
প্রিন্ট: ১১ এপ্রিল ২০২৫, ১০:৫৯ পিএম

সম্পাদকীয়
প্রকাশ: ২১ মার্চ ২০২৫, ১২:০০ এএম
প্রিন্ট সংস্করণ

আরও পড়ুন
আগামী জাতীয় সংসদ নির্বাচনে রাজনৈতিক দল বা জোটের জয়-পরাজয় নির্ধারণে তরুণ ভোটাররাই হবেন ট্রাম্পকার্ড তথা তুরুপের তাস। গত ১৭ মার্চ পর্যন্ত হালনাগাদ তথ্যমতে, দেশে মোট ভোটার সংখ্যা ১২ কোটি ৪৪ লাখ ৮০ হাজার ৬৮৭। এর মধ্যে ১৮ থেকে ২৯ বছর বয়সি তরুণ ভোটার সংখ্যা ৩ কোটি ৪ লাখ ৭ হাজার। এ ছাড়া ৩০-৪১ বছর বয়সি ভোটার সংখ্যা ৩ কোটি ৫৯ লাখ ৭৩ হাজার এবং ৪২-৪৯ বছর বয়সি ভোটার সংখ্যা ২ কোটি ১০ লাখ ৯ হাজার। এ তথ্য থেকে স্পষ্ট আগামী জাতীয় সংসদ নির্বাচনে তরুণদের ভূমিকা কতটা গুরুত্বপূর্ণ হবে। উল্লেখ্য, দেশের তরুণদের অধিকাংশই বিগত কয়েকটি নির্বাচনে ভোট দিতে পারেনি। ৫ আগস্টের গণ-অভ্যুত্থানের পর পরিবর্তিত পরিস্থিতিতে তারা প্রথমবারের মতো অবাধে ভোট দেওয়ার স্বপ্ন দেখছে। ধারণা করা হচ্ছে, আগামী জাতীয় সংসদ নির্বাচনে তরুণ ভোটারদের পছন্দ-অপছন্দ বিবেচনায় রেখেই রাজনৈতিক দল ও জোটগুলো প্রার্থী মনোনয়ন দেবে। জানা যায়, এসব বিষয় বিবেচনায় রেখে নির্বাচনে জয়ের জন্য তরুণদের ভোট টানতে নানা ছক কষছে বিএনপি, এনসিপি, জামায়াত ও অন্য দলগুলো; একইসঙ্গে পালন করছে নানা কর্মসূচি, নির্ধারণ করছে কৌশল।
বস্তুত বিগত ফ্যাসিস্ট সরকার নির্বাচনে নানামুখী কারসাজির আশ্রয় নেওয়ায় ভোটারদের বড় অংশ দীর্ঘদিন জাতীয় ও স্থানীয় নির্বাচনে ভোট দিতে পারেননি; তারা ভোট প্রদানের ব্যাপারে উৎসাহ হারিয়ে ফেলেছেন। বর্তমানে দেশে নির্বাচনি আবহ বিরাজ করছে। নির্বাচনে অংশ নিতে গণ-অভ্যুত্থানে নেতৃত্ব দেওয়া শিক্ষার্থীদের বড় একটি অংশ জাতীয় নাগরিক পার্টি (এনসিপি) নামে নতুন রাজনৈতিক দলও গঠন করেছেন। আরও কিছু নতুন দল গঠন হতে যাচ্ছে। পাশাপাশি নির্বাচনসহ বিভিন্ন ক্ষেত্রে সংস্কার কমিশনগুলোর সুপারিশের ওপর রাজনৈতিক দলগুলোর সঙ্গে ধারাবাহিক সংলাপ করছে অন্তর্বর্তী সরকার। জাতীয় সংসদ নির্বাচন সামনে রেখে শিক্ষার্থীদের রাজনৈতিক দল এনসিপি গঠনের বিষয়টি বিভিন্ন মহলে আলোচনার কেন্দ্রবিন্দুতে রয়েছে। রাজনীতিতে নবীন দলটি তারুণ্যকে কাজে লাগিয়ে আগামী নির্বাচনে বিভিন্ন শ্রেণি-পেশার ক্লিন ইমেজের গ্রহণযোগ্য ব্যক্তিদের মনোনয়ন দেওয়ার বিষয়েও নিজেদের মধ্যে আলোচনা করছেন নেতারা।
এ দেশের তরুণদের অভিজ্ঞতা হলো-তারা দেখেছে, অতীতে রাজনৈতিক দলগুলো ব্যক্তি ও গোষ্ঠীস্বার্থে তরুণদের ব্যবহার করেছে, কিন্তু তাদের আশা-আকাঙ্ক্ষা পূরণে যেসব প্রতিশ্রুতি দিয়েছিল, তা বাস্তবায়নে আন্তরিকতার পরিচয় দেয়নি। দেশে বেকার সমস্যা দিন দিন প্রকট হচ্ছে। শিক্ষিত তরুণরা কাঙ্ক্ষিত চাকরি পাচ্ছে না। তাই রাজনৈতিক দলগুলো কর্মসংস্থানের সুযোগ সৃষ্টি করতে কী পদক্ষেপ নেবে, সেদিকেও দৃষ্টি রয়েছে তরুণ সমাজের। আশা করা যায়, এবার নবীন ভোটাররা সঠিক পক্ষকে বেছে নিতে সক্ষম হবে।
বিশ্লেষকদের মতে, অতীতে যেসব নির্বাচন প্রতিদ্বন্দ্বিতামূলক হয়েছিল, সেগুলোতে সর্বোচ্চ ১০ শতাংশ ভোটের ব্যবধানে জয়-পরাজয় নির্ধারিত হয়েছিল। এবার নির্বাচনে যে রাজনৈতিক দল বা জোট তরুণদের ভোট বেশি টানতে পারবে, নির্বাচনে তারাই ভালো ফল পাবে। ৫ আগস্টের গণ-অভ্যুত্থানের প্রেক্ষাপটে এবার নতুন এক পরিবেশে জাতীয় সংসদ নির্বাচন হতে যাচ্ছে। দেশবাসী আশা করছে, আগামীতে জাতীয় ও স্থানীয় সব নির্বাচন উৎসবমুখর পরিবেশে অনুষ্ঠিত হবে। এ জন্য নির্বাচন কমিশনসহ সংশ্লিষ্ট সব পক্ষকে দায়িত্বশীলতার পরিচয় দিতে হবে।