রপ্তানি খাতে নতুন সম্ভাবনা
সুযোগ কাজে লাগাতে যথাযথ পদক্ষেপ নিন
সম্পাদকীয়
প্রকাশ: ০৫ ফেব্রুয়ারি ২০২৫, ১২:০০ এএম
প্রিন্ট সংস্করণ
চলতি অর্থবছরে দেশের সার্বিক অর্থনীতি সংকটময় অবস্থায় রয়েছে। এমন সময় দেশের অর্থনীতির জন্য একটি সুসংবাদ পাওয়া গেল। কানাডা, মেক্সিকো ও চীনের পণ্যে ট্রাম্প প্রশাসন বাড়তি শুল্ক আরোপ করায় যুক্তরাষ্ট্রের বাজারে বাংলাদেশের পণ্য রপ্তানির নতুন সম্ভাবনার দ্বার উন্মোচিত হবে। ট্রাম্প প্রশাসনের এ সিদ্ধান্তের ফলে বাংলাদেশে বিদেশি বিনিয়োগ বৃদ্ধিরও সম্ভাবনা রয়েছে। তবে রপ্তানিমুখী শিল্পে সময়মতো উপযুক্ত নীতিসহায়তা প্রদান করা না হলে এ সম্ভাবনার পুরোটাই পার্শ্ববর্তী বিভিন্ন দেশের দখলে চলে যেতে পারে।
জানা যায়, ভারত সরকার ইতোমধ্যে রাজ্যভেদে বস্ত্র খাতে বড় অঙ্কের কর রেয়াত, নগদ সহায়তাসহ নীতিসহায়তার ঘোষণা দিয়েছে। শনিবার পৃথক তিন নির্বাহী আদেশের মাধ্যমে যুক্তরাষ্ট্রের প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্প প্রশাসন কানাডা ও মেক্সিকোর পণ্যের ওপর ২৫ শতাংশ এবং চীনের পণ্যের ওপর বর্তমান হারের অতিরিক্ত আরও ১০ শতাংশ শুল্ক আরোপ করেছে। এ আদেশ গতকাল থেকেই কার্যকর হওয়ার কথা। উল্লেখ্য, এতদিন বাণিজ্য চুক্তির আওতায় কানাডা ও মেক্সিকো যুক্তরাষ্ট্রে পণ্য রপ্তানিতে বিশেষ সুবিধা পেত।
বিশষজ্ঞদের মতে, ট্রাম্পের শুল্কযুদ্ধে বাংলাদেশের জন্য নতুন সুযোগ সৃষ্টি হবে। চীনের তৈরি পোশাকের ওপর শুল্ক বাড়ানোয় বিদেশি ক্রেতারা এবং চীনের পোশাক উৎপাদকরাও বাংলাদেশের দিকে ঝুঁকতে পারেন। এ ছাড়া চীনের পোশাক উৎপাদকরা বাংলাদেশে কারখানা স্থাপনে আগ্রহ প্রকাশ করতে পারেন। বস্তুত নতুন বিনিয়োগ পেতে বাংলাদেশকে সংস্কারের মাধ্যমে বিনিয়োগ পরিবেশ তৈরি করতে হবে। তৈরি পোশাক খাতের মতো অন্যান্য খাতেও যাতে সাফল্য অর্জিত হয়, সেজন্য পদক্ষেপ নিতে হবে।
বিভিন্ন কারণে চলতি অর্থবছরে দেশে কাঙ্ক্ষিত মাত্রায় বিনিয়োগ হয়নি। সম্প্রতি প্রকাশিত বিশ্বব্যাংকের এক প্রতিবেদনে বলা হয়েছে, বাংলাদেশে রাজনৈতিক অস্থিরতা অর্থনৈতিক কর্মকাণ্ডের গতি কমিয়েছে এবং বিনিয়োগকারীদের আস্থা কমেছে। বস্তুত গত কয়েক বছর ধরেই জ্বালানি সংকট, ডলার সংকটসহ বেশকিছু উপাদান শিল্প উৎপাদনে সরাসরি প্রভাব ফেলেছে। এসব সমস্যার সমাধানে কার্যকর পদক্ষেপ নেওয়ার পাশাপাশি দেশে বিনিয়োগবান্ধব পরিবেশ নিশ্চিত করা না হলে কাঙ্ক্ষিত মাত্রায় বিনিয়োগ হবে কি না সন্দেহ।
অর্থনীতিকে কাঙ্ক্ষিত মাত্রায় গতিশীল করতে দ্রুত সময়োপযোগী পদক্ষেপ নেওয়া দরকার। সরকারের এমন কোনো সিদ্ধান্ত নেওয়া ঠিক হবে না, যা ব্যবসা-বাণিজ্যকে সংকুচিত করে। রপ্তানি খাতের নতুন সম্ভাবনাকে কাজে লাগানোর পাশাপাশি এ খাতে বৈচিত্র্য আনার পদক্ষেপ নিতে হবে। একই সঙ্গে এ খাতে নতুন বাজার খুঁজতেও নিতে হবে কার্যকর পদক্ষেপ।