সিরিজ জেতা হলো না বাংলাদেশের
ক্রীড়া প্রতিবেদক
প্রকাশ: ০১ জানুয়ারি ২০২৪, ১২:০০ এএম
প্রিন্ট সংস্করণ
মাউন্ট মঙ্গানুইয়ের বে ওভালের উইকেটকে রানপ্রসবা ভাবা হয়েছিল। বাংলাদেশের ব্যাটাররা সেই উইকেটে রোববার শেষ টি ২০ ম্যাচে মুখ থুবড়ে পড়লেন। অনেক প্রত্যাশার ম্যাচে হতাশাজনক ব্যাটিংয়ে মাত্র ১১০ রানে অলআউট হয় সফরবকারীরা। এই মাঠে এটাই সর্বনিম্ন স্কোর। অল্প পুঁজি নিয়েও বাংলাদেশের বোলাররা স্বাগতিক ব্যাটারদের কঠিন পরীক্ষায় ফেলে দেন। ৪৯ রানে পাঁচ উইকেট হারানো নিউজিল্যান্ড পরে ধাক্কা সামাল দিয়ে ষষ্ঠ উইকেট জুটির কল্যাণে ১৪.৪ ওভারে পাঁচ উইকেটে ৯৫ রান তোলে। এরপর বৃষ্টিতে আর খেলা হয়নি। ডাকওয়ার্থ-লুইস পদ্ধতিতে ১৭ রানের জয় তুলে নেয় স্বাগতিকরা। পরে ব্যাট করে এই মাঠে আগে কেউই জিততে পারেনি। সিরিজের প্রথম ম্যাচ জিতেছিল বাংলাদেশ, দ্বিতীয় ম্যাচ বৃষ্টিতে ভেসে যায়। শেষ টি ২০ জিতে তিন ম্যাচের সিরিজ ১-১ সমতায় শেষ করল কিউইরা। বিদায়ি বছরের শেষ ম্যাচে হারায় নিউজিল্যান্ডে প্রথম সিরিজ জয়ের অপেক্ষা আরও বাড়ল বাংলাদেশের।
বে ওভালে টি ২০ ক্রিকেটে প্রথম ইনিংসে আগের সর্বনিম্ন রান ছিল ১৯৮। সব মিলে এই মাঠে সর্বনিম্ন রান ছিল ২০১৮ সালে ওয়েস্ট ইন্ডিজের ১২৪। উইকেট ছিল কিছুটা মন্থর। উইকেট যে ভালোভাবেই পড়তে পেরেছিল বাংলাদেশ, সেটির প্রমাণ একাদশেই। উইকেটের ধরন আঁচ করতে পেরে তানজিম হাসান সাকিবের পরিবর্তে সুযোগ দেওয়া হয় স্পিনার তানভির ইসলামকে। কিন্তু বোলারদের বুক চিতিয়ে লড়াই করার মতো পুঁজি এনে দিতে পারেননি ব্যাটাররা। টস হেরে ব্যাট করতে নামা বাংলাদেশের শুরুটাও মোটেও এই মাঠের আগের ইতিহাসের মতো হয়নি।
প্রথম পাঁচ ব্যাটারের চারজন দুই অঙ্ক ছুঁলেও কেউ পারেননি ২০ রানও করতে। ধুঁকতে ধুঁকতে ১১০ রানেই শেষ ইনিংস। শুরুতেই বিদায় নেন সৌম্য। টিম সাউদিকে বাউন্ডারি মেরে পরের বলে এলবিডব্লু হয়ে ফেরেন। ওয়ানডাউনে নেমে চাপ সামলে দেওয়ার চেষ্টা করেন অধিনায়ক নাজমুল হোসেন শান্ত। বাউন্ডারি দিয়ে শুরু করেন তিনি। পরের ওভারে অ্যাডাম মিলনেকে মারেন দুটি চার। বেশিক্ষণ এই ধারা ধরে রাখতে পারেননি নাজমুল। মিলনেকে তুলে মারতে গিয়ে পয়েন্টে ক্যাচ দিয়ে ফেরেন। ১৫ বলে করেন ১৭ রান। দ্বিতীয় উইকেটের ২৭ রানের জুটিই সর্বোচ্চ। ধারাবাকিভাবে এরপর উইকেট হারিয়ে একশর নিচে অলআউট হওয়ার শঙ্কায় পড়েছিল বাংলাদেশ। নাজমুলের ১৭ রানই হয়ে থাকে ব্যক্তিগত সর্বোচ্চ। অধিনায়ক মিচেল স্যান্টনার নেন সর্বোচ্চ চার উইকেট। দুটি করে উইকেট নেন মিলনে, সাউদি ও সিয়ার্স।
মেহেদী হাসানের পরিবর্তে এদিন তানভির ইসলামকে দিয়ে বোলিং শুরু করান নাজমুল। প্রথম ওভারেই শর্ট বল পেয়ে ১২ রান আদায় করে নেন ফিন অ্যালেন। দ্বিতীয় ওভারে বল হাতে নিয়েই টিম সেইফার্টকে ফিরিয়ে দেন মেহেদী হাসান। পরে এসে তিনি ফেরান ড্যারিন মিচেলকে। পরের ওভারে শরীফুল বল হাতে নিয়েই গ্লেন ফিলিপসকে বোল্ড করলে ৩০ রানে তিন উইকেট হারিয়ে ফেলে নিউজিল্যান্ড। মার্ক চাপম্যান রানআউট হওয়ার পর বিধ্বংসী অ্যালেনকে শরীফুল বোল্ড করে দেন। স্বাগতিকদের স্কোর হয়ে যায় ৪৯/৫। সেখান থেকে অধিনায়ক স্যান্টনার ও জিমি নিশামের অবিচ্ছিন্ন ৪৬ রানের জুটিতে কিউইরা ৯৫ রান তুলে ফেলে ১৪.৪ ওভারেই। বৃষ্টির কারণে এরপর আর খেলা হয়নি। ডাকওয়ার্থ-লুইস পদ্ধতিতে ১৭ রানের জয় নিয়ে মাঠ ছাড়ে স্বাগতিকরা। শেষটা ভালো না হলেও এবারের নিউজিল্যান্ড সফর থেকে খালি হাতে ফিরছে না বাংলাদেশ। কিউইদের বিপক্ষে তাদের মাঠে প্রথমবার ওয়ানডে জয়ের পাশাপাশি টি ২০তেও প্রথম জয়ও ধরা দিয়েছে এবার। সঙ্গে আরও প্রাপ্তি, ভবিষ্যৎ সম্ভাবনার পথে এগিয়ে যাওয়ার রসদ।