সিআইডির অনুসন্ধান
তারকা হোটেলেও বিদেশি মদের চোরাকারবার
মম ইন, সাইমন বিচ রিসোর্ট, জাবের প্যারাডাইজ ও হোটেল ডরিনসহ নামিদামি প্রতিষ্ঠানের কেলেঙ্কারি ফাঁস
তোহুর আহমদ
প্রকাশ: ২২ সেপ্টেম্বর ২০২৩, ১২:০০ এএম
প্রিন্ট সংস্করণ
ফাইল ছবি
মিথ্যা ঘোষণায় আনা বিদেশি মদ-বিয়ার বিক্রি করে শতগুণ মুনাফা লুটে নিচ্ছে বেশ কয়েকটি তারকা হোটেল। পিছিয়ে নেই অভিজাত ক্লাব, লাইসেন্সধারী মদের বার ও রেস্টুরেন্ট।
এতে সরকার বিপুল অঙ্কের রাজস্ব থেকে বঞ্চিত হলেও কালোবাজারিদের পোয়াবারো। বিদেশি মদের কারবারে ফুটপাতের হকার থেকে অনেকেই এখন কোটিপতি। তাদের অনেকেই সম্পদ গড়েছেন দেশে-বিদেশে। সম্প্রতি পুলিশের অপরাধ তদন্ত বিভাগ সিআইডির এক বিশেষ অনুসন্ধানে এসব তথ্য উঠে আসে। একই সঙ্গে যুগান্তরের পক্ষ থেকেও বিষয়গুলো নিয়ে অনুসন্ধান চালানো হয়।
বিদেশি মদের চোরাকারবার সম্পর্কে জানতে চাইলে সিআইডির মুখপাত্র অতিরিক্ত পুলিশ সুপার আজাদ রহমান যুগান্তরকে বলেন, অবৈধ মদ ব্যবসায়ীদের অনেকে বিপুল অঙ্কের অর্থ পাচারে জড়িত। এ বিষয়ে সিআইডির অনুসন্ধান চলছে। বিদেশি মদের অবৈধ কারবার এবং অর্থ পাচারে যাদের নাম আসছে তাদের বিরুদ্ধে অবশ্যই আইনগত ব্যবস্থা নেওয়া হবে। প্রভাবশালী পরিচয়ে কারও ছাড়া পাওয়া সুযোগ নেই।
গোমর ফাঁস : গত বছর ২৯ মে জনৈক ইমরানের অ্যাকাউন্টে (নম্বর ১৪০২৪৭৩৬৪২০০১) ১১ লাখ ১৭ হাজার ১৬৩ টাকার পে-অর্ডার জমা দেয় বগুড়ার তারকা হোটেল মম ইন। সিটি ব্যাংকের গুলশান শাখায় জমা দেওয়া পে-অর্ডারটি কমার্স ব্যাংকের বগুড়া শাখা থেকে (অ্যাকাউন্ট নম্বর ০০৮১৩৩০০০০৩০৮) ইস্যু করা হয়। এতে মম ইন’র অতিরিক্ত ব্যবস্থাপনা পরিচালক সারোয়ার মাহমুদের স্বাক্ষর রয়েছে।
সিআইডি বলছে, মম ইন হোটেলের জন্য ইমরানের মাধ্যমে কালোবাজার থেকে বিদেশি মদ-বিয়ার সংগ্রহ করা হয়। এতে হোটেল কর্তৃপক্ষ মোটা অঙ্কের মুনাফা করলেও সরকারের প্রাপ্তি শূন্য। এভাবে কালোবাজার থেকে বিদেশি মদ-বিয়ার সংগ্রহ করে শতকোটি টাকার রাজস্ব ফাঁকি দিচ্ছে অনেক নামিদামি প্রতিষ্ঠান। মম ইন ছাড়াও এর মধ্যে আছে কক্সবাজারের সাইমন বিচ রিসোর্ট, গুলশানের ডরিন হোটেল অ্যান্ড রিসোর্ট (বর্তমানে ক্রাউন প্লাজা) ও যশোরের জাবির প্যারাডাইজ।
সূত্র জানায়, ২০২১ সালে র্যাবের দায়েরকৃত একটি মাদক মামলার তদন্ত করতে গিয়ে ইমরান নামের এক শীর্ষস্থানীয় চোরাকারবারিকে শনাক্ত করে সিআইডি। বৈধ কোনো ব্যবসা না থাকলেও তার ব্যাংক অ্যাকাউন্টে বিপুল অঙ্কের লেনদেন পাওয়া যায়। এর মধ্যে শুধু সিটি ব্যাংকের গুলশান শাখায় মাত্র ৬ মাসে জমা পড়ে ৭ কোটি টাকার বেশি।
