Logo
Logo
×

প্রথম পাতা

সংগ্রাম ও গৌরবের নাম যমুনা টিভি : সালমা ইসলাম

ইউটিউবে বিশ্বে প্রথম

Icon

যুগান্তর প্রতিবেদন

প্রকাশ: ১৫ ফেব্রুয়ারি ২০২৪, ১২:০০ এএম

প্রিন্ট সংস্করণ

সংগ্রাম ও গৌরবের নাম যমুনা টিভি : সালমা ইসলাম

যমুনা গ্রুপের চেয়ারম্যান ও সাবেক প্রতিমন্ত্রী অ্যাডভোকেট সালমা ইসলাম বলেছেন, যমুনা টেলিভিশন একটি সংগ্রাম ও গৌরবের নাম। আজ সারা বিশ্বে যমুনা টিভির ইউটিউব চ্যানেলটি প্রথম হওয়ার পেছনের মূলমন্ত্র হলো-টেলিভিশনটি জাতির সামনে সাদাকে সাদা এবং কালোকে কালো বলার মতো সত্য তুলে ধরে। 

যমুনা টেলিভিশনের স্বপ্নদ্রষ্টা ও যমুনা গ্রুপের প্রতিষ্ঠাতা চেয়ারম্যান বীর মুক্তিযোদ্ধা প্রয়াত নুরুল ইসলামের চিন্তা থেকেই এটি এসেছে। তিনি স্বপ্ন দেখতেন একটি টেলিভিশন ও দৈনিক পত্রিকা গড়ে তুলবেন। তার হাতে গড়ে তোলা সম্পদই হলো-আজকের যমুনা টেলিভিশন ও দৈনিক যুগান্তর পত্রিকা। 

সম্প্রতি যমুনা টেলিভিশনের ইউটিউব চ্যানেল সারা বিশ্বে প্রথম হওয়ায় বুধবার পহেলা ফাল্গুন ও বিশ্ব ভালোবাসা দিবসে টেলিভিশনটির কার্যালয়ে আয়োজিত আনন্দ উদযাপন অনুষ্ঠানে তিনি এসব কথা বলেন।
এ সময় তিনি সবাইকে অভিনন্দন জানানোর পাশাপাশি টেলিভিশনে কর্মরত সবার ইনক্রিমেন্ট (বেতন প্রণোদনা) ঘোষণা করেন।

সালমা ইসলাম বলেন, আজকের এই দিনে আমার স্বামী বীর মুক্তিযোদ্ধা প্রয়াত নুরুল ইসলামের কথা খুব মনে পড়ছে। আমার বিয়ে হয়েছিল এসএসসি পরীক্ষা দেওয়ার সময়। আমার স্বামী আমাকে উচ্চশিক্ষিত করেছেন। 

পড়াশোনা করিয়ে আইনজীবী করেছেন। এরপর সংসদ সদস্য ও প্রতিমন্ত্রী করেছেন। মৃত্যুর আগে আমাকে যমুনা গ্রুপের চেয়ারম্যান করে গেছেন। তিনি যমুনা গ্রুপ নিয়ে চিন্তা করেছেন। এই গ্রুপের প্রতিটি সদস্য ও তাদের পরিবার নিয়ে চিন্তা করতেন। আমি বলতে চাই ‘যে পুরুষ তার স্ত্রীকে সম্মান দিতে জানেন, তিনি একজন আদর্শ পুরুষ। আমি মনে করি আমার স্বামী একজন আদর্শ পুরুষ ছিলেন।’

যমুনা টেলিভিশনের প্রধান নির্বাহী কর্মকর্তা (সিইও) ফাহিম আহমেদের সঞ্চালনায় অনুষ্ঠানে আরও উপস্থিত ছিলেন-যমুনা গ্রুপের ব্যবস্থাপনা পরিচালক মো. শামীম ইসলাম, গ্রুপ পরিচালক মনিকা নাজনীন ইসলাম, সুমাইয়া রোজালিন ইসলাম, শেখ মোহাম্মদ আব্দুল ওয়াদুদ ও মেহনাজ ইসলাম এবং প্রয়াত নুরুল ইসলামের দৌহিত্র ও মো. শামীম ইসলামের ছেলে ইয়াসিন ইসলাম নাজেল, যুগান্তর সম্পাদক ও জাতীয় প্রেস ক্লাবের সাবেক সভাপতি সাইফুল আলম, যুগান্তরের যুগ্ম সম্পাদক মহিউদ্দিন সরকার, উপসম্পাদক আহমেদ দীপু ও এহসানুল হক, প্রধান বার্তা সম্পাদক আবদুর রহমান, প্রধান প্রতিবেদক মাসুদ করিম, যমুনা টেলিভিশনের প্রধান বার্তা সম্পাদক (সিএনই) তৌহিদুল ইসলামসহ যমুনা টেলিভিশনের সাংবাদিক ও কলাকুশলীরা।

