গাজীপুর সিটি নির্বাচন
আপিলেও ফিরল না জাহাঙ্গীরের প্রার্থিতা
যুগান্তর প্রতিবেদন
প্রকাশ: ০৫ মে ২০২৩, ১২:০০ এএম
প্রিন্ট সংস্করণ
গাজীপুর সিটি করপোরেশন নির্বাচনে মেয়র পদে প্রার্থিতা ফিরে পেতে আপিল করে হেরে গেলেন মোহাম্মদ জাহাঙ্গীর আলম। তার আপিল নামঞ্জুর করেছেন এ নির্বাচনের আপিল কর্তৃপক্ষ এবং ঢাকা বিভাগীয় কমিশনার মো. সাবিরুল ইসলাম। তিনি রিটার্নিং কর্মকর্তার সিদ্ধান্ত বহাল রেখেছেন।
বৃহস্পতিবার ঢাকা বিভাগীয় কমিশনার কার্যালয়ে শুনানি শেষে মো. সাবিরুল ইসলাম এ রায় দেন। প্রার্থী হওয়ার সময় তিনি খেলাপি ঋণের জামিনদার ছিলেন বলে রায়ের পর্যালোচনায় উল্লেখ করা হয়েছে। এ রায়ের ফলে মেয়র পদে প্রতিদ্বন্দ্বিতা করতে পারছেন না এ সিটির সদ্য সাবেক মেয়র মো. জাহাঙ্গীর আলম।
যদিও তিনি এ রায়ের বিরুদ্ধে উচ্চ আদালতে আপিল করবেন বলে যুগান্তরকে জানিয়েছেন। রায়ের খবরে আওয়ামী লীগের প্রার্থী অ্যাডভোকেট মো. আজমত উল্লা খানের শিবিরে উৎসব ভাব দেখা গেছে। নির্বাচনে জাহাঙ্গীর আলমকেই আজমত উল্লার প্রধান প্রতিদ্বন্দ্বী হিসাবে মনে করেন তারা। জাহাঙ্গীর ফিরে আসতে না পারলে আজমত উল্লার বিজয় সহজ হবে বলেও মনে করেন তার অনুসারীরা।
এদিকে আপিল কর্তৃপক্ষের আদেশের কপি বৃহস্পতিবারই পেয়েছেন বলে জানিয়েছেন গাজীপুর সিটি করপোরেশনের রিটার্নিং অফিসার মো. ফরিদুল ইসলাম। এ বিষয়ে তিনি যুগান্তরকে বলেন, আদেশের কপি পেয়েছি। তার (জাহাঙ্গীর আলম) প্রার্থিতা বাতিল করে যে সিদ্ধান্ত দিয়েছিলাম, আপিল কর্তৃপক্ষ তা বহাল রেখেছেন। তবে আপিলে একজন কাউন্সিলর প্রার্থী তার প্রার্থিতা ফিরে পেয়েছেন বলেও জানান তিনি।
এ রায়ের বিষয়ে প্রতিক্রিয়া জানতে চাইলে মো. জাহাঙ্গীর আলম বৃহস্পতিবার রাতে যুগান্তরকে বলেন, আমি ন্যায়বিচার পাইনি। সিআইবি রিপোর্টে ওই প্রতিষ্ঠানের খেলাপি ঋণের বিষয়ে হাইকোর্টের স্থগিতাদেশ রয়েছে। ওই স্থগিতাদেশ আমলে না নিয়ে একতরফাভাবে আমার বিরুদ্ধে রায় দেওয়া হয়েছে। আমি ওই রায়ের বিরুদ্ধে উচ্চ আদালতে যাব।
রিটার্নিং কর্মকর্তার দপ্তর সূত্রে জানা যায়, জাহাঙ্গীর আলমের প্রার্থিতা বাতিল হলেও এ নির্বাচনে মেয়র পদে আওয়ামী লীগের অ্যাডভোকেট আজমত উল্লা খানসহ নয়জন প্রার্থী রয়েছেন। এর মধ্যে জাহাঙ্গীরের মা জায়েদা খাতুনও আছেন। ৮ মে প্রার্থিতা প্রত্যাহারের শেষ দিন নির্ধারিত রয়েছে। ওই সময়ের পর কারা থাকছেন, তা চূড়ান্ত হবে। এর পরের দিনই প্রতিদ্বন্দ্বী প্রার্থীদের প্রতীক দেওয়া হবে। সেদিন থেকেই আনুষ্ঠানিক প্রচার শুরু হবে। যদিও প্রতীক বরাদ্দের আগে অনেক প্রার্থী প্রচার চালিয়ে যাচ্ছেন।
জানা যায়, গাজীপুরে অবস্থিত নিউটাউন নিটওয়্যার কোম্পানি নামক একটি প্রতিষ্ঠানের খেলাপি ঋণের জামিনদার হিসাবে ৩০ এপ্রিল জাহাঙ্গীর আলমের মনোনয়নপত্র বাতিল করেন রিটার্নিং কর্মকর্তা। ওই রায়ের বিরুদ্ধে ঢাকা বিভাগীয় কমিশনারের কাছে আপিল করেন তিনি।
সূত্র জানায়, বাংলাদেশ ব্যাংকের প্রতিনিধি শুনানিতে বলেন, আজ (বৃহস্পতিবার) পর্যন্ত তিনি (জাহাঙ্গীর আলম) ঋণখেলাপি মর্মে চিহ্নিত রয়েছেন। ঋণ পরিশোধ বা পুনঃতফশিলীকরণ সংক্রান্ত কোনো তথ্য সংশ্লিষ্ট ব্যাংক থেকে সিআইবিতে পাওয়া যায়নি। এর জবাবে জাহাঙ্গীর আলমের আইনজীবী শুনানিতে বলেন, এ ঋণ পুনঃতফশিল করতে ১১ এপ্রিল আবেদন করা হয়েছে। এ পরিপ্রেক্ষিতে পুনঃতফশিলের প্রস্তাব কেন্দ্রীয় কার্যালয়ে পাঠানো হয়েছে। ওই প্রস্তাব প্রক্রিয়াধীন।
এছাড়াও এ বিষয়ে উচ্চ আদালতে একটি রিট পিটিশন (নম্বর ৫০৮১/২০২৩) দায়ের করা হয়েছে। ওই রিট পিটিশনের পরিপ্রেক্ষিতে আদালত সিআইবি রিপোর্টে বিবেচ্য প্রতিষ্ঠানের খেলাপি ঋণের বিষয়ে স্থগিতাদেশ দিয়েছেন। যার কার্যকারিতা ২ মে থেকে শুরু হয়েছে। এর জবাবে রিটার্নিং কর্মকর্তার প্রতিনিধি শুনানিতে বলেন, ৩০ এপ্রিল মনোনয়নপত্র বাছাইয়ের সময়ে খেলাপি হিসাবে সিআইবি রিপোর্টে তার নাম ছিল। সেই ভিত্তিতে তার মনোনয়নপত্র বাতিল করা হয়।