ইমরানের অ্যাকাউন্টে সরাসরি বিপুল অঙ্কের নগদ অর্থ এবং পে-অর্ডারে অর্থ জমা দেয় কক্সবাজারের সাইমন বিচ রিসোর্ট। ১৮ সেপ্টেম্বর সরেজমিন কক্সবাজারের মেরিন ড্রাইভ রোডে অবস্থিত সাইমন বিচ রিসোর্টে গেলে দেখা যায়, তৃতীয় তলায় সানসেট নামের লাইসেন্স মদের বার আছে। সেখানে থরে থরে সাজানো বিদেশি মদের বোতল দেখা যায়।
ডিলাক্স ব্র্যান্ডের একেকটি বোতল বিক্রি হচ্ছে ২২ থেকে ৩০ হাজার টাকায়। অথচ কালোবাজার থেকে এসব মদ আনতে খরচ পড়ে ৫ থেকে ৮ হাজার টাকা। অর্থাৎ একেকটি বোতলে লাভের অঙ্ক ১০-১৫ হাজার টাকার বেশি। এছাড়া মদ-বিয়ার বিক্রিতে প্রচলিত আইনের তোয়াক্কাও করে না কর্তৃপক্ষ। হোটেলে ২৪ ঘণ্টাই মদের পার্সেল মিলছে।
সংশ্লিষ্টরা বলছেন, ব্যাপক চাহিদার কারণে ঢাকা ও চট্টগ্রামকেন্দ্রিক বিদেশি মদ চোরকারবারিদের একাধিক চক্র গড়ে উঠেছে। হকার নামে পরিচিত এসব চোরাকারবারির অনেকেই এখন কোটিপতি। এমন অন্তত ২০ জন শীর্ষস্থানীয় চোরাকারবারির ওপর নজরদারি করছে সিআইডি। তাদের বিপুল অর্থ সম্পদ ক্রোক বা বাজেয়াপ্তের জন্য অর্থ পাচার আইনে মামলার প্রস্তুতিও প্রায় চূড়ান্ত।
এম ফরিদ : রাজধানীর শীর্ষস্থানীয় চোরাকারবারিদের অন্যতম হলেন ফরিদ আহাম্মদ ওরফে এম ফরিদ। হতদরিদ্র ঘরের সন্তান ফরিদ রাজধানীতে আসেন শূন্য হাতে। কিন্তু এখন তিনি শতকোটি টাকার মালিক। চট্টগ্রামের চন্দ্রিমা আবাসিক এলাকায় ৭ তলা (হোল্ডিং নম্বর ৯১১) সুরম্য বাড়ি, গুলশানের কালাচাঁদপুরে কোটি টাকা মূল্যের ফ্ল্যাট, কুড়িলসংলগ্ন একটি বৃহৎ আবাসিক এলাকায় একাধিক প্লট আছে তার। ফরিদ চলাফেরা করেন পাজেরোতে (ঢাকা মেট্রো ঘ ১৮-৫২৫৫)। এছাড়া তার পরিবারের সদস্যরা প্রিমিও (ঢাকা মেট্রো-গ ৩৫-০০৪৪) গাড়ি ব্যবহার করে। সম্প্রতি মধ্যপ্রাচ্যের দুবাইয়েও ব্যবসা খুলেছেন ফরিদ।
সূত্র জানায়, ফরিদের গ্রামের বাড়ি চট্টগ্রামের বোয়ালখালী উপজেলায়। জাতীয় পরিচয়পত্রের ঠিকানা ধরে ১৮ সেপ্টেম্বর তার গ্রামের বাড়িতে হাজির হন যুগান্তর প্রতিবেদক। উপজেলা সদর থেকে প্রায় ২০ কিলোমিটার দূরে চরনদ্বীপ গ্রামের শরীফপাড়ায় তার বাড়ি। অজপাড়াগাঁ হলেও নিজের বসতভিটায় সুরম্য ডুপ্লেক্স বাড়ি নির্মাণ করেছেন ফরিদ।
