Logo
Logo
×

প্রথম পাতা

গাজায় হাসপাতালে হামলা নিহত ৫০০

নজিরবিহীন মানবিক সংকট * বিধ্বস্ত বাড়িঘরে আটকে আছে ৫০০ শিশুসহ ১২০০ মানুষ * প্রতিরোধ বাহিনীকে কেউ থামাতে পারবে না : খামেনি * ভয়াবহ স্বাস্থ্যঝুঁকিতে ৮৪ হাজার অন্তঃসত্ত্বা নারী

Icon

যুগান্তর ডেস্ক

প্রকাশ: ১৮ অক্টোবর ২০২৩, ১২:০০ এএম

প্রিন্ট সংস্করণ

গাজায় হাসপাতালে হামলা নিহত ৫০০

ইসরাইলি বাহিনীর অবিরাম বিমান হামলায় অবরুদ্ধ গাজা উপত্যকায় লাখ লাখ ফিলিস্তিনি নজিরবিহীন মানবিক সংকটের মুখোমুখি হয়েছেন। মঙ্গলবার রাতে গাজার একটি হাসপাতালে বিমান হামলায় অন্তত ৫০০ ফিলিস্তিনি নিহত হয়েছেন। অনেকে হাসপাতালের ধ্বংসস্তূপের নিচে চাপা পড়েছেন। নিহতের সংখ্যা আরও বাড়তে পারে আশঙ্কা করা হচ্ছে। গাজার মধ্যাঞ্চলের আল আহলি আরব হাসপাতালে হামলার পর সেখানে আগুন ধরে যায়; মানুষের শরীরের বিভিন্ন অংশ ছড়িয়ে ছিটিয়ে থাকতে দেখা যায়। এর আগে ইসরাইলি বিমান হামলায় নারী ও শিশুসহ ৮০ ফিলিস্তিনি নিহত হন। ১১ দিন ধরে চলা ইসরাইলি হামলায় গাজায় সামগ্রিকভাবে নিহতের সংখ্যা ৩ হাজার ছাড়িয়ে গেছে। এদিকে, এভাবে হামলা অব্যাহত থাকলে প্রতিরোধ বাহিনীকে কেউ থামাতে পারবে না বলে কঠোর হুঁশিয়ারি দিয়েছেন ইরানের সর্বোচ্চ নেতা আয়াতুল্লাহ আলি খামেনি। এ পরিস্থিতিতে বুধবার ইসরাইল সফরে যাচ্ছেন মার্কিন প্রেসিডেন্ট জো বাইডেন। খবর আলজাজিরা, রয়টার্স, বিবিসির। 

গাজার স্বাস্থ্য দপ্তরের মুখপাত্র জানান, কোনো সতর্কবার্তা ছাড়াই গাজা ভূখণ্ডের কেন্দ্রস্থলে অবস্থিত আল আহলি হাসপাতালে বিমান হামলা হয়েছে। এতে অন্তত ৫০০ ফিলিস্তিনি নিহত হয়েছেন। হাসপাতালটিতে কয়েক শ’ মানুষ আশ্রয় নিয়েছিলেন। নিহতের সংখ্যা আরও বাড়তে পারে বলে আশঙ্কা করা হচ্ছে। এর আগে গাজা ভূখণ্ডের একটি বিদ্যালয়ে বিমান হামলায় ছয়জন নিহত হয়েছেন। ওই বিদ্যালয়ে তারা আশ্রয় নিয়েছিলেন। 

হামাস পরিচালিত গাজা স্বাস্থ্য মন্ত্রণালয়ের মুখপাত্র আশরাফ আল কুদরা জানান, শত শত মানুষ আশ্রয় নেওয়া অবস্থায় ইসরাইলি দখলদাররা হাসপাতালে হামলা করেছে। চিকিৎসাকর্মীরা এখন লাশ খুঁজে বের করছেন। মঙ্গলবার রাতে তিনি বলেন, আমরা এখন সংকটাপন্ন অবস্থায় আছি। এ মুহূর্তে হত্যাযজ্ঞ চলছে। হামাসের গণমাধ্যম দপ্তর ইসরাইলের এ হামলাকে ‘যুদ্ধাপরাধ’ হিসাবে আখ্যা দিয়েছে। হাসপাতালে হামলার ঘটনায় তিন দিনের শোক ঘোষণা করেছেন ফিলিস্তিন কর্তৃপক্ষের প্রেসিডেন্ট মাহমুদ আব্বাস। এর আগে ১১ দিন ধরে চলা ইসরাইলি হামলায় গাজায় প্রায় তিন হাজার মানুষের মৃত্যু খবর জানিয়েছিল উপত্যকাটির কর্তৃপক্ষ। হামলায় আহত হয়েছেন অন্তত সাড়ে ১২ হাজার মানুষ।