মো. শামীম ইসলাম বলেন, যমুনা টেলিভিশনের ইউটিউব চ্যানেল বিশ্বে এক নম্বর হয়েছে। এটা কারও একার কৃতিত্ব নয়। এটা সবার চেষ্টার ফসল। আজ আমরা প্রথম হয়েছি এটা গৌরবের। তবে প্রথম স্থান ধরে রাখা কঠিন। এটা ধরে রাখতে হবে। টেলিভিশনের সঙ্গে সংশ্লিষ্ট সবাইকে আরও নতুন নতুন কনটেন্ট ও আইডিয়া নিয়ে কাজ করতে হবে। বিশ্বে অন্যান্য টিভি চ্যানেল কী করছে সেগুলোতে নজর রাখতে হবে। তাহলেই এগিয়ে থাকব। আমরা স্বীকৃতি হিসাবে সিলভার, গোল্ডসহ বিভিন্ন মর্যাদা পেয়েছি। সামনে রেড বাটনের মর্যাদা অর্জন করব ইনশাআল্লাহ। আমরা এক পরিবার। সবাই একসঙ্গে থাকব।

মনিকা ইসলাম বলেন, বাবার স্বপ্ন ছিল যমুনা টিভি বিশ্বে এক নম্বর চ্যানেল হবে। আমরা ইউটিউব চ্যানেলে এক নম্বর হয়েছি। আজ বাবা বেঁচে থাকলে খুবই খুশি হতেন। তবে আগামীতে নরমাল চ্যানেলকে (যমুনা টিভি) এক নম্বর হতে হবে। সবাইকে টিমভিত্তিক মিলেমিশে কাজ করতে হবে।

সুমাইয়া রোজালিন ইসলাম বলেন, আজকের এই দিনে আমাদের যমুনা গ্রুপের স্বপ্নদ্রষ্টা, আমাদের চেয়ারম্যান, আমার আব্বাকে বেশি মিস করছি। যমুনা টিভির ইউটিউব চ্যানেল বিশ্বে এক নম্বর হয়েছে এটা আমাদের জন্য আনন্দের, উল্লাসের দিন। এটি ধরে রাখতে হবে। বাবার দেখানো পথ ধরেই চ্যানেলটিকে সাদাকে সাদা এবং কালোকে কালো বলতে হবে।

শেখ মোহাম্মদ আব্দুল ওয়াদুদ বলেন, দিন যত যাচ্ছে যমুনা টেলিভিশন ততই ভালো করছে। বস্তুনিষ্ঠ সংবাদ পরিবেশনসহ সমসাময়িক সব বিষয় সবার আগে প্রচার করছে। শ্রেষ্ঠত্বের অর্জন ধরে রেখে ইনশাআল্লাহ সামনের দিনগুলোতে আরও এগিয়ে যাবে।

মেহনাজ ইসলাম যমুনা টেলিভিশনের সবাইকে তাদের অর্জনের জন্য অভিনন্দন জানান।
সদ্য গ্রাজুয়েশন সম্পন্ন করা প্রয়াত নুরুল ইসলামের দৌহিত্র ইয়াসিন ইসলাম নাজেলকে তার অর্জনের জন্য যমুনা টেলিভিশনের তরফ থেকে অভিনন্দন জানানো হয়। এ সময় ইয়াসিন ইসলাম নাজেল যমুনা টেলিভিশনের ইউটিউব চ্যানেল প্রথম হওয়ার গৌরব অর্জন করায় উপস্থিত সবাইকে ধন্যবাদ জানান। তিনি আশা করেন, ভবিষ্যতে যমুনা টিভি এই ধারা অব্যাহত রাখবে। 

সাইফুল আলম বলেন, বিশ্বের এক নম্বর সংবাদভিত্তিক ইউটিউব চ্যানেল হিসাবে স্বীকৃতি যমুনা টিভির অনেক বড় অর্জন। যমুনা টিভির সিইওর নেতৃত্বে আপনারা একটা অসাধ্য সাধন করেছেন। আপনাদের সহযোগী প্রতিষ্ঠান হিসাবে যুগান্তরের পক্ষ থেকে সবাইকে অভিনন্দন জানাই। দৈনিক যুগান্তর ও যমুনা টেলিভিশনের স্বপ্নদ্রষ্টা ছিলেন জীবনযুদ্ধে জয়ী সেই বীর সেনানী বীর মুক্তিযোদ্ধা ও যমুনা গ্রুপের প্রয়াত চেয়ারম্যান নুরুল ইসলাম। 

