Logo
Logo
×

প্রথম পাতা

শেখ হাসিনার সঙ্গে বাইডেন প্রশাসনের বৈঠকের সাতকাহন

Icon

মাসুদ করিম

প্রকাশ: ০৬ অক্টোবর ২০২৩, ১২:০০ এএম

প্রিন্ট সংস্করণ

শেখ হাসিনার সঙ্গে বাইডেন প্রশাসনের বৈঠকের সাতকাহন

শেখ হাসিনার সঙ্গে যুক্তরাষ্ট্রের জাতীয় নিরাপত্তা উপদেষ্টা জ্যাক সুলেভানের সৌজন্য সাক্ষাৎ

প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার দিল্লি সফর নিয়ে আলোচনা ছিল আগেই। ভারতে জি-২০ সম্মেলনে বিশেষ আমন্ত্রণে অংশ নিলেও সফরের রাজনৈতিক তাৎপর্য অনেক। তার কিছুদিনের মধ্যে যুক্তরাষ্ট্রে জাতিসংঘ সাধারণ পরিষদের অধিবেশনে যোগ দেন প্রধানমন্ত্রী। ভারত ও যুক্তরাষ্ট্র দুই জায়গাতেই সাইডলাইনে বাইডেন প্রশাসনের সঙ্গে অনেক আলোচনা হয়েছে। ভোটের আগে এসব আলোচনা গোপনীয় হওয়ায় জনমনে কৌতূহল প্রবল।

অবশ্য আওয়ামী লীগ সাধারণ সম্পাদক ওবায়দুল কাদের দাবি করছেন, ‘তলে তলে আপস’ হয়ে গেছে। তবে যুক্তরাষ্ট্রের সূত্রগুলো দাবি করছে-অবাধ, সুষ্ঠু ও শান্তিপূর্ণ নির্বাচনের ব্যাপারে যুক্তরাষ্ট্রের বার্তার কোনো পরিবর্তন হয়নি। এদিকে, প্রধানমন্ত্রী যুক্তরাষ্ট্র থাকাকালেই ভিসানীতির প্রয়োগ শুরু হয়েছে। প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা বলেছেন, কেউ স্যাংশন দিলে বাংলাদেশও তার বিরুদ্ধে স্যাংশন দেবে।

অপরদিকে, কাল এক সপ্তাহের সফরে ঢাকায় আসছে যুক্তরাষ্ট্রের প্রাক-নির্বাচনি পর্যবেক্ষক দল। অক্টোবরের শেষ দিকে বাংলাদেশ সফরে আসছেন মার্কিন পররাষ্ট্র দপ্তরের দক্ষিণ ও মধ্য এশিয়াবিষয়ক উপসহকারী পররাষ্ট্রমন্ত্রী আফরিন আক্তার। তিনি গণতন্ত্র ও মানবাধিকারসহ বিভিন্ন বিষয়ে আলোচনা করবেন। দিল্লিতে শেখ হাসিনা ও তার কন্যা সায়মা ওয়াজেদ পুতুলের সঙ্গে বাইডেনের সেলফির পর রাজনীতির মাঠে এ নিয়ে তুমুল আলোচনা হয়েছে। পুলসাইড বৈঠক নামে পরিচিত ওই আলোচনায় অবাধ ও সুষ্ঠু নির্বাচন এবং জলবায়ু পরিবর্তনসহ আরও অনেক বিষয় ঠাঁই পেয়েছে বলে ওয়াশিংটন বলছে।

কূটনৈতিক সূত্রে জানা গেছে, দিল্লিতে বাইডেনের সঙ্গে ওই আলোচনার সময় প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা ও তার মেয়ে সায়মা ওয়াজেদ পুতুল ছাড়াও পররাষ্ট্রমন্ত্রী ড. একে আব্দুল মোমেন এবং অ্যাম্বাসেডর অ্যাট লার্জ জিয়াউদ্দিন উপস্থিত ছিলেন। সূত্রমতে, বাইডেন বেশি কথা বলেছেন পুতুলের সঙ্গে। ওই সময় পুতুল অটিজম নিয়ে কী ধরনের কাজ করছেন তার বিস্তারিত তুলে ধরেন। বিষয়টি নিয়ে বাইডেনের আগ্রহ ছিল।

