
প্রিন্ট: ১৫ এপ্রিল ২০২৫, ০৩:৫৮ এএম
উগ্রবাদের সংকট, অপশক্তিকে প্রতিরোধ করা প্রয়োজন

সম্পাদকীয়
প্রকাশ: ২১ মার্চ ২০২৫, ১২:০০ এএম
প্রিন্ট সংস্করণ

বিএনপির ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যান তারেক রহমান বুধবার রাজধানীর ইস্কাটনের লেডিস ক্লাবে রাজনৈতিক দলের নেতাদের সম্মানে বিএনপির ইফতার মাহফিলে ভার্চুয়ালি প্রধান অতিথির বক্তব্যে অন্তর্বর্তীকালীন সরকারের উদ্দেশে বলেছেন, ধর্মীয় উগ্রবাদীদের অপতৎপরতা ও চরমপন্থা নিয়ন্ত্রণে ব্যর্থতার পরিচয় দিলে উগ্রবাদী জনগোষ্ঠী এবং পরাজিত অপশক্তি দেশে পুনরায় গণতন্ত্রের কবর রচনা করবে। অপরদিকে গণতান্ত্রিক বিশ্বে ইমেজ সংকটে পড়তে পারে বাংলাদেশ। দেশের অসাম্প্রদায়িক গণতান্ত্রিক চরিত্র সমুন্নত রাখতে চরমপন্থা এবং ধর্মীয় উগ্রবাদী অপশক্তিকে প্রতিহত করার কথাও স্মরণ করিয়ে দিয়েছেন তিনি। বলেছেন, এর পাশাপাশি গণহত্যাকারী পলাতক মাফিয়াচক্রকে যে কোনো মূল্যে বিচারের সম্মুখীন করার মাধ্যমে দেশে শক্তিশালী করতে হবে গণতান্ত্রিক বিধিব্যবস্থা। তিনি জানিয়ে দেন, বিএনপিসহ গণতন্ত্রের পক্ষের শক্তির আগামী দিনের এটাই রাজনৈতিক বন্দোবস্ত।
সাম্প্রতিক সময়ে বিগত সরকারের ষড়যন্ত্র এবং প্রতিবেশী এক দেশের ভুল বার্তার মাধ্যমে দেশে-বিদেশে বাংলাদেশের ভাবমূর্তি ক্ষুণ্ন করার যে অপচেষ্টা লক্ষ করা যাচ্ছে, তা হালকাভাবে দেখার সুযোগ নেই। সেই দৃষ্টিকোণ থেকে বিএনপির ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যান যা বলেছেন, তা সবার অনুধাবন করা প্রয়োজন। দেশের জন্য ক্ষতিকারক অপশক্তিগুলো যে দেশের কল্যাণ চায় না, তা বলাই বাহুল্য। মতাদর্শগত কারণে রাজনৈতিক দলগুলোর মধ্যে চিন্তাভাবনার পার্থক্য থাকাটাই স্বাভাবিক; তবে দেশের সামাজিক ও সাংস্কৃতিক মূল্যবোধকে আঘাত করার মতো অপতৎপরতা প্রতিরোধে সবাইকে এক হতে হবে। আবহমানকালের ধর্মীয়, সামাজিক, সাংস্কৃতিক মূল্যবোধের যে অনন্য প্রতিফলন এ দেশে ঘটেছে, তা কারও ষড়যন্ত্রের কারণে যেন নস্যাৎ হতে না পারে, সে বিষয়ে সব পক্ষকে সতর্ক থাকতে হবে। পরিতাপের বিষয়, বিগত সরকার গত দেড় দশকে ফ্যাসিবাদী শাসন-শোষণ দ্বারা দেশের শিক্ষাব্যবস্থা, রাজনীতি, অর্থনীতি-এ সবকিছুকেই নষ্ট করে দিয়েছে বলা যায়।
গণতান্ত্রিক ব্যবস্থায় রাজনীতির প্রধান লক্ষ্যই থাকে জনস্বার্থ, দেশ ও মানুষের জন্য ভালো কিছু করার আকাঙ্ক্ষা। রাজনৈতিক প্রতিযোগিতা থাকলেও সমাজের কল্যাণ, জনপ্রত্যাশা ও দেশের স্বার্থে যৌক্তিক অবস্থানে সবাইকে এক থাকতে হবে। এটাই গণতন্ত্রের সৌন্দর্য। জুলাই বিপ্লবের পর বিজয় এসেছে ঠিকই, তবে যে পথ আমরা অতিক্রম করছি, তা সাবলীল নয়। ফ্যাসিস্ট ও উগ্রবাদীরা যেন কোনো ষড়যন্ত্র দ্বারা আমাদের লক্ষ্য থেকে বিচ্যুত করতে না পারে, সে জন্য দেশপ্রেমী সব পক্ষ সদাসতর্ক থাকবে, এটাই প্রত্যাশা।