Logo
Logo
×

সম্পাদকীয়

তেল নিয়ে তেলেসমাতি

অসাধুদের বিরুদ্ধে উপযুক্ত পদক্ষেপ নিন

Icon

সম্পাদকীয়

প্রকাশ: ০৮ মার্চ ২০২৫, ১২:০০ এএম

প্রিন্ট সংস্করণ

তেল নিয়ে তেলেসমাতি

রমজানে এবারও বাজারে সয়াবিন তেল নিয়ে তেলেসমাতি কাণ্ড দেখতে হচ্ছে দেশবাসীকে। বাজারে তেলের দেখা না মেলায় ভোক্তাদের প্রশ্ন ছিল, পর্যাপ্ত পরিমাণে ভোজ্যতেল আমদানি করা হলেও বাজারে কেন এর প্রভাব নেই। উত্তরে যে তথ্য মিলেছে, তা উদ্বেগজনক। শুক্রবার যুগান্তরের খবরে প্রকাশ-সিন্ডিকেট-চক্র রোজার আগে সরকারিভাবে একদফা দাম বাড়িয়ে ভোক্তার পকেট সাবাড় করলেও বাজারে সয়াবিন তেলের সরবরাহ স্বাভাবিক করেনি। বরং এ মাফিয়াচক্র লিটারে ফের ১৫ টাকা দাম বাড়ানোর উদ্দেশ্যে কৃত্রিম সংকট জিইয়ে রাখতে আমদানি করা ভোজ্যতেল বন্দরে খালাস করছে না। আমদানি করা এসব তেল ‘মাদার ভেসেল’ থেকে ‘লাইটার জাহাজে’ আনলোড করে অবৈধভাবে গভীর সমুদ্রে ভাসিয়ে রেখেছে। তাদের লক্ষ্য, সরকারিভাবে নতুন দাম ঘোষণা করা হলেই এই তেল বন্দরে খালাস করে বাজারে ছাড়া হবে।

নাম প্রকাশ না করার শর্তে দুজন ব্যবসায়ী জানিয়েছেন, তেলের বাজার নিয়ন্ত্রকারী প্রভাবশালী মহল এবার রোজায় সরকারিভাবে তাদের চাহিদামতো খুচরা মূল্য নির্ধারণ করতে পারেনি। তারা প্রথমে চেয়েছিল লিটারে ২০ টাকা বাড়াতে। কিন্তু সরকার ৮ টাকা বাড়িয়ে প্রতি লিটারের দাম নির্ধারণ করে দেয় ১৭৫ টাকা। এতে তারা ভেতরে ভেতরে ক্ষুব্ধ হয়ে আবারও লিটারে ১৫ টাকা বাড়াতে বাণিজ্য মন্ত্রণালয়ে আবেদন করেছে। মূলত তাদের চাহিদা অনুযায়ী দাম না বাড়ালে তারা বাজারে সরবরাহ লাইন স্বাভাবিক করবে না।

বাজারে কৃত্রিম সংকট তৈরির জন্য যেভাবে বিপুল পরিমাণ তেল সাগরে মজুত করা হয়েছে, তা যতটা না অভিনব, তার চেয়ে বেশি উদ্বেগের। সিন্ডিকেট কী পরিমাণ বেপরোয়া হলে এমন কূট-কৌশলের আশ্রয় নিতে পারে, তা বলার অপেক্ষা রাখে না। উল্লেখ্য, দীর্ঘদিন ধরেই দেশে ৬ থেকে ৭টি কোম্পানি তেলের বাজার ঘিরে কারসাজি করে আসছে, যা ওপেন সিক্রেট। পরিতাপের বিষয়, এদের বিরুদ্ধে কোনো ব্যবস্থা নিতে আজও আমরা দেখিনি। আমদানিকৃত এ বিপুল পরিমাণ তেল যে মাদার ভেসেল থেকে খালাস করে লাইটার জাহাজে মজুত রাখা হয়েছে, তা বন্দর প্রশাসনসহ সংশ্লিষ্টদের অজানা থাকার কথা নয়। সেক্ষেত্রে কেবল সিন্ডিকেটের বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নিলেই হবে না, পর্দার আড়ালে থাকা সহায়তাকারীদেরও খুঁজে বের করে আইনের আওতায় আনতে হবে। অন্যথায় বাজার কারসাজির গাছ উপড়ে ফেললেও শিকড় রয়েই যাবে।

Jamuna Electronics

Logo

সম্পাদক : আবদুল হাই শিকদার

প্রকাশক : সালমা ইসলাম