Logo
Logo
×

প্রথম পাতা

জাতীয় সংসদ নির্বাচন

অল্প আসনে ইভিএম ব্যবহারের পরিকল্পনা

Icon

কাজী জেবেল

প্রকাশ: ০৩ এপ্রিল ২০২৩, ১২:০০ এএম

প্রিন্ট সংস্করণ

অল্প আসনে ইভিএম ব্যবহারের পরিকল্পনা

দ্বাদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচনে বড় পরিসরে ইলেকট্রনিক ভোটিং মেশিনে (ইভিএম) ভোটগ্রহণ করতে পারছে না নির্বাচন কমিশন (ইসি)। কারণ এরজন্য প্রয়োজনীয় মেশিন মেরামতে নির্বাচন কমিশনের চাহিদা অনুযায়ী এক হাজার ২৫৯ কোটি ৯০ লাখ টাকা বরাদ্দ দিতে অসম্মতি জানিয়েছে অর্থ মন্ত্রণালয়। নির্বাচন কমিশন সচিবকে চিঠি দিয়ে অর্থ মন্ত্রণালয় তাদের অবস্থান জানিয়েছে। ওই টাকা দিয়ে এক লাখ ১০ হাজার ইভিএম আগামী নির্বাচনের জন্য মেরামত করতে চেয়েছিল ইসি। তবে ৫০০ কোটি টাকা দিতে সম্মত হয়েছে অর্থ মন্ত্রণালয়। এ কারণেই অল্পসংখ্যক আসনে ইভিএমে ভোটগ্রহণের পরিকল্পনা রয়েছে নির্বাচন কমিশন সচিবালয়ের। এক্ষেত্রে ২০-৩০টি আসনে ইভিএমে ভোট নেওয়া হতে পারে। সেগুলো সিটি করপোরেশন ও জেলা সদর আসন থেকে বাছাই করার কথা রয়েছে। এদিকে আগামী জাতীয় সংসদ নির্বাচনে ইভিএম ব্যবহারের বিষয়ে চূড়ান্ত সিদ্ধান্ত নিতে আজ বৈঠকে বসছে নির্বাচন কমিশন। বৈঠকে গাজীপুর সিটি করপোরেশন নির্বাচনের তফসিল ঘোষণাও আসতে পারে। ইসি সূত্রে এসব তথ্য জানা গেছে।

এসব বিষয়ে জানতে চাইলে নির্বাচন কমিশন সচিব মো. জাহাংগীর আলম যুগান্তরকে বলেন, ‘কমিশনের বৈঠক আছে। এতে আলোচ্য বিষয়ের মধ্যে সিটি করপোরেশন নির্বাচনের এজেন্ডা রয়েছে। এর বেশিকিছু বলতে পারব না। ইভিএম মেরামতে অর্থ মন্ত্রণালয়ের চিঠির বিষয়ে জানতে চাইলে তিনি বলেন, কমিশনের বৈঠকের পরই যা বলার বলব।’

জানা যায়, জাতীয় সংসদ নির্বাচনে শহর এলাকায় ইভিএম ব্যবহারের পরিকল্পনা রয়েছে। এ মেশিনে ভোটগ্রহণের সুবিধার্থে সিটি করপোরেশন ও সদর উপজেলা সংশ্লিষ্ট আসনে ভোটারদের আঙ্গুলের ছাপ নেওয়ার সিদ্ধান্ত নিয়েছে জাতীয় পরিচয় নিবন্ধন অনুবিভাগ। সম্প্রতি এক বৈঠকে ২০১৭-১৮ সালে নিবন্ধিত ভোটারদের আঙ্গুলের ছাপ ও চোখের আইরিশ নেওয়ার সিদ্ধান্ত হয়। তবে তাদের স্মার্ট জাতীয় পরিচয়পত্র দেওয়া হবে না। এর কারণ হিসাবে সংশ্লিষ্ট কর্মকর্তারা জানান, ২০১৭ ও ২০১৮ সালে যারা ভোটার হয়েছেন তাদের স্মার্ট জাতীয় পরিচয়পত্র দেওয়া হয়নি, তাদের আঙ্গুলের ছাপও নেওয়া হয়নি। এমন ভোটারের সংখ্যা প্রায় ১১ লাখ।

