Logo
Logo
×

প্রথম পাতা

ঢাকায় ভারত মহাসাগরীয় সম্মেলন শুরু আজ

লক্ষ্য আঞ্চলিক সমস্যা ও চ্যালেঞ্জ মোকাবিলা

Icon

মাসুদ করিম

প্রকাশ: ১২ মে ২০২৩, ১২:০০ এএম

প্রিন্ট সংস্করণ

লক্ষ্য আঞ্চলিক সমস্যা ও চ্যালেঞ্জ মোকাবিলা

বাংলাদেশ ও ভারতের পতাকা

আঞ্চলিক সমস্যা ও চ্যালেঞ্জ মোকাবিলার লক্ষ্যে ঢাকায় শুরু হচ্ছে ষষ্ঠ ভারত মহাসাগরীয় সম্মেলন। শান্তি, সমৃদ্ধি, অংশীদারত্ব এই সম্মেলনের মূল প্রতিপাদ্য। প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা আজ বিকালে দুই দিনব্যাপী সম্মেলনের উদ্বোধন করবেন। এতে অংশ নিতে মরিশাসের প্রেসিডেন্ট পৃথ্বীরাজসিংহ রুপন, ভারতের পররাষ্ট্রমন্ত্রী সুব্রমনিয়াম জয়শঙ্করসহ বিভিন্ন দেশের প্রতিনিধি ঢাকায় পৌঁছেছেন। অন্যরা পৌঁছবেন আজ।

বাংলাদেশের পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়, ভারতের পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয় ও ভারতের গবেষণা প্রতিষ্ঠান ইন্ডিয়া ফাউন্ডেশন যৌথভাবে সম্মেলনের আয়োজন করেছে। রাজধানী ঢাকায় হোটেল ইন্টারকন্টিনেন্টালে অনুষ্ঠেয় সম্মেলনে মরিশাসের প্রেসিডেন্ট, মালদ্বীপের ভাইস প্রেসিডেন্ট, ২৫ দেশের পররাষ্ট্রমন্ত্রী, প্রতিমন্ত্রী, উচ্চ পর্যায়ের প্রতিনিধিসহ বিভিন্ন দেশের দেড় শতাধিক প্রতিনিধি অংশ নিচ্ছেন।

পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের সংশ্লিষ্ট এক কর্মকর্তা বৃহস্পতিবার যুগান্তরকে বলেন, ‘বিশ্বের আগামী সম্ভাবনা লুকিয়ে আছে ভারত মহাসাগরীয় অঞ্চলের মধ্যে। আফ্রিকা, দক্ষিণ এশিয়া, দক্ষিণ-পূর্ব এশিয়া অঞ্চল ভারত মহাসাগরীয় এলাকায় অবস্থিত। এখানে জলবায়ু পরিবর্তন, নিরাপত্তা, নন-ট্রাডিশনাল চ্যালেঞ্জ রয়েছে। এসব চ্যালেঞ্জ মিলিতভাবে মোকাবিলা করার ওপর নির্ভর করছে এই অঞ্চলের অর্থনৈতিক প্রবৃদ্ধি ও সমৃদ্ধি।’

বাংলাদেশ কেন এই সম্মেলন আয়োজনে আগ্রহী হলো-জানতে চাইলে ওই কর্মকর্তা বলেন, ‘বাংলাদেশ ভারত মহাসাগরীয় অঞ্চলের একেবারে কেন্দ্রে অবস্থিত। এ পর্যন্ত ভারত মহাসাগরীয় সম্মেলন পাঁচবার হয়েছে। সে কারণে আগেই বাংলাদেশে এই সম্মেলন হওয়া উচিত ছিল। দেরিতে আয়োজন করছে এটা ইতিবাচক দিক।’

সম্মেলনে ইন্দো-প্যাসিফিক কৌশল কতটা প্রাধান্য বিস্তার করতে পারবে জানতে চাইলে তিনি বলেন, ‘ইন্দো-প্যাসিফিক অংশীদারত্বের আলোচনায় আসাটা স্বাভাবিক। তবে প্রাধান্য বিস্তার করবে না। ভারত মহাসাগরীয় সম্মেলনে সাধারণত সাংস্কৃতিক, অর্থনৈতিক, কৌশলগত এবং উন্নয়নের দিক প্রাধান্য পেয়ে থাকে।’

ইন্দো-প্যাসিফিক স্ট্র্যাটেজি এবং কোয়াডকে এই অঞ্চলে চীনকে মোকাবিলার কৌশল বলে মনে করা হয়। ভারত মহাসাগরীয় সম্মেলনে অবশ্য চীনকে আমন্ত্রণ জানিয়েছিল স্বাগতিক বাংলাদেশ। তবে চীন আমন্ত্রণে সাড়া দেয়নি।

এই সম্মেলনের সহ-আয়োজক ইন্ডিয়া ফাউন্ডেশন আরএসএসের সমর্থনপুষ্ট থিঙ্কট্যাঙ্ক বলে ভারতের মিডিয়ার খবর সম্পর্কে দৃষ্টি আকর্ষণ করা হলে তিনি বলেন, ‘ভারত সরকারের তহবিলে এই থিঙ্কট্যাঙ্ক কাজ করে। ভারতের সরকার আরএসএস সমর্থনপুষ্ট বিজেপি সরকার।’

