
প্রিন্ট: ২৩ এপ্রিল ২০২৫, ০৮:৩৪ পিএম

সম্পাদকীয়
প্রকাশ: ০৯ এপ্রিল ২০২৫, ১২:০০ এএম
প্রিন্ট সংস্করণ
-67f5908dcc500.jpg)
ছবি: সংগৃহীত
আরও পড়ুন
সোমবার পরিবেশ, বন ও জলবায়ু পরিবর্তন মন্ত্রণালয়ের উপদেষ্টা সৈয়দা রিজওয়ানা হাসান উদ্বেগ প্রকাশ করে বলেছেন, জলবায়ু পরিবর্তন এখন বাংলাদেশের জাতীয় নিরাপত্তা, ভৌগোলিক অখণ্ডতা ও সামাজিক স্থিতিশীলতার জন্য বড় হুমকি। ঢাকার ডিফেন্স সার্ভিসেস কমান্ড অ্যান্ড স্টাফ কলেজে এক অনুষ্ঠানে বক্তৃতায় তিনি আরও বলেছেন, সমুদ্রপৃষ্ঠের উচ্চতা বৃদ্ধি, উপকূল ধ্বংস এবং জলবায়ুজনিত বাস্তুচ্যুতির কারণে কয়েক দশকের মধ্যে বাংলাদেশকে নতুনভাবে মানচিত্র আঁকতে হতে পারে। উল্লেখ্য, জলবায়ু পরিবর্তনের ক্ষতিকর প্রভাব মোকাবিলায় বিশেষজ্ঞরা নানা পরামর্শ দিলেও বিভিন্ন মহলে বিষয়টি এখনো যথাযথভাবে গুরুত্ব পাচ্ছে না। যার মূল্য আমাদের দিতে হবে ভবিষ্যতে। জানা যায়, চলতি শতকের মাঝামাঝি সমুদ্রপৃষ্ঠের উচ্চতা এক মিটার বাড়লে ২১টি উপকূলীয় জেলার উল্লেখযোগ্য অংশ সমুদ্রের পানিতে ডুবে যেতে পারে। এতে গৃহহীন হবে কোটি মানুষ। কৃষি ও মাছচাষে ব্যবহৃত নদীগুলোয় লবণাক্ত পানি প্রবেশ করবে। উল্লেখ্য, জলবায়ু পরিবর্তনের কারণে শুধু লবণাক্ততা সমস্যাই নয়, আমাদের দেশে আরও অনেক সমস্যা দেখা দেবে। বস্তুত জলবায়ু পরিবর্তনের কারণে আমাদের ভূখণ্ড কমে যাওয়া, বিপুল জনগোষ্ঠীর আবাসস্থল ডুবে যাওয়াসহ আরও যেসব সমস্যা দেখা দেবে, তা বহুল আলোচিত।
কৃষি বাংলাদেশের অর্থনীতির প্রাণশক্তি। বাংলাদেশের অর্থনীতি ও জীবন-জীবিকা মূলত কয়েকটি খুঁটির ওপর ভর করে দাঁড়িয়ে আছে, যার অন্যতম কৃষি। জলবায়ু পরিবর্তনের কারণে কৃষিতে ব্যাপক নেতিবাচক প্রভাব পড়ছে। কৃষিক্ষেত্রটি সবচেয়ে ঝুঁকিপূর্ণ খাত হিসাবেও বিবেচিত। কারণ, এর উৎপাদনশীলতা পুরোপুরি নির্ভর করে তাপমাত্রা, বৃষ্টিপাত, রৌদ্রের সময়কাল এবং জলবায়ু সম্পৃক্ত কারণগুলোর ওপর। জলবায়ু পরিবর্তনের কারণে বাংলাদেশে গ্রীষ্ম ও শীতকালে তাপমাত্রা বৃদ্ধি পাচ্ছে। পাশাপাশি তাপমাত্রার হ্রাস-বৃদ্ধির অস্বাভাবিক আচরণও লক্ষ করা যাচ্ছে। জলবায়ু পরির্তনের কারণে নদীভাঙন বাড়ছে। জলবায়ুর এ বিরূপ পরিস্থিতির সঙ্গে খাপ খাওয়ানোর জন্য বিভিন্ন অভিযোজন কৌশল রপ্ত করতে হবে, যাতে জলবায়ু পরিবর্তনের ক্ষতিকর প্রভাব থেকে কৃষিকে মুক্ত রাখা যায়। জলবায়ু পরিবর্তনের সঙ্গে কৃষিকে টেকসই অবস্থানে টিকিয়ে রাখতে হলে ফসলের সহনশীল জাত উন্নয়নে জোর দিতে হবে। লক্ষ করা যাচ্ছে, এ বিষয়ক বিভিন্ন চুক্তি বাস্তবায়নে বিশ্ববাসী ব্যর্থতার পরিচয় দিচ্ছে। এটা দুঃখজনক। এ বিষয়ক বিভিন্ন চুক্তি বাস্তবায়নে বিশ্ববাসীকে দায়িত্বশীলতার পরিচয় দিতে হবে। এ বিষয়ক ঝুঁকি মোকাবিলায় আমাদেরও নিজ উদ্যোগে আরও দায়িত্বশীল হতে হবে।