কিশোর গ্যাংয়ের দুঃসাহস
কঠোর হওয়ার কোনো বিকল্প নেই
![Icon](https://cdn.jugantor.com/uploads/settings/icon_2.jpg)
সম্পাদকীয়
প্রকাশ: ০৮ ফেব্রুয়ারি ২০২৫, ১২:০০ এএম
প্রিন্ট সংস্করণ
![কিশোর গ্যাংয়ের দুঃসাহস](https://cdn.jugantor.com/assets/news_photos/2025/02/08/image-797585-1713821752-67a66f9857868.jpg)
দেশের, বিশেষত রাজধানীর আইনশৃঙ্খলা পরিস্থিতি যে ভালো নয়, মোহাম্মদপুরের দিকে তাকালেই তা স্পষ্ট হয়। বেশকিছু দিন থেকে এ এলাকায় নানা ধরনের অপরাধ সংঘটিত হচ্ছে। ছিনতাই, রাহাজানি, ডাকাতি, এমনকি হত্যাকাণ্ডও ঘটছে এখানে। এরই ধারাবাহিকতায় কিশোর গ্যাংয়ের এক দুঃসাহসী অপকর্ম প্রত্যক্ষ করা গেছে। দেশীয় চাপাতি-সামুরাই নিয়ে কিশোর গ্যাংয়ের হামলায় পুলিশের তিন এসআই ও এক এএসআই গুরুতর আহত হয়েছেন বুধবার সন্ধ্যায়। রায়েরবাজার বোর্ড ঘাট এলাকায় এ হামলার সঙ্গে কিশোর গ্যাংয়ের ‘পাটালি গ্রুপ’ জড়িত ছিল বলে সংবাদ সূত্রে জানা গেছে, কিশোর গ্যাংয়ের এই গ্রুপটির মূল হোতা ফালানকে পুলিশ গ্রেফতার করার পর গ্রুপটির অন্য সদস্য ও মাদক ব্যবসায়ীরা মিলে তাকে ছিনিয়ে নেওয়ার চেষ্টা করে। এ চেষ্টা ব্যর্থ হওয়ার পর ক্ষুব্ধ হয়ে বুধবার সন্ধ্যায় পুলিশের অভিযানের সময় তাদের ওপর হামলা করা হয়। ৩০-৪০ জনের একটি গ্রুপ হামলায় অংশগ্রহণ করে। উল্লেখ করা যায়, রায়েরবাজার এলাকায় রমরমা মাদক ব্যবসা চলছে। এই ব্যবসায়ীদের বিরুদ্ধে এলাকার সচেতন নাগরিকরা রুখে দাঁড়াতে ভয় পাচ্ছেন। এমন অভিযোগও রয়েছে, একটি রাজনৈতিক দলের নেতারা এই মাদক ব্যবসায়ীদের পৃষ্ঠপোষকতা দিচ্ছেন।
গত বছরের ৫ আগস্টের পর থেকে আমরা লক্ষ করে আসছি, দেশের আইনশৃঙ্খলা পরিস্থিতির ক্রমাবনতি ঘটছে। ছাত্র-জনতার অভ্যুত্থানের পর পুলিশের মনোবল ভেঙে যাওয়ায় তাদের অধিকাংশই দায়িত্ব ঠিকমতো পালন করছিলেন না। পুলিশের হৃত মনোবল ফিরে আসতে শুরু করলেও রাজধানীর আইনশৃঙ্খলা পরিস্থিতির উন্নতি ঘটানো সম্ভব হচ্ছে না। পুলিশের নিষ্ক্রিয়তার সুযোগে অপরাধীরা তাদের অপরাধকর্ম চালিয়েছিল নির্বিঘ্নে, তাদের সেই চরিত্র পালটায়নি। বুধবারের ঘটনা আমাদের এই বার্তাই দিচ্ছে যে, অপরাধী, বিশেষত কিশোর গ্যাংগুলোর বিরুদ্ধে কঠোর অভিযান পরিচালনা না করলে তাদের দমানো যাবে না। স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের তাই উচিত হবে আইনশৃঙ্খলা বাহিনীকে মোহাম্মদপুরসহ রাজধানীর সব এলাকার দুর্বৃত্ত ও অপরাধীদের কঠোর হস্তে দমন করার নির্দেশ প্রদান করা। ঢাকাকে একটি শৃঙ্খলাবদ্ধ, নিরাপদ শহর হিসাবে গড়ে তুলতে হলে এর কোনো বিকল্প নেই। অপরাধ দমনে বিলম্ব ঘটলে পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণের বাইরে চলে যাওয়ার আশঙ্কা দেখা দেবে। তার আগেই রাজধানীকে অপরাধমুক্ত করতে হবে।