
প্রিন্ট: ১১ এপ্রিল ২০২৫, ০৮:২৬ পিএম

সম্পাদকীয়
প্রকাশ: ০৪ এপ্রিল ২০২৫, ১২:০০ এএম
প্রিন্ট সংস্করণ

আরও পড়ুন
এবারের ঈদ নিঃসন্দেহে ছিল ব্যতিক্রমী। গত ১৬ বছর এবারের ঈদের মতো এত স্বস্তি কখনো দেখা যায়নি। প্রথমত, ঈদের বাজারে পণ্যমূল্য ছিল সহনীয়। দু-একটি ছাড়া সব পণ্যের দাম তুলনামূলক কম ছিল। এর আগে আশঙ্কা করা হয়েছিল, বরাবরের মতো এবারও সিন্ডিকেটের কারসাজিতে ঈদের বাজার গরম হবে। তা হয়নি, বাজার ঠান্ডাই ছিল। ঈদে বিদ্যুৎ বিভ্রাট দেখা দেয়নি। বলা যায়, নিরবচ্ছিন্নভাবেই বিদ্যুতের সেবা পেয়েছে নাগরিকরা। ঈদে ঘরে ফেরার বিষয়টাও ছিল স্বস্তিদায়ক। বাস, ট্রেন, লঞ্চ, সব রুটেই যাত্রীদের তেমন ভোগান্তি সহ্য করতে হয়নি।
তবে এবারের ঈদে বিনোদনপ্রেমীরা সবচেয়ে বেশি আনন্দ উপভোগ করেছেন। দীর্ঘদিন থেকে দেশের পর্যটনকেন্দ্রগুলো বলা যায় নীরসই ছিল। এবার সেগুলো আনন্দমুখর হয়ে উঠেছে। উপচে পড়া ভিড় ছিল প্রায় প্রতিটি পর্যটনকেন্দ্রে। ঈদের দিন থেকে বুধবার পর্যন্ত আনন্দ উপভোগ করতে শিশু থেকে শুরু করে সব বয়সি মানুষ জড়ো হয়েছে দেশের বিভিন্ন পর্যটনকেন্দ্রে এবং একটা শান্তিপূর্ণ পরিবেশে নির্বিঘ্ন সময় কাটিয়েছে। পর্যটন ব্যবসায়ীরাও বেজায় খুশি। কক্সবাজার, পটুয়াখালী, রাজশাহী, খাগড়াছড়ি, চুনারুঘাট, খুলনা, ভূঞাপুর, ঝিনাইগাতি, চিলমারী, কাউনিয়া, বাগাতিপাড়া, আগৈলঝাড়া, মাধবপুর, চট্টগ্রাম, দোহার, নবাবগঞ্জ, বান্দরবানসহ দেশের বিভিন্ন স্থানের দর্শনীয় স্পটগুলো হয়ে পড়েছিল সরগরম। এককথায় বলা যায়, সমগ্র জাতি এক অন্যরকম আবেগ-উচ্ছ্বাসে ঈদ কাটিয়েছে এবার।
এদেশের মানুষ আনন্দপ্রিয়। সুযোগ পেলেই তারা, বিশেষত যাদের আর্থিক সংগতি রয়েছে, বিদেশে অথবা দেশের দর্শনীয় স্পটগুলোয় ঘুরতে যায়। বেশির ভাগ ক্ষেত্রেই পরিবারের সব সদস্য মিলে বেড়াতে যায়। তাই দেশের পর্যটন খাত বেশ গুরুত্ব বহন করে। কিন্তু দেখা যায়, রাজনৈতিক অস্থিরতা থাকলে এক ধরনের অনিশ্চয়তাবোধ থেকে মানুষ আনন্দবিমুখ হয়ে পড়ে। আমরা তাই বলব, দেশের মানুষকে স্বস্তি ও আনন্দে রাখতে হলে রাজনৈতিক স্থিতিশীলতার ওপর জোর দিতে হবে। দ্বিতীয়ত, পর্যটন শিল্পের প্রতি আরও মনোযোগী হতে হবে। প্রাকৃতিকভাবে আমরা যেসব দর্শনীয় জায়গা পেয়েছি, সেগুলোর সৌন্দর্য বৃদ্ধি করতে হবে। নিশ্চিত করতে হবে পরিষ্কার-পরিচ্ছন্নতা ও পর্যটকদের নিরাপত্তা। তাহলেই দেশের অর্থনীতি ও মানুষের জীবন, দুটোই উন্নত হবে।