে হবে।

Jamuna Electronics

Logo

সম্পাদক : সাইফুল আলম

প্রকাশক : সালমা ইসলাম