স্থানীয়রা জানান, ফরিদের পিতার নাম খুইল্ল্যা মিয়া। তিনি কাঠের নৌকা তৈরির মিস্ত্রি ছিলেন। ফরিদরা ৫ ভাই। দুই ভাই অনেক আগেই মারা যান। সাবের আহমেদ নামের এক ভাই বাড়ির পাশেই ছোট মুদি দোকান চালান। এক ভাই দুবাই থাকেন। সবার ছোট ফরিদ। এলাকায় তার অঢেল ধন-সম্পদের কথা সবার মুখে মুখে। তার পরিচালনায় স্থানীয় একটি মাদ্রাসা চলে। ফরিদ নিজেকে বাণিজ্যিক গুরুত্বপূর্ণ ব্যক্তি বা সিআইপি বলে পরিচয় দেন। স্থানীয়ভাবে তিনি বিএনপির রাজনীতিতেও সক্রিয়।
বাবু শেখ : রাজধানীর অন্যতম শীর্ষস্থানীয় মদ চোরাকারবারির নাম বাবু শেখ। গ্রামের বাড়ি পিরোজপুর সদর উপজেলার শরিকতলা ইউনিয়নের উত্তর রানীপুর গ্রামে। তার পিতা আব্দুর রশিদ শেখ দিনমজুর। বাবু শেখসহ তার অপর তিন ভাই শামীম, সুমন ও সুজন মাদক ব্যবসায়ী হিসাবে পুলিশের তালিকাভুক্ত। তাদের সবার বিরুদ্ধে ডজনের বেশি মামলা আছে। শুধু বাবু শেখের বিরুদ্ধে ২৭টি মাদক মামলা বিচারাধীন।
স্থানীয়রা জানান, নিরক্ষর বাবু শেখ ১৫ বছর বয়সে এলাকা ছাড়েন। ঢাকায় গিয়ে ওয়েটার হিসাবে চাকরি করতেন মদের বারে। সেখান থেকেই চোরাকারবারে হাতেখড়ি হয় তার। একপর্যায়ে ঢাকার বিভিন্ন হোটেল-রেস্টুরেন্টে চোরাই মদ সাপ্লাই শুরু করেন বাবু। এভাবে তিনি কোটিপতি বনে যান। নিজের পৈতৃক বসতভিটা না থাকলেও সম্প্রতি গ্রামে ৩ তলা বাড়ি নির্মাণ করেছেন বাবু। এছাড়া এলাকায় মার্কেট, গরু ও মুরগির ফার্ম করেছেন। বেশকিছু কৃষি জমিও কিনেছেন তিনি।
সংশ্লিষ্টরা বলছেন, বাবু নিজেকে আওয়ামী লীগ নেতা বলে পরিচয় দেন। স্থানীয় জনপ্রতিনিধি ও সরকারদলীয় রাজনীতিকদের সঙ্গে তার ঘনিষ্ঠতা রয়েছে। রাজনৈতিক নেতাদের মতোই বাবু এলাকায় যান মোটরসাইকেলের বহর নিয়ে। প্রায় ৪০ লাখ টাকা মূল্যের একটি নোহা মাইক্রোবাস (ঢাকা মেট্রো-চ ১৪-৭৯১০) ব্যবহার করেন বাবু। এছাড়া স্থানীয় সড়ক ও জনপথ অধিদপ্তরের কয়েক একর মূল্যবান জায়গা দখলে রেখেছেন তিনি।
আতা : ঢাকার গুলশান-বনানীকেন্দ্রিক বিদেশি মদের ব্যবসা আতাউর রহমান ওরফে আতার দখলে। ঢাকায় তিনি অন্তত ৩০ বছর ধরে মদের চোরাকারবারের জগতে সক্রিয়। মুন্সীগঞ্জের টঙ্গীবাড়ি থানার সেরাজাবাদ গ্রামে তার বাড়ি। পিতার নাম মোহাম্মদ আলী শেখ। মা মনোয়ারা বেগম।
সূত্র জানায়, বিদেশি মদের চোরাকারবারে আঙুল ফুলে কলাগাছ বনে গেছেন আতা। ঢাকায় ৮-১০টি ফ্ল্যাট, দোকানের পজেশন ছাড়াও শেয়ার বাজারে কোটি টাকার বিনিয়োগ রয়েছে তার। প্রিমিও, এলিয়ন ও ফিল্ডার ব্র্যান্ডের একাধিক গাড়ি ব্যবহার করেন আতা। ছোট ভাই মতি শেখ মদ ব্যবসায় তার প্রধান সহযোগী। এছাড়া চঞ্চল নামে তার এক ভায়রা মদ ব্যবসার অন্যতম পার্টনার। নানা পন্থায় সম্প্রতি একাধিক মদের বার লাইসেন্স পেতে সক্ষম হয়েছেন চঞ্চল।