গাজার উত্তরাঞ্চল থেকে সরে গিয়ে দক্ষিণের যে অংশে ফিলিস্তিনিদের আশ্রয় নেওয়ার নির্দেশ দিয়েছিল ইসরাইলের সেনাবাহিনী সেই দক্ষিণের খান ইউনিস, রাফাহ এবং দেইর আল বালাহতে ফিলিস্তিনিদের লক্ষ্য করে মঙ্গলবার ভোরে বিমান হামলায় চালিয়েছে ইসরাইল। এতে নারী ও শিশুসহ অন্তত ৮০ জন নিহত হয়েছেন। হামলার পর প্রাথমিকভাবে প্রথমে ২৫ জন ও পরে ৫৪ জনের নিহত হওয়ার কথা বলা হলেও পরে মৃতের সংখ্যা বেড়ে ৮০ জনে দাঁড়িয়েছে। পশ্চিম তীরে নিহত হয়েছেন ৫৭ জন ও আহত ১২০০। আর ইসরাইলে নিহতের সংখ্যা সেই ১৪০০ জনই রয়েছে। 

গাজার একটি মেডিকেল সূত্র আলজাজিরা আরবিকে জানিয়েছে, ফিলিস্তিনের অবরুদ্ধ এ ভূখণ্ডের দক্ষিণ অংশের একটি বাড়িতে ইসরাইল বিমান হামলা চালায়। আর সেখানেই হতাহতের এ ঘটনা ঘটে। ইসরাইলের হামলায় গাজায় ধসে পড়া ভবনের নিচে ৫০০ শিশুসহ ১২০০ মানুষ আটকে আছে বলে জানিয়েছে গাজার স্বাস্থ্য বিভাগ। 

ইসরাইলের অবিরাম বোমাবর্ষণে গাজার ভয়াবহ পরিস্থিতির কথা জানিয়েছেন গাজার ডাক্তার আহমেদ শাহীন। তিনি বলেছেন, ‘আমরা ধ্বংসস্তূপের নিচে মানুষের চিৎকার শুনতে পাই, কিন্তু কিছুই করতে পারি না।’ বসনিয়ার নিউজ পোর্টাল ইস্ত্রাগাকে ডা. শাহীন বলেন, ‘পরিস্থিতি আরও খারাপের দিকে যাচ্ছে। বোমাবর্ষণ থামছেই না। তারা বিমান, সমুদ্র, স্থলভাগ সবদিক থেকেই বোমা বর্ষণ করছে।’ 

তিনি বলেন, ধসে পড়া ভবনের নিচে আটকে পড়া লোকজনকে বাঁচানো যাচ্ছে না। আমরা তাদের চিৎকার শুনতে পাই, কিন্তু কিছুই করতে পারি না। হাসপাতালগুলো আহত, লাশে পরিপূর্ণ। রেফ্রিজারেটরে লাশ রাখার জায়গা নেই। এখানকার পরিস্থিতি কতটা ভয়াবহ সেটা বলে বোঝানো যাবে না। পানি নেই, বিদ্যুৎ নেই। সবচেয়ে খারাপ খবর হলো এখানে পানি নেই, পান করারও পানিও নেই বা কিছু ধোয়ারও ব্যবস্থা নেই।’

ফিলিস্তিনিদের এ অবস্থাকে নজিরবিহীন মানবিক সংকট বলে উল্লেখ করেছে হামাসের মিডিয়া বিভাগ। মঙ্গলবার এক বিবৃতিতে হামাসের সালামা মারুফ বলেছেন, হতাহত, অবকাঠামো ধ্বংস এবং অর্থনৈতিকভাবে ক্ষতিগ্রস্ত হওয়ায় বিপর্যয় দেখা দিয়েছে গাজায়। ইসরাইলের আগের আগ্রাসনে এমন পরিস্থিতি দেখা যায়নি। ফিলিস্তিনিদের জাতিগতভাবে নির্মূলের প্রচেষ্টা চলছে বলেও তিনি অভিযোগ করেন। এর আগে বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থার মুখপাত্র মারগারেট হ্যারিস বলেছিলেন, ইসরাইলি বোমা হামলায় গাজায় মানবিক করিডর স্থাপন হয়নি। তারা এখন কোনো ত্রাণ সহায়তা পাচ্ছেন না। গাজার ৪৪টির বেশি হাসপাতালকে লক্ষ্যবস্তু করা হয়েছে। এ অবস্থায় ৮৪ হাজার অন্তঃসত্ত্বা নারী ভয়াবহ স্বাস্থ্যঝুঁকিতে রয়েছেন। 

