Logo
Logo
×

প্রথম পাতা

মনির পাঠানের অবৈধ সম্পদ সাড়ে পাঁচ কোটি টাকা

দুদকের তিন মামলা, স্ত্রী এবং ছেলেও আসামি

Icon

নেসারুল হক খোকন

প্রকাশ: ২০ ফেব্রুয়ারি ২০২৪, ১২:০০ এএম

প্রিন্ট সংস্করণ

মনির পাঠানের অবৈধ সম্পদ সাড়ে পাঁচ কোটি টাকা

ফাইল ছবি

সড়ক ও জনপথের (সওজ) সাবেক প্রধান প্রকৌশলী একেএম মনির হোসেন পাঠান, তার স্ত্রী জেসমিন মনির পপি ও ছেলে মেহেদী মাহবুব হাসান ফাহিমের বিরুদ্ধে মামলা করেছে দুর্নীতি দমন কমিশন (দুদক)। গত ৩ জানুয়ারি পৃথক তিনটি মামলা করা হয়। মামলার অভিযোগে মোট ৫ কোটি ৫৮ লাখ ৫৮ হাজার টাকার জ্ঞাত আয় বহির্ভূত সম্পদ অর্জনের অভিযোগ আনা হয়েছে। দুদকের সহকারী পরিচালক মো. আবুল কালাম আজাদ তিন মামলারই বাদী হয়েছেন।

প্রসঙ্গত, ২০২২ সালের ৫ অক্টোবর, ‘টাকার মেশিন সওজের প্রধান প্রকৌশলী, ঘুসের অর্থে পুরো পরিবার ধনী’ শিরোনামে দৈনিক যুগান্তরে একটি অনুসন্ধানী প্রতিবেদন প্রকাশিত হয়। এরপরই তার বিরুদ্ধে গোপন অনুসন্ধানে নামে দুর্নীতি দমন কমিশন। প্রতিবেদন প্রকাশের প্রায় ১৭ মাস পর মনির পাঠানের বিরুদ্ধে জ্ঞাত আয় বহির্ভূত সম্পদ অর্জনের মামলা করল দুদক।

মামলার এজাহার থেকে জানা যায়, মনির হোসেন পাঠানের বিরুদ্ধে এক কোটি ৩৫ লাখ ১৫ হাজার ৯৯৫ টাকা জ্ঞাত আয় বহির্ভূত সম্পদ অর্জনের তথ্য পায় দুদক। একই সঙ্গে তার স্ত্রী জেসমিন মনির পপির বিরুদ্ধে পৃথক মামলায় এক কোটি ৭০ লাখ ৬০ হাজার টাকা এবং ছেলে মেহেদী মাহবুব ফাহিমের বিরুদ্ধে ২ কোটি ৫৩ লাখ ২৩ হাজার ১৬৭ টাকা অবৈধ সম্পদ অর্জনের অভিযোগ আনা হয়েছে। মনির হোসেন পাঠানের নামে স্থাবর সম্পদ ২ কোটি ৪৫ লাখ ৮৯ হাজার টাকা, অস্থাবর সম্পদ ১ কোটি ৮৫ লাখ ৮৩৬ টাকাসহ মোট ৩ কোটি ৪৬ লাখ ৭৪ হাজার ৮৩৬ টাকার সম্পদের তথ্য পায়। সম্পদের হিসাব বিবরণীতে মনির হোসেন পাঠান ৩৫ লাখ টাকা ঋণ দেখিয়েছেন। ১৯৯৮-৯৯ থেকে ২০২২-২০২৩ করবর্ষ পর্যন্ত পারিবারিক ও অন্যান্য ব্যয় পাওয়া যায় এক কোটি ৪৪ লাখ ৯ হাজার ১৬৭ টাকা। পারিবারিক ব্যয়সহ মোট সম্পদ পাওয়া যায়, ৪ কোটি ৫৫ লাখ ৮৪ হাজার টাকা। উক্ত সম্পদ অর্জনের বিপরীতে তার গ্রহণযোগ্য আয় পাওয়া যায়, ৩ কোটি ২০ লাখ ৬৮ হাজার ৮ টাকা। ১ কোটি ৩৫ লাখ ১৫ হাজার ৯৯৫ টাকা টাকা আয়ের স্বপক্ষে গ্রহণযোগ্য আয়ের কোনো উৎস পায়নি দুদক। জ্ঞাত আয় বহির্ভূত এই সম্পদ নিজ নামে ভোগদখলে রেখে মনির হোসেন হোসেন পাঠান দুদক আইন ২০০৪ সালের ২৭(১) ধারায় শাস্তিযোগ্য অপরাধ করার অভিযোগ আনা হয়েছে মামলায়।