সূত্র জানায়, জাতীয় সংসদ নির্বাচনে ইভিএম ব্যবহার নিয়ে রাজনৈতিক দলগুলোর মধ্যে ব্যাপক মতপার্থক্য রয়েছে। রাজনৈতিক দলগুলোর একটি অংশ এ মেশিন ব্যবহারের বিরোধিতা করে আসছে। এরমধ্যে বিএনপি রয়েছে। অপরদিকে আওয়ামী লীগসহ সমমনা দলগুলো এ মেশিনে ভোটগ্রহণে তাদের সম্মতির কথা ইসিকে জানিয়েছে। রাজনৈতিক এমন মতপার্থক্যের মধ্যেই আগামী জাতীয় সংসদ নির্বাচনে সর্বোচ্চ দেড়শ আসনে ইভিএম ব্যবহারের সিদ্ধান্ত নেয় ইসি। সেই সিদ্ধান্ত অনুযায়ী নতুন দুই লাখ ইভিএম কিনতে আট হাজার ৭১১ কোটি ৪৪ লাখ টাকা ব্যয়ে একটি প্রকল্প নিয়েছিল ইসি। অর্থ সংকটের কারণে ওই প্রকল্প স্থগিত করে সরকার। এ কারণে পুরোনো দেড় লাখ মেশিন মেরামতের উদ্যোগ নেয় কমিশন। এগুলোর মধ্যে ৪০ হাজার পুরোপুরি অকেজো হয়ে গেছে। বাকি এক লাখ ১০ হাজার মেশিন মেরামত করতে সরকারের কাছে এক হাজার ২৫৯ কোটি ৯০ লাখ টাকা চেয়েছে ইসি। অর্থ মন্ত্রণালয় আর্থিক সংকটের কারণ দেখিয়ে প্রায় ৫০০ কোটি টাকা দিতে সম্মত হয়েছে। সম্প্রতি নির্বাচন কমিশন সচিবকে চিঠি দিয়ে অর্থ মন্ত্রণালয় তাদের সিদ্ধান্তের কথা জানিয়েছে।

সূত্র আরও জানায়, অর্থ মন্ত্রণালয়ের চিঠির বিষয়টি আজকের কমিশন বৈঠকে তোলা হবে। জাতীয় সংসদ নির্বাচনে কত আসনে এ মেশিন ব্যবহার করা হবে-সেই বিষয়ে সিদ্ধান্ত আসতে পারে বৈঠকে। কমিশন যেকটি আসনে ইভিএম ব্যবহারের সিদ্ধান্ত দেবে; সেসব আসন ও ভোটার সংখ্যা অনুযায়ী কতটি ইভিএম মেশিন ব্যবহার করা হবে তা নির্ধারণ করা হবে। ওই সংখ্যক ইভিএম মেরামতের উদ্যোগ নেবে ইসি সচিবালয়। ইভিএম মেরামত করবে বাংলাদেশ মেশিন টুলস ফ্যাক্টরি (বিএমটিএফ)। সাধারণত একটি আসনে ইভিএমে ভোটগ্রহণ করতে এক হাজার ৪০০ ইভিএম মেশিনের প্রয়োজন হয়। তবে ভোটার সংখ্যা কম-বেশি হলে ভোটকক্ষের সংখ্যায় হেরফের হয়। তখন মেশিনের সংখ্যাও কম-বেশি হয়। এছাড়া ভোটারদের সচেতন ও নির্বাচনি প্রশিক্ষণের জন্য আলাদাভাবে আরও ইভিএম মেশিনের প্রয়োজন হবে।

ইসির একাধিক কর্মকর্তা জানান, জাতীয় সংসদের ২০-৩০টি আসনে এ মেশিন ব্যবহারের পরিকল্পনা রয়েছে। ২০টি আসনে ইভিএম ব্যবহার করতে অন্তত ৩৫ হাজার মেশিন মেরামত করতে হবে। আর ৩০টি আসনে ভোট করতে হলে ৫০ হাজারের বেশি মেশিনের প্রয়োজন হবে। তারা বলেন, গাজীপুর সিটি নির্বাচনে সব কেন্দ্রে ইভিএম ব্যবহার করা হবে। এ সিটিতে সিসি ক্যামেরা ব্যবহারেরও সিদ্ধান্ত রয়েছে। এছাড়া বরিশাল, খুলনা, রাজশাহী ও সিলেট সিটি নির্বাচন দুই ধাপে হবে। সেগুলোতেও ইভিএম ব্যবহারের পরিকল্পনা রয়েছে। তারা আরও বলেন, এবার যেসব মেশিন মেরামত করা হবে, সেগুলো জাতীয় সংসদের পর উপজেলা পরিষদ নির্বাচনেও ব্যবহার করা যাবে। মেরামত না করলে বাকি মেশিনগুলো ধীরে ধীরে স্থায়ীভাবে নষ্ট হয়ে যাবে।

গাজীপুর সিটি নির্বাচন : সূত্র জানায়, গাজীপুর সিটি নির্বাচনের তফসিল আজ ঘোষণা করতে পারে ইসি। ভোটগ্রহণের সম্ভাব্য তারিখ ২৫ মে। ১১ মার্চ থেকে এ সিটিতে নির্বাচনের ক্ষণগণনা শুরু হয়েছে। ১১ মার্চ থেকে পরবর্তী ১৮০ দিনের মধ্যে নির্বাচন সম্পন্ন করার বাধ্যবাধকতা রয়েছে ইসির।

Jamuna Electronics

Logo

সম্পাদক : সাইফুল আলম

প্রকাশক : সালমা ইসলাম