হৃদয় : যাত্রাবাড়ী এলাকায় পরিবহণ ব্যবসায়ী হিসাবে সুপরিচিত ফারুক সরকার ওরফে হৃদয়। ঢাকা-খুলনা রুটে চলাচলকারী তিস্তা পরিবহণ কোম্পানির অন্যতম মালিক তিনি। এ রুটে তার বাসের সংখ্যা প্রায় ২৫টি। এছাড়া গার্মেন্ট ব্যবসা খুলেছেন তিনি। তবে পরিবহণ ব্যবসায়ী পরিচয়ের আড়ালে হৃদয়ের মূল ব্যবসা বিদেশি মদের চোরাকারবার। রাজধানীর গুলশান ও বনানী থানায় তার বিরুদ্ধে ১৭টি মাদক মামলা চলমান। র্যাব ও পুলিশের হাতে একাধিকবার গ্রেফতার হয়ে জেল খাটেন হৃদয়।
মোটা রুবেল : দূতাবাসের ব্যবহৃত হলুদ নম্বর প্লেটের গাড়ি ভাড়া নিয়ে মদ পাচারে জড়িত গুলশানের চোরাকারবারি রুবেল ওরফে মোটা রুবেল। সম্প্রতি র্যাবের হাতে পাজেরোসহ মদের চালান আটক হলে গা ঢাকা দেন রুবেল। রাজধানীর সাঈদনগর এলাকায় বিভিন্ন বাসা বাড়ির গ্যারেজে মদ বোঝাই গাড়ি রেখে আশপাশে ডেলিভারি দেন রুবেলের লোকজন।
সূত্র জানায়, নিরাপদে মদ পাচারের জন্য বিভিন্ন দূতাবাসের অসাধু গাড়িচালকদের ম্যানেজার করেন রুবেল। তাদের কাছ থেকে ঘণ্টা হিসাবে গাড়ি ভাড়া নেওয়া হয়। এরপর হলুদ নম্বর প্লেটযুক্ত গাড়িতে মদ বোঝাই করে নির্বিঘ্নে গন্তব্যে পৌঁছে দেওয়া হয়। এ কাজে রুবেলের নেতৃত্বে গুলশান-বনানী এলাকায় একটি চক্র গড়ে উঠেছে। সিআইডির তথ্য অনুযায়ী, রুবেলের প্রধান সহযোগীর নাম জাকির হোসেন। বিদেশি মদ ব্যবসায় তিনিও এখন কোটিপতি। পটুয়াখালী জেলার মির্জাগঞ্জ উপজেলায় চন্দ্রকান্দা গ্রামে তার বাড়ি। পিতার নাম আলম গাজী। এলাকায় দানশীল হিসাবে পরিচিত জাকির এক সময় গুলশানে ফুটপাতের হকার ছিলেন।
ফারুক : মদ চোরাকারবারির তালিকায় প্রথমসারিতে আছেন জনৈক নেতা ফারুক শিকদার। ভোলার দৌলতখান উপজেলার বাংলাবাজার গ্রামে তার বাড়ি। তার পিতার নাম আব্দুল গফুর শিকদার। মায়ের নাম আরিফা খাতুন। নিজেকে একটি দলের প্রভাবশালী নেতা জাহির করতে নিজের গাড়িতে পিতলের তৈরি দলের প্রতীকের রেপ্লিকা নিয়ে ঘোরেন ফারুক। কখনও প্রিমিও, কখনও এলিয়ন আবার কখনও নিশান ব্ল– বার্ড গাড়িতে দেখা যায় তাকে।
