শিক্ষার্থী ডায়মন্ডের রহস্যজনক মৃত্যু
নেশায় ডুবে থাকত মেসের চার ছাত্র
মতিউর রহমান ভান্ডারী, সাভার (ঢাকা)
প্রকাশ: ২৩ ফেব্রুয়ারি ২০২৪, ১২:০০ এএম
প্রিন্ট সংস্করণ
শিক্ষার্থী ডায়মন্ড
মরণনেশা ইয়াবা আর গাঁজা ওই মেসের চার ছাত্রকে আঁকড়ে ধরেছে। দিনের অধিকাংশ সময় তারা নেশার ঘোরে ডুবে থাকত। কখনো বিশ্ববিদ্যালয় পাড়ার আমিন মডেল টাউনের ফাঁকা মাঠে। আবার কখনো নিজেদের মেসে তাদের সঙ্গে যুক্ত হতো বিশ্ববিদ্যালয় পড়ুয়া নতুন নতুন মুখ। নেশার আসরে যুক্ত হতো এলাকার স্থানীয় বখাটে ছেলেরাও। সোমবার সন্ধ্যায় বিশ্ববিদ্যালয় শিক্ষার্থী আবির মাশরুর ডায়মন্ডের রহস্যজনক মৃত্যুর বিষয়ে জানতে গিয়ে বাড়ির কেয়ারটেকার শেখ মজিদ ও স্থানীয়রা এসব কথা বলেন। ডায়মন্ডের মৃত্যুর ঘটনায় সাভার থানা পুলিশ অপমৃত্যু নথিভুক্ত করে ৭ দিন পর বৃহস্পতিবার দুপুরে আদালতে পাঠিয়েছে। নিহত ডায়মন্ড বগুড়ার শাজাহানপুর উপজেলার লতিফপুর মধ্যপাড়ার মো. মিজানুর রহমানের ছেলে। তিনি রাজধানীর নর্থ সাউথ ইউনিভার্সিটির মার্কেটিং বিভাগের ছাত্র ছিলেন। সাভারের খাগান এলাকার আব্দুল জলিলের পাঁচ তলা বাড়ির নিচতলার ছোট ভাই-বন্ধুদের মেসে ১৫ ফেব্রুয়ারি বেড়াতে এসে ডায়মন্ডের ছাদ থেকে পড়ে রহস্যজনক মৃত্যু হয়। এরপর থেকে ওই মেস সদস্য ও শিক্ষার্থীদের এমন বিভিন্ন ধরনের চাঞ্চল্যকর তথ্য বেরিয়ে আসছে।
বাড়ির কেয়ারটেকার শেখ মজিদ যুগান্তরকে বলেন, আমি আসার পর বেশকিছুদিন ধরে খেয়াল করেছি নিচ তলার ১/বি ব্লকের মেস সদস্য ও শিক্ষার্থী ফাহমিদুল ইসলাম ফুয়াদ, আবু তালহা, রুহুল ইসলাম জয় ও মো. রাসেল আহমেদের চলাফেরা স্বাভাবিক ছাত্রদের চাইতে একটু ব্যতিক্রম। হঠাৎ একদিন দেখি রাতে তারা নেশা করে অস্বাভাবিক অবস্থায় মেসে ঢুকছে। এ ভবনের প্রধান ফটকের সামনে আমার রুম থাকার কারণে বিষয়গুলো দৃষ্টিতে আসে। যেদিন তারা বাইরে নেশা না করতেন সেদিন রুমের ভেতরে মাদকের আসর বসাতেন। বিষয়গুলো আমি ভবন মালিককে জানাই। এরপর বাড়ির মালিক ৩ মাস আগে তাদের বাড়ি ছেড়ে দেওয়ার নোটিশ দেন। পরে তাদের বারবার তাগাদা দেওয়া হলেও তারা বাড়ি ছাড়ার বিষয়ে কোনো কর্ণপাত করেননি।
স্থানীয়দের সঙ্গে কথা বলে জানা যায়, আকরাইন বউ বাজার এলাকার পা কাটা রানা, খাগান এলাকার ছত্তারের ছেলে রহুল আমিন ও একই এলাকার আব্দুল হালিম মাদক ব্যবসা করে আসছে।
ওই মেসে কাজ করা রুমি যুগান্তরকে বলেন, আমি ১০-১২ দিন আগে এ মেসে কাজ নিয়েছি। তাদের ব্যাপারে তেমন কিছুই বলতে পারব না। তবে প্রায়ই দেখতাম এ মেসের ছাত্র ও অপরিচিত ছাত্ররা একটি কক্ষে কি যেন করত। রুম থেকে মাঝেমধ্যে গাঁজা আবার কোনো সময় সুপার বিস্কুটের মতো (ইয়াবা ফ্লেভার) গন্ধ পাওয়া যেত। রুমের দরজা খুললেই এ গন্ধ পেতাম। তবে কি কারণে মৃত্যু হয়েছে তা জানি না।