পাটকাঠির কালো ধোঁয়া
সব ধরনের দূষণ রোধে কঠোর হতে হবে

সম্পাদকীয়
প্রকাশ: ০৭ ফেব্রুয়ারি ২০২৫, ১২:০০ এএম
প্রিন্ট সংস্করণ

দেশের বিভিন্ন স্থানে পাটকাঠি পুড়িয়ে তৈরি করা হচ্ছে চারকোল ও ছাই। জানা যায়, সারা দেশে অবৈধভাবে গড়ে উঠেছে কয়েকশ চারকোল কারখানা। এসব কারখানা থেকে বের হওয়া কালো ধোঁয়ায় সংশ্লিষ্ট এলাকার জনজীবন চরম ক্ষতির মুখে পড়েছে। স্থানীয়রা আক্রান্ত হচ্ছে ক্যানসারসহ বিভিন্ন রোগে। বিষয়টি উদ্বেগজনক। বিগত আওয়ামী লীগ সরকারের আমলে নিয়মনীতির তোয়াক্কা না করে গড়ে ওঠা এসব অবৈধ কারখানা বন্ধে পরিবেশ, বন ও জলবায়ু উপদেষ্টা বরাবর সম্প্রতি অভিযোগ দিয়েছে কয়েকটি পরিবেশবাদী সংগঠন এবং বাংলাদেশ পার্টিকেল বোর্ড ম্যানুফ্যাকচার্স অ্যান্ড এক্সপোর্টার্স অ্যাসোসিয়েশন। বিশেষজ্ঞরা বলেছেন, চারকোল কারখানা থেকে যে ধোঁয়া নির্গত হয়, তাতে অতিরিক্ত কার্বন ডাই-অক্সাইড ছাড়াও নানা বিষাক্ত পদার্থ রয়েছে। এসব পদার্থ সব বয়সি মানুষের স্বাস্থ্যের জন্য ক্ষতিকর। চারকোল কারখানা থেকে নির্গত ধোঁয়ায় আশপাশের তাপমাত্রা বেড়ে যায়। ফলে পার্শ্ববর্তী মাঠে ফসল উৎপাদনে নেতিবাচক প্রভাব পড়তে পারে। পরিবেশ, বন ও জলবায়ু উপদেষ্টা বরাবর দেওয়া লিখিত অভিযোগে বলা হয়েছে, বিগত সরকারের সময় অবৈধ উপায়ে ক্ষমতার দাপট দেখিয়ে গণহারে চারকোল কারখানা প্রতিষ্ঠা করায় এখন নতুন সংকটের মুখে বহু মানুষের জীবন। এদিকে পাবনার বেড়া উপজেলায় গড়ে ওঠা চারকোল কারখানায় পাটকাঠি পুড়িয়ে উৎপাদন করা হচ্ছে কালি। কারখানার বিষাক্ত ধোঁয়া ও ছাইয়ে অতিষ্ঠ পার্শ্ববর্তী কয়েক গ্রামের বাসিন্দা। মানুষের স্বাস্থ্য সুরক্ষার স্বার্থে সারা দেশে অবৈধভাবে গড়ে ওঠা চারকোল কারখানার বিরুদ্ধে দ্রুত ব্যবস্থা নেওয়া প্রয়োজন।
বিশ্বের সবচেয়ে খারাপ বাতাসের দেশের তালিকায় শীর্ষ পর্যায়ে অবস্থান করছে বাংলাদেশ। দূষণ পরিস্থিতির উন্নয়নে কর্তৃপক্ষের জোরালো ভূমিকা দৃশ্যমান নয়। ফলে রাজধানী ঢাকার বায়ুদূষণ আগের রেকর্ড ছাড়িয়ে যাচ্ছে। বতর্মানে বর্জ্য পোড়ানোর ধোঁয়া এক বড় সমস্যা হিসাবে দেখা দিয়েছে। দেশে প্রতিদিন বিপুল পরিমাণ প্লাস্টিক বর্জ্য পোড়ানো হয়, যা ব্যাপকভাবে বায়ুদূষণ করছে। জানা যায়, দেশে যে প্লাস্টিক ব্যবহৃত হয়, তার অতি সামান্য অংশ পুনর্ব্যবহৃত হয়। বায়ুদূষণের কারণে সবচেয়ে বেশি ঝুঁকিতে রয়েছে বয়স্ক, শিশু ও জটিল রোগে আক্রান্ত মানুষ। তাই সব ধরনের দূষণ রোধে কর্তৃপক্ষকে কঠোর হতে হবে। তা না হলে মানুষ বিভিন্ন রোগে আক্রান্ত হবে, যা দেশের টেকসই উন্নয়নে বাধা সৃষ্টি করবে।