বৃহস্পতিবার পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের এক সংবাদ বিজ্ঞপ্তিতে বলা হয়, মরিশাসের প্রেসিডেন্ট পৃথ্বীরাজসিংহ রুপন সস্ত্রীক ঢাকায় পৌঁছেছেন। দেশটির সরকারের উচ্চ পর্যায়ের কর্মকর্তারা তার সঙ্গে রয়েছেন। মুক্তিযুদ্ধবিষয়ক মন্ত্রী আ. ক. ম. মোজাম্মেল হক এমপি হযরত শাহজালাল (রহ.) আন্তর্জাতিক বিমানবন্দরে তাকে স্বাগত জানান। পৃথ্বীরাজসিংহ রুপন ভারত মহাসাগরীয় সম্মেলনে যোগ দেওয়ার পাশাপাশি দ্বিপক্ষীয় বিভিন্ন কর্মসূচিতে যোগ দেবেন। তিনি বঙ্গভবনে রাষ্ট্রপতি মো. সাহাবুদ্দিনের সঙ্গে বৈঠক করবেন।

মরিশাসের প্রেসিডেন্টের সঙ্গে সৌজন্য সাক্ষাৎ করবেন পররাষ্ট্রমন্ত্রী একে আব্দুল মোমেন এবং প্রবাসী কল্যাণ ও বৈদেশিক কর্মসংস্থানমন্ত্রী ইমরান আহমেদ। জাতির পিতা বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান ও তার সঙ্গে নিহত সবার প্রতি শ্রদ্ধা জানাতে মরিশাসের প্রেসিডেন্ট বঙ্গবন্ধু স্মৃতি জাদুঘর পরিদর্শন করবেন। তিনি ঢাকায় মুক্তিযুদ্ধ জাদুঘরও পরিদর্শন করবেন। সফরকালে তিনি বিভিন্ন বস্ত্র কারখানাও পরিদর্শন করবেন।

পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের বিবৃতিতে আরও বলা হয়, বাংলাদেশ ও মরিশাসের মধ্যে চমৎকার দ্বিপক্ষীয় সম্পর্ক রয়েছে। মরিশাসে বর্তমানে প্রায় ২০ হাজার বাংলাদেশি কর্মী কর্মরত রয়েছেন।

এদিকে ভারতের রাষ্ট্রীয় স্বয়ংসেবক সংঘ (আরএসএস)-এর ১৭ সদস্যের একটি প্রতিনিধি দল সম্মেলনে যোগ দিচ্ছে বলে ভারতীয় মিডিয়ার খবরে বলা হয়েছে। এতে উল্লেখ করা হয়, ইন্ডিয়া ফাউন্ডেশন হলো আরএসএস নিয়ন্ত্রিত থিঙ্কট্যাঙ্ক। এর মধ্যে ভারতের পররাষ্ট্রমন্ত্রী এস জয়শঙ্কর তিন দিনের সফরে ঢাকায় পৌঁছেছেন। ইন্ডিয়া ফাউন্ডেশনের পরিচালক আলোক বানসাল, আরএসএস গভর্নিং বডির সদস্য রাম মাধবও সম্মেলনে যোগ দেবেন। আরএসএসের আন্তর্জাতিক বিষয়াদি দেখাশোনা করেন রাম মাধব। এছাড়া আরএসএস মুখপাত্র ‘অর্গানাইজার’ সম্পাদক প্রফুল ক্যাথকার, সাবেক মন্ত্রী এম জে আকবর, বিজেপি এমপি স্বপন দাশগুপ্ত, কাঞ্চন গুপ্তও রয়েছেন প্রতিনিধি দলে।

ঢাকায় এরই মধ্যে পৌঁছেছেন মালদ্বীপের ভাইস প্রেসিডেন্ট, ভারতের পররাষ্ট্রমন্ত্রী, ভুটানের পররাষ্ট্রমন্ত্রী, শ্রীলংকার দুজন মন্ত্রী, মাদাগাস্কারের পররাষ্ট্রমন্ত্রী ও সিসেলের পররাষ্ট্রমন্ত্রী। আজ ঢাকায় আসছেন কম্বোডিয়া, জাপান, সংযুক্ত আরব আমিরাত, নেপাল ও ভিয়েতনামের প্রতিনিধিরা। আজ সম্মেলনের উদ্বোধনী অনুষ্ঠান হবে। আগামীকাল বিভিন্ন কর্ম অধিবেশন হবে।

ইন্দো-প্যাসিফিকে কাজ করবে কোয়াড : যুক্তরাষ্ট্র, জাপান, অস্ট্রেলিয়া ও ভারতের চার দেশের নিরাপত্তা সহযোগিতা সংস্থায় এই মুহূর্তে নতুন কোনো দেশকে সদস্য করা হবে না। তবে ইন্দো-প্যাসিফিক অঞ্চলের অংশীদার দেশগুলোর সঙ্গে কাজ করবে কোয়াড। হোয়াইট হাউজের মুখপাত্র জীন-পিয়ারে সাংবাদিকের প্রশ্নের জবাবে এ কথা বলেন। তিনি বলেন, দুই বছর আগে কোয়াড প্রতিষ্ঠিত হয়।

সদস্যরা সংস্থার শক্তি বাড়াতে বদ্ধপরিকর। তবে কোয়াড ইন্দো-প্যাসিফিক অংশীদারদের সঙ্গে কাজ করাকে স্বাগত জানায়। সামুদ্রিক ক্ষেত্রে সচেতনতা সৃষ্টির লক্ষ্যে এবং নতুন প্রযুক্তি যুক্ত করার বিষয়ে কাজ করতে আগ্রহী। আগামী ২৪ মে সিডনি সম্মেলনে এই অঞ্চলের জলবায়ু পরিবর্তন, বৈশ্বিক স্বাস্থ্য, অবকাঠামো এবং অন্যান্য বিষয়ে আলোচনা করার সুযোগ পাওয়া যাবে। ফলে কোয়াড সম্প্রসারণ নিয়ে এ মুহূর্তে কোনো আলোচনা নেই।

Jamuna Electronics

Logo

সম্পাদক : সাইফুল আলম

প্রকাশক : সালমা ইসলাম