তিনি সব সময় একটি স্বাধীন মিডিয়া হাউস হিসাবে এই প্রতিষ্ঠানগুলো গড়ে তোলার চেষ্টা করেছেন। আমরা তার অভাব দারুণভাবে অনুভব করি। তিনি থাকলে সবচেয়ে বেশি খুশি হতেন। যমুনা টিভির এই অর্জনে অনেক চড়াই-উতরাই পেরিয়ে, অনেক বাধা-বিঘ্ন পেরিয়ে, একটি সে াতের বিরুদ্ধে সংগ্রাম এবং যুদ্ধ করে আসতে হয়েছে। এ চলার পথে যমুনা গ্রুপের চেয়ারম্যান ও পরিচালকরা যমুনা টেলিভিশনকে যেমন উৎসাহিত করেছেন, তেমনি যুগান্তরকেও উৎসাহিত করেছেন। তারা আমাদের পথের পাথেয়। তাদের দেখানো পথে আমরা এগিয়ে যাচ্ছি। 

ফাহিম আহমেদ বলেন, জনগণের কথা বলে বিশ্বদরবারে নিজেদের এমন উপস্থিতি জানান দিতে ২০১৪ সালের ৫ এপ্রিল যাত্রা শুরু হয়েছিল যমুনা টেলিভিশনের। প্রতিষ্ঠাতা নুরুল ইসলাম স্বপ্ন দেখতেন, এই টেলিভিশন একদিন বিশ্বের ‘আলজাজিরা’ হয়ে উঠবে। মানুষের প্রতিনিধি হবে। সাদাকে সাদা, কালোকে কালো বলবে। যমুনা টেলিভিশনের কর্মীদের তিনি উৎসাহ দিতেন পেশাদারিত্ব বজায় রেখে সৎ ও সাহসী সাংবাদিকতা করার। তারই প্রতিষ্ঠিত এ টেলিভিশন চ্যানেল সে পথে হাঁটার চেষ্টা চালিয়ে যাচ্ছে। তাতেই ধরা পড়ল এমন সাফল্য। 

আজ নুরুল ইসলাম নেই, নিশ্চয় তিনি ওপার থেকে দেখছেন যমুনা টেলিভিশনের নামের পাশে এখন যোগ হয়েছে বিশ্বসেরার খেতাব। টিম যমুনা মনে করে, দর্শক-শুভানুধ্যায়ীরাও এ এগিয়ে যাওয়ায় সারথি। তারা যমুনায় আস্থা রেখেছেন, ভালোবেসেছেন। তাই তাদের প্রতি টিম যমুনার অভিবাদন।

যমুনা টেলিভিশনে ইউটিউব চ্যানেল বিশ্বে এক নম্বর হওয়ায় টেলিভিশনটির সব সাংবাদিক, প্রতিনিধি, কর্মকর্তা-কর্মচারীদের নিয়ে আনন্দ শোভাযাত্রা, কেককাটা, প্রামাণ্যচিত্র, সাংস্কৃতিক অনুষ্ঠান ও মেজবানের আয়োজন করা হয়।

প্রসঙ্গত, বাংলাদেশের এক নম্বর ইউটিউব চ্যানেলের অবস্থান অর্জন করে এখন বিশ্বের প্রথম স্থান অর্জন করেছে এই টিভি চ্যানেল। চলতি বছর ২০ জানুয়ারি মার্কিন সামাজিক যোগাযোগমাধ্যম জরিপ সংস্থা সোশ্যাল ব্লেডের র‌্যাঙ্কিংয়ে শীর্ষে জায়গা করে নিয়েছে এই টেলিভিশন। বাংলাদেশের সংবাদভিত্তিক এই টেলিভিশন চ্যানেলটি বিবিসি, আলজাজিরা, সিএনএন, ফক্স নিউজ, এনবিসি, ফোর্বস ব্রেকিং নিউজ ও এবিসির মতো চ্যানেলকে পেছনে ফেলেছে।

যমুনা টেলিভিশন প্রতিষ্ঠালগ্ন থেকেই মানুষের বিশ্বাস, ভালোবাসা ও আস্থা নিয়েই এগিয়ে যাচ্ছে। এরই মধ্যে যমুনার ইউটিউব চ্যানেলের সাবস্ক্রাইবার এক কোটি ৬০ লাখের মাইলফলক ছাড়িয়েছে। কেবল ইউটিউবে নয়, যমুনার ফেসবুক পেজও পিছিয়ে নেই। এই সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমের ক্রাউডট্যাঙ্গেল ডেটাবেসের হিসাবে প্রায়ই বাংলাদেশে সবচেয়ে বেশি ইন্টার‌্যাকটিভ পেজের তালিকায় থাকে যমুনার ফেসবুক পেজ।
 

Jamuna Electronics

Logo

সম্পাদক : সাইফুল আলম

প্রকাশক : সালমা ইসলাম