তিনি বলেন, রাফাহ সীমান্তে মিসর প্রান্তে ৭৮ ঘনমিটার স্বাস্থ্য সেবার সামগ্রী অপেক্ষায় রয়েছে। এগুলো দিয়ে ৩ লাখ মানুষের মৌলিক চাহিদা মেটানো সম্ভব। এদিকে গাজায় পানিবাহিত রোগ ছড়িয়ে পড়ার আশঙ্কা প্রকাশ করেছে জাতিসংঘ। ইউনাইটেড ন্যাশন্স এজেন্সি ফর প্যালেস্টাইন রিফিউজিস (ইউএনআরডব্লিউএ) এক বিবৃতিতে বলেছে, পানি সরবরাহ বন্ধ এবং পয়ঃনিষ্কাশন ব্যবস্থা ভেঙে পড়ার কারণে পানিশূন্যতা এবং পানিবাহিত রোগ ছড়িয়ে পড়ার ভয়াবহ শঙ্কা দেখা দিয়েছে। ইউএনআরডব্লিউএ বলছে, মঙ্গলবার দক্ষিণ গাজার কিছু অংশে ৩ ঘণ্টা পানি দেওয়া হয়েছে। এতে সেখানকার মাত্র ১৪ শতাংশ বাসিন্দা উপকৃত হয়েছে বলে বিবৃতিতে উল্লেখ করা হয়েছে। 

ইসরাইলের নির্বিচার বোমা হামলায় গাজার অভ্যন্তরে বাস্তুচ্যুত হয়েছেন ১০ লাখ ফিলিস্তিনি। বাস্তুচ্যুত এসব শরণার্থীদের মিসর-জর্ডানে আশ্রয় দেওয়া হবে বলে সাফ জানিয়েছেন জর্ডানের বাদশাহ দ্বিতীয় আব্দুল্লাহ। দখলকৃত পশ্চিম তীরে মঙ্গলবার পর্যন্ত ৭০০ ফিলিস্তিনিকে গ্রেফতার করেছে ইসরাইলি বাহিনী।

এদিকে ইসরাইলি হামলা চলতে থাকলে প্রতিরোধ বাহিনীকে কেউ থামাতে পারবে না বলে হুঁশিয়ারি দিয়েছেন ইরানের সর্বোচ্চ নেতা আয়াতুল্লাহ আলি খামেনি। অবিলম্বে ইসরাইলি হামলা বন্ধের আহ্বান জানিয়ে মঙ্গলবার তিনি বলেন, যদি ইহুদিবাদী শাসকগোষ্ঠীর অপরাধ অব্যাহত থাকে, তাহলে মুসলিমদের ও প্রতিরোধ বাহিনী ধৈর্যহীন হয়ে পড়বে এবং কেউই তাদের থামাতে পারবে না।
 
খামেনি বলেন, ইহুদিবাদী শাসকরা যাই করুক না কেন, তারা যে কলঙ্কজনক ব্যর্থতা ভোগ করেছে তা কোনোভাবে কাটিয়ে উঠতে পারবে না। আর ইরানের রেভ্যুলেশনারি গার্ডের ডেপুটি কমান্ডার আলি ফাদাবি ইসরাইলকে হুঁশিয়ারি দিয়ে বলেছেন, গাজার নৃশংসতা বন্ধ না হলে ‘আরেকটি শকওয়েভ’ আসবে। তিনি বলেন, পৃথিবীর মানচিত্র থেকে ইহুদি শাসকদের ‘ক্যানসারের টিউমার’ পুরোপুরি মুছে না ফেলা পর্যন্ত তাদের বিরুদ্ধে ‘প্রতিরোধ ফ্রন্ট’র অভিযান চলবে। এদিকে ইরানের পররাষ্ট্রমন্ত্রী হোসেইন আমির-আব্দুল্লাহিয়ান বলেছেন, চলমান যুদ্ধ আরও ছড়িয়ে পড়তে পারে এবং এটি আঞ্চলিক সংঘাতে পরিণত হতে পারে। তিনি আরও বলেন, “যদি গাজা ভূখণ্ডে ফিলিস্তিনিদের বিরুদ্ধে ইসরাইলের যুদ্ধাপরাধ বন্ধ না হয়, তাহলে ‘প্রতিরোধ ফ্রন্ট’ আগামী কয়েক ঘণ্টার মধ্যে আগাম পদক্ষেপ নিতে পারে।”

ইসরাইল সর্বাত্মক স্থল অভিযান না চালিয়ে তাদের কৌশল এবার পরিবর্তন করতে পারে বলে একজন মুখপাত্র জানিয়েছেন। তিনি বলেছেন, ইসরাইলি সামরিক বাহিনী গাজায় অভিযানের পরবর্তী পর্যায়ের অভিযানের জন্য প্রস্তুতি নিচ্ছে। তবে তাদের পরিকল্পনা সবাই যেমন ভাবছে তেমন নাও হতে পারে। এর আগে সেনাবাহিনী জানিয়েছিল স্থল অভিযানের ওপর জোর দিয়ে তারা যুদ্ধের পরবর্তী পর্যায়ের প্রস্তুতি নিচ্ছে। তবে মঙ্গলবার লেফটেন্যান্ট কর্নেল রিচার্ড হেচট বলেছেন, আমরা এখন যুদ্ধের পরবর্তী পর্যায়ের জন্য প্রস্তুতি নিচ্ছি। সেটা কী হবে তা আমরা বলিনি। সবাই স্থল আক্রমণের কথা বলাবলি করছে। তবে আমাদের অভিযান অন্যরকম কিছু হতে পারে।