এছাড়া শীর্ষস্থানীয় চোরাকারবারি হিসাবে সিআইডির তালিকায় নাম আছে জনৈক কবীর ওরফে কবির গাজির। গ্রামের বাড়ি ভোলা। এ কারণে চোরাকারবার জগতে অনেকেই তাকে ভোলাইয়া কবির নামে ডাকে। তবে সম্প্রতি ডিবির হাতে গ্রেফতার হয়ে জেলে যান কবির। জামিনে মুক্তির পরপরই ঢাকা ছাড়েন। গোয়েন্দা পুলিশের ভয়ে বর্তমানে তিনি নিষ্ক্রিয়। এছাড়া বনানীতে সুইট ড্রিম নামের হোটেল ভাড়া নিয়ে বিদেশি মদের ব্যবসা চালাচ্ছেন জনৈক পলাশ। মাসিক ৬ লাখ টাকা চুক্তিতে হোটেলের ৮০১ ও ৮০২ নম্বর কক্ষ ভাড়া নেওয়া হয়েছে। পুলিশ ও মাদকদ্রব্য নিয়ন্ত্রণ অধিদপ্তরের কর্মকর্তাদের ঘনিষ্ঠ হিসাবে পরিচিত পলাশ বনানী ৮ নম্বর রোডে একটি অবৈধ ক্লাব পরিচালনায় জড়িত।
এছাড়া ঢাকার পুরোনো মদ চোরাকারবারিদের মধ্যে অন্যতম কিরন ও হাসান নামের সহোদর। চাঁদপুরের বাসিন্দা কিরন দুই স্ত্রীকে নিয়ে বসবাস করেন উত্তরা চার নম্বর সেক্টরে। মদ ব্যবসা আড়াল করতে সম্প্রতি গার্মেন্ট ব্যবসা খুলেছেন তার ভাই হাসান।
বক্তব্য : অভিযোগ প্রসঙ্গে জানতে চাইলে মম ইন হোটেলের প্রধান অর্থনিয়ন্ত্রক সিরাজুল ইসলাম যুগান্তরকে বলেন, ১৭টি ব্র্যান্ডের বিদেশি মদ তারা পর্যটন করপোরেশন থেকে সংগ্রহ করেন। কোনো চোরাকারবারির কাছ থেকে মদ নেননি। তবে বিভিন্ন কেনাকাটার জন্য অনেক সরবরাহকারীকে অর্থ দিতে হয়। ইমরান ইন্টারপ্রাইজ হয়তো তেমন কোনো সরবরাহকারী হবেন। তাই তার অ্যাকাউন্টে টাকা দেওয়া হয়েছে।
অভিযোগ অস্বীকার করে সাইমন বিচ রিসোর্ট বারের ইনচার্জ বাহাউদ্দিন বৃহস্পতিবার মোবাইল ফোনে যুগান্তরকে বলেন, তারা কোনো অবৈধ উৎস থেকে বিদেশি মদ-বিয়ার সংগ্রহ করেন না। পর্যটন করপোরেশন থেকে যথানিয়মে সরকার নির্ধারিত মূল্য পরিশোধ করে চাহিদা অনুযায়ী বিদেশি মদ উত্তোলন করা হয়।
অঢেল অর্থ সম্পদের উৎস এবং বৈধ ব্যবসা প্রতিষ্ঠান প্রসঙ্গে জানতে চাইলে এম ফরিদ আহাম্মেদ যুগান্তরকে বলেন, ফোন করার জন্য আপনাকে ধন্যবাদ। তবে ফোনে এসব বিষয়ে কথা না বলাই ভালো। একদিন আসেন, তখন আপনার সঙ্গে কথা বলা যাবে। এর বেশি তিনি আর কিছু বলতে রাজি হননি।
মদ চোরাকারবারের অভিযোগ প্রসঙ্গে বক্তব্য জানার জন্য বাবু শেখের মোবাইলে একাধিকবার ফোন করা হয়। কিন্তু তিনি ফোন রিসিভ করেননি। বক্তব্য জানতে চেয়ে তার মোবাইলে খুদে বার্তা পাঠানো হয়। কিন্তু এতেও তার সাড়া মেলেনি।
অবৈধ মদ ব্যবসার অভিযোগ প্রসঙ্গে বক্তব্য জানতে চাইলে আতাউর রহমান ওরফে আতা বলেন, তিনি এক সময় মদের জগতে চাকরি করতেন। কিন্তু ২০১৬ সালে হজ করে আসার পর এ জগত থেকে তিনি বেরিয়ে আসেন। বর্তমানে তিনি রিয়েল এস্টেট ব্যবসার সঙ্গে জড়িত।