স্ত্রী জেসমিন মনির পপির বিরুদ্ধে আনা অভিযোগে বলা হয়, অনুসন্ধানকালে দেখা যায়, আসামি মিসেস জেসমিন মনির পপির নামে প্রাপ্ত স্থাবর সম্পদের মূল্য ৫৩ লাখ ৮৭ টাকা। অস্থাবর সম্পদের মূল্য ৬৬ লাখ ৩৭ হাজার ৩২৯ টাকাসহ মোট সম্পদের মূল্য ১ কোটি ২০ লাখ ২৪ হাজার ৩২৯ টাকা। উক্ত সম্পদ অর্জনের বিপরীতে তিনি ঋণ দেখিয়েছেন ৪ লাখ ৯০ টাকা। দায় ও ঋণ বাদে তার নীট সম্পদ পাওয়া যায় ১ কোটি ২০ লাখ ২৪ হাজার ৩২৯ টাকা। এর মধ্যে ঋণের ৪ লাখ ৯০ হাজার টাকা বাদ দিয়ে ১ কোটি ১৫ লাখ ৩৪ হাজার ৩২৯ টাকা। এদিকে ১৯৯৮-৯৯ থেকে ২০২২-২৩ করবর্ষ পর্যন্ত পারিবারিক ও অন্যান্য ব্যয় পাওয়া যায় ১ কোটি ১৩ লাখ ৩৫ হাজার ৫৯৯ টাকা। পারিবারিক ব্যয়সহ মোট সম্পদ পাওয়া যায় ২ কোটি ২৮ লাখ ৬৯ হাজার ৯২৮ টাকা। বর্ণিত সম্পদ অর্জনের বিপরীতে ১৯৯৮-৯৯ থেকে ২০২২-২৩ করবর্ষ পর্যন্ত তার গ্রহণযোগ্য আয়ের পরিমাণ ৫৮ লাখ ৯ হাজার ৫৯৬ টাকা। জেসমিন মনির পপি কর্তৃক অর্জিত সম্পদ ও গ্রহণযোগ্য আয়ের পার্থক্য পাওয়া যায় ১ কোটি ৭০ লাখ ৬০ হাজার ৩৩২ টাকা। যা তার জ্ঞাত আয় বহির্ভূত সম্পদ। সম্পদ অর্জনের সপক্ষে গ্রহণযোগ্য আয়ের কোনো উৎস পায়নি দুদক। অর্থাৎ জেসমিন মনির পপির স্বামী আসামি একেএম মনির হোসেন পাঠান সড়ক ও জনপথ অধিদপ্তরে প্রধান প্রকৌশলীও অন্যান্য পদে কর্মরত থাকাকালে ক্ষমতার অপব্যবহারপূর্বক অবৈধভাবে অর্জিত এই টাকাকে বৈধ করার লক্ষ্যে তার স্ত্রীর নামে অর্জন ও ভোগ দখলে রেখে জ্ঞাত আয় বহির্ভূত সম্পদ অর্জনে সহায়তা করেছেন। এ কারণে এই মামলায় মনির পাঠানকেও আসামি করা হয়েছে।

আরেক মামলায় মনির হোসেন পাঠানের ছেলে মেহেদী মাহবুব হাসান ফাহিমের বিরুদ্ধে দুই কোটি ৫৩ লাখ টাকা আয়ের কোনো বৈধ নথিপত্র পায়নি দুদক। সওজের সাবেক প্রধান প্রকৌশলী অবৈধভাবে অর্জিত এই টাকাকে বৈধ করতে ছেলের নামে সম্পদ গড়ার অভিযোগ আনা হয়। এ মামলায়ও মনির পাঠানকে আসামি করা হয়েছে। তার স্ত্রীর নামে অর্জন ও ভোগদখলে রেখে জ্ঞাত আয় বহির্ভূত সম্পদ অর্জনে সহায়তা করেছেন।

Jamuna Electronics

Logo

সম্পাদক : সাইফুল আলম

প্রকাশক : সালমা ইসলাম