গাজায় রাশিয়ার যুদ্ধবিরতির প্রস্তাব বাতিল : গাজায় যুদ্ধবিরতি চেয়ে উত্থাপিত রাশিয়ার প্রস্তাব বাতিল করেছে জাতিসংঘের নিরাপত্তা পরিষদ। সোমবার নিরাপত্তা পরিষদের বৈঠকে জাতিসংঘে নিযুক্ত রুশ রাষ্ট্রদূত ভাসিলি নেবেনজিয়া প্রস্তাবটি উত্থাপন করেছিলেন। উত্থাপনের পর নিরাপত্তা পরিষদের স্থায়ী-অস্থায়ী ১৫ সদস্য রাষ্ট্রের মধ্যে ৪টি রাষ্ট্র এর পক্ষে এবং যুক্তরাষ্ট্রসহ অপর ৪টি রাষ্ট্র এর বিপক্ষে ভোট দিয়েছে। আর ভোটদান থেকে বিরত ছিলেন বৈঠকে উপস্থিত অন্য ছয় সদস্য রাষ্ট্রের প্রতিনিধি।

গাজায় ১ কোটি ডলার সহায়তা পাঠাবে জাপান : ইসরাইলের বিমান হামলায় বিধ্বস্ত গাজা উপত্যকার বেসামরিক লোকজনকে ১ কোটি ডলার মানবিক সহায়তা দেবে বলে জানিয়েছেন জাপানের পররাষ্ট্রমন্ত্রী ইয়োকো কামিকাওয়া। মঙ্গলবার টোকিওতে এক সংবাদ সম্মেলনে পররাষ্ট্রমন্ত্রী বলেন, ‘সহায়তার এই অর্থ যেন গাজার বেসামরিকদের হাতে পৌঁছায়, সেজন্য ইসরাইলের সরকারের সঙ্গে ইতোমধ্যে আমরা আলোচনা করেছি। আমরা আশা করছি, শিগগিরই এই যুদ্ধ পরিস্থিতির অবসান ঘটবে।’

বুধবার ইসরাইল যাচ্ছেন বাইডেন : অবরুদ্ধ গাজায় ধারাবাহিক বোমা বর্ষণের মধ্যেই বুধবার ইসরাইল সফরে যাচ্ছেন মার্কিন প্রেসিডেন্ট জো বাইডেন। ইসরাইলের পক্ষে যুক্তরাষ্ট্রের জোরালো সমর্থন এবং গাজার সশস্ত্র স্বাধীনতাকামী গোষ্ঠী হামাসের বিরুদ্ধে যুক্তরাষ্ট্রের অবস্থান স্পষ্ট করবেন তিনি। মঙ্গলবার ইসরাইল সফরের সময় একথা জানিয়েছেন মার্কিন পররাষ্ট্রমন্ত্রী অ্যান্টনি ব্লিংকেন। বাইডেন এ সফরকালে মাহমুদ আব্বাস, মিসরের প্রেসিডেন্ট সিসি ও জর্ডানের বাদশাহ আব্দুল্লাহর সঙ্গেও বৈঠক করবেন। 

জিম্মিদের মুক্তিতে হামাসের শর্ত : স্থল অভিযানে ভয় পায় না জানিয়ে ইসরাইলের ২০০ জনের বেশি বন্দিকে মুক্তির জন্য শর্ত দিয়েছে হামাস। হামাসের একজন শীর্ষ নেতা সোমবার বলেছেন, ইসরাইলের কারাগারে থাকা সব ফিলিস্তিনিদের মুক্তি দিলে জিম্মি ইসরাইলিদের ছাড়া হবে। এ সময় তিনি বন্দিদের মেহমান হিসাবে উল্লেখ করেন। হামাসের সশস্ত্র শাখার মুখপাত্র আবু ওবায়দা এক ভিডিও বার্তায় বলেন, স্থল অভিযানের ভয়ে আমরা ভীত নই। আমরা তৈরি আছি। পরিস্থিতি বুঝে আমরা বিভিন্ন জাতীয়তার বন্দিদের মুক্তি দেব।
 

Jamuna Electronics

Logo

সম্পাদক : সাইফুল আলম

প্রকাশক : সালমা ইসলাম