মার্কিন প্রেসিডেন্ট পুতুলকে বলেন, তার দপ্তর থেকে শেখ হাসিনার কন্যার সঙ্গে অটিজম বিষয়ে যোগাযোগ করতে তিনি বলে দেবেন। তখন পুতুল তার একটি ভিজিটিং কার্ড বাইডেনের হাতে দেন। ওই সময়ে নির্বাচন নিয়ে কী আলোচনা হয়েছে তার বিস্তারিত জানা যায়নি। তবে বাইডেন অবাধ ও সুষ্ঠু নির্বাচনের পক্ষে ওয়াশিংটনের অবস্থান পুনরুল্লেখ করেন বলে জানা গেছে। তাদের মধ্যে আলোচনা এতটাই আন্তরিক পরিবেশে অনুষ্ঠিত হয়। জিয়াউদ্দিনের মোবাইল ফোনে ৭০টির মতো ছবি তোলা হয়। একপর্যায়ে বাইডেন মোবাইলটি নিজের হাতে নিয়ে সেলফিও তোলেন।

সূত্রমতে, জি-২০ সম্মেলনের প্রস্তুতি উপলক্ষ্যে সম্মেলনের আগে কয়েক দফা দিল্লি সফর করেছেন যুক্তরাষ্ট্রের জাতীয় নিরাপত্তা উপদেষ্টা জ্যাক সুলেভান। ভারতের জাতীয় নিরাপত্তা উপদেষ্টা অজিত দোভালের সঙ্গে তার কয়েক দফা বৈঠক হয়। ওই সময়ের একটি বৈঠকে দোভাল বাংলাদেশের নির্বাচন প্রসঙ্গ তোলেন। শেখ হাসিনার সরকারের ওপর বেশি চাপ দেওয়া ভারত ও যুক্তরাষ্ট্র উভয়ের জন্য কেন ক্ষতিকর সেকথা সুলেভানকে অবহিত করা হয়। এ প্রসঙ্গে দোভাল যে দিল্লির মনোভাব সুলেভানকে জানিয়েছেন সেটা বাংলাদেশকেও জানায় ভারত। ভারতের বিভিন্ন পত্রিকায় এসব খবর ছাপা হয়।

যদিও বাংলাদেশে আগামী নির্বাচন অবাধ ও সুষ্ঠু হওয়ার প্রয়োজনীয়তার বিষয়ে দিল্লি ও ওয়াশিংটন একমত পোষণ করে। এছাড়াও, দিল্লি ও ওয়াশিংটনে দফায় দফায় পররাষ্ট্রমন্ত্রী ড. একে আব্দুল মোমেনের সঙ্গে মার্কিন পররাষ্ট্রমন্ত্রী অ্যান্টনি ব্লিংকেনের বৈঠক হয়েছে। বাইডেন প্রশাসনের সঙ্গে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার সর্বশেষ আলোচনা হয়েছে ২৭ সেপ্টেম্বর। সেদিন ওয়াশিংটন ডিসিতে বাংলাদেশ দূতাবাসে যুক্তরাষ্ট্রের জাতীয় নিরাপত্তা উপদেষ্টা জ্যাক সুলেভানের সঙ্গে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার বৈঠক অনুষ্ঠিত হয়। ঢাকার কর্মকর্তারা বলছেন, আন্তরিক পরিবেশে ইতিবাচক আলোচনা হয়েছে। তবে অবাধ, সুষ্ঠু ও শান্তিপূর্ণ নির্বাচনের ব্যাপারে যুক্তরাষ্ট্রের বার্তার কোনো পরিবর্তন হয়নি বলেও একাধিক সূত্র নিশ্চিত করেছে।

প্রাক-নির্বাচনি পর্যবেক্ষক দল : বাংলাদেশের নির্বাচনের পরিবেশ পর্যবেক্ষণের লক্ষ্যে ইন্টারন্যাশনাল রিপাবলিকান ইনস্টিটিউট (আইআরআই) এবং ন্যাশনাল ডেমোক্রেটিক ইনস্টিটিউটের (এনডিআই) সমন্বয়ে গঠিত একটি প্রতিনিধিদল। প্রতিনিধিদলটি বাংলাদেশে রাজনৈতিক দল, সুশীল সমাজ, মিডিয়া, আন্তর্জাতিক সম্প্রদায়ের প্রতিনিধিসহ বিভিন্ন পর্যায়ে বৈঠক করবে। সফর শেষে প্রতিনিধিদল একটি বিবৃতি দেবে।

Jamuna Electronics

Logo

সম্পাদক : আবদুল হাই শিকদার

প্রকাশক : সালমা ইসলাম