প্রমাণ করতে হবে দেশের প্রতিটি কোনা নারীর জন্য নিরাপদ: রূপালী চৌধুরী
হক ফারুক আহমেদ
প্রকাশ: ০৮ মার্চ ২০২৪, ১২:০০ এএম
প্রিন্ট সংস্করণ
রূপালী চৌধুরী
বার্জারের করপোরেট অফিস, ডিপোগুলোতে নারীদের সংখ্যা অনেক। ডেস্ক বা পেইন্টিং সার্ভিসেও নারীকর্মীদের সংখ্যা বেশ। তবে মাঠে-ঘাটে মোটরসাইকেল চালাতে হয়, সন্ধ্যার পরও পেইন্টারদের সঙ্গে কাজ করতে হয় বলে এসব জায়গায় এখনো নারীদের অধিক সংখ্যায় নিতে পারছি না। আবার অনেক মেয়ে স্বাচ্ছন্দ্যবোধও করেন না। নিরাপত্তার কথা ভেবে অনেক সময় তারা সন্ধ্যার পর বাইরে থাকতে চান না। আমরাও সেটা ভাবি। মনে হয়-দেশের প্রতিটি কোনা, প্রতিটি রাস্তা নারীদের জন্য সব সময় নিরাপদ-এটা রাষ্ট্রীয়ভাবে আমাদের প্রমাণ করতে হবে এবং এটা খুবই জরুরি। আমাদের মানসিকতারও পরিবর্তন দরকার-এ কথাগুলো বলছিলেন বার্জারের ব্যবস্থাপনা পরিচালক রূপালী চৌধুরী।
দেশের শীর্ষস্থানীয় পেইন্টস সল্যুশন ব্র্যান্ড বার্জারে কর্মরত নারীদের অবস্থান ও অংশগ্রহণের বিষয়ে জানতে চাইলে রূপালী চৌধুরী বলেন, নেতৃত্বের জায়গায় নারীরা আসলে এক ধরনের চ্যালেঞ্জ থাকে। ৩৫ বছর আগে শুরু করেছিলাম। তখন করপোরেট দুনিয়ার নারীদের খুব একটা দেখা যেত না। ব্যাংক ও অন্যান্য সেক্টরে কিছুটা দেখা মিলত। সেই সময় করপোরেট দুনিয়ায় একজন নারীর নেতৃত্ব মেনে নেওয়ার বিষয়ে সমস্যা ছিল। তবে আমার মনে হয়-ব্যক্তিত্বের ওপর অনেক কিছু নির্ভর করে। কোনো নারী শুধু নিজেকে ‘নারী’ই ভেবে থাকলে এটা একটা বড় সমস্যা। ভাবতে হবে-একজন মানুষ হিসাবে। নিজেকে শুধু একজন নারী না ভেবে একজন মানুষ হিসাবে ভাবলে অনেক সমস্যার সহজ সমাধান করা সম্ভব। দীর্ঘপথচলায় একজন নারী হিসাবে চ্যালেঞ্জের জায়গাগুলোর বিষয়ে জানতে চাইলে দেশের প্রথম নারী হিসাবে বহুজাতিক প্রতিষ্ঠানের ব্যবস্থাপনা পরিচালকের দায়িত্ব পালনকারী রূপালী চৌধুরী যুগান্তরকে বলেন, বর্তমানে নারীরা রাষ্ট্রীয়ভাবে কোটার মাধ্যমে বিভিন্ন সুযোগ-সুবিধায় চলে এসেছে। নারীর ক্ষমতায়ন মানে মূলত তাকে অর্থনৈতিকভাবে প্রথমে স্বাধীন হতে হবে। অর্থনৈতিকভাবে স্বাবলম্বী হলেই কেবল জীবনের সিদ্ধান্ত নিজেই নেওয়া সম্ভব। কারণ কারও মুখাপেক্ষী হয়ে থাকা মানে অন্যের মতো চলা, অন্যের কথামতো চলা। তাই সবার আগে প্রয়োজন নারীদের অর্থনৈতিকভাবে স্বাবলম্বী হওয়া। কাজ-সেটা ছোট বা বড় যাই হোক না কেন? আর এখন তো ঘরে বসেই আয় করা সম্ভব। অনেক নারী তা করছেনও। বর্তমান বিশ্ব প্রেক্ষাপটে আন্তর্জাতিক নারী দিবস কতটা গুরুত্ব বহন করে জানতে চাইলে রূপালী চৌধুরী বলেন, সারা পৃথিবীতেই মাইনরোটি গ্রুপকে একটু একটু করে তুলে ধরতে হয়। প্রতিদিনই আসলে নারী দিবস হওয়া উচিত। নারীদের মনে রাখতে হবে-আমাদের এগিয়ে যেতে হবে। অর্থনৈতিকভাবে স্বাবলম্বী হতে হবে। তিনি বলেন, তবে যাই করি না কেন-যুব শক্তিকে বাদ দিয়ে চিন্তা নয়। নারী-পুরুষ উভয়ে মিলেই সমাজের ভালোর জন্য চেষ্টা করে যেতে হবে। বর্তমান বাস্তবতায় যে ছেলেটি চাকরি করে বিয়ের সময় সেও চিন্তা করে আমি যাকে বিয়ে করব সে যেন আমাকে অর্থনৈতিকভাবে সহযোগিতা করতে পারে। সেদিক থেকেও নারীদের স্বাবলম্বী হওয়া বিশেষ গুরুত্ব বহন করে। করপোরেট নারী ব্যক্তিত্ব রূপালী চৌধুরী বলেন, ঘর থেকে বেরিয়ে পুরুষরা যা করতে ভালো লাগে তা করতে পারে। কিন্তু নারীর পায়ে এখনো বেড়ি দেওয়া। বিপ্লব অনেকেই করছেন। কিন্তু সেভাবে পারছেন না। তাই সমাজকেও একটু এগিয়ে আসতে হবে। মানুষের মানসিকতায় পরিবর্তন আসতে হবে।