Logo
Logo
×

সম্পাদকীয়

আবারও বিচারবহির্ভূত হত্যা

সুষ্ঠু তদন্ত ও দায়ীদের শাস্তি কাম্য

Icon

সম্পাদকীয়

প্রকাশ: ০৩ ফেব্রুয়ারি ২০২৫, ১২:০০ এএম

প্রিন্ট সংস্করণ

আবারও বিচারবহির্ভূত হত্যা

যৌথ বাহিনীর হেফাজতে কুমিল্লায় যুবদল নেতা তৌহিদুল ইসলামের মৃত্যুর ঘটনা নিয়ে এলাকায় তোলপাড় চলছে। রোববার যুগান্তরের খবরে প্রকাশ, ঘটনার পর থেকে নগরীতে ক্ষোভ-বিক্ষোভে উত্তাল অবস্থা সৃষ্টি হয়েছে। পরিবারের সদস্যরা ছাড়াও এলাকাবাসী, বিএনপিসহ বিভিন্ন রাজনৈতিক দল, মানবাধিকার সংগঠন হেফাজতে থাকাবস্থায় যুবদল নেতার মৃত্যুর ঘটনায় তীব্র নিন্দা ও ক্ষোভ জানিয়েছে। চব্বিশের গণ-অভ্যুত্থানের পরও ফের বিচারবহির্ভূত হত্যাকাণ্ড নিয়ে বিস্ময় প্রকাশসহ তারা নানামুখী প্রশ্ন তুলছেন। তারা এ ঘটনায় জড়িতদের বিরুদ্ধে দৃষ্টান্তমূলক শাস্তির দাবি জানিয়েছেন। নিহতের স্ত্রীর কাছ থেকে জানা যায়, বৃহস্পতিবার রাতে তৌহিদুল ইসলাম চট্টগ্রাম থেকে বাড়ি আসার পর সেনাবাহিনীসহ সাদা পোশাকের কয়েকজন সেখানে অভিযান চালায়। এ সময় তার বিরুদ্ধে কী অভিযোগ রয়েছে, তা না জানিয়েই তাকে জোরপূর্বক ধরে নিয়ে যায়। রাতে তার সন্ধান না মিললেও পরদিন দুপুরে পুলিশের ফোন পেয়ে স্বজনরা কুমিল্লা সদর হাসপাতালে গিয়ে তার নিথর দেহ দেখতে পান। এ সময় নিহতের শরীরে অসংখ্য আঘাতের চিহ্ন ছিল।

এদিকে যুবদল নেতার মৃত্যুর ঘটনায় বিবৃতি দিয়েছে আইএসপিআর। এ ঘটনায় সেনাক্যাম্পের ক্যাম্প কমান্ডারকে তাৎক্ষণিকভাবে প্রত্যাহার করার সিদ্ধান্তের পাশাপাশি জড়িতদের বিচারের আওতায় আনার আশ্বাস দেওয়া হয়েছে। অপরদিকে তদন্তসাপেক্ষে জড়িতদের বিরুদ্ধে যথাযথ ব্যবস্থা নেওয়ার আশ্বাস দিয়ে এ হত্যাকাণ্ড নিয়ে অন্তর্বর্তী সরকারের পক্ষ থেকেও পৃথক বিবৃতি দেওয়া হয়েছে। যেখানে বলা হয়েছে, অধ্যাপক মুহাম্মদ ইউনূসের নেতৃত্বে অন্তর্বর্তী সরকার নিরাপত্তা বাহিনীর হেফাজতে যে কোনো ধরনের নির্যাতন ও হত্যার কঠোর নিন্দা জানায়। জাতীয় জীবনের প্রতিটি ক্ষেত্রে মানবাধিকারের সুরক্ষা নিশ্চিত করাই এ সরকারের অন্যতম প্রধান লক্ষ্য, যেখানে দেশের শীর্ষ মানবাধিকারকর্মীরা সরকারের উপদেষ্টা পরিষদে রয়েছেন। অন্যদিকে ঘটনার প্রতিক্রিয়ায় বিএনপি মহাসচিব বলেছেন, অন্তর্বর্তীকালীন সরকারের আমলে এ ধরনের বিচারবহির্ভূত হত্যা দুর্ভাগ্যজনক। এ নির্মমতা আওয়ামী ফ্যাসিবাদী আমলকেই মনে করিয়ে দেয়।

উল্লেখ্য, গেল ৪-৫ মাস আগেও আইন উপদেষ্টা বলেছিলেন, বিচারবহির্ভূত হত্যাকাণ্ড কোনোভাবেই মেনে নেওয়া হবে না। সরকার এ ধরনের অনাকাঙ্ক্ষিত ঘটনায় তাৎক্ষণিক ব্যবস্থা নেবে। আইনের মাধ্যমে তদন্তসাপেক্ষে উপযুক্ত শাস্তি নিশ্চিত করবে। কোনোভাবে পার পাওয়ার সুযোগ থাকবে না। বলতেই হচ্ছে, এ ঘটনায় সরকারের আর নির্লিপ্ত থাকার সুযোগ নেই। আইন লঙ্ঘনকারীদের বিরুদ্ধে কঠোর অবস্থান না নিলে জুলাই বিপ্লবের সাফল্য প্রশ্নের মুখে পড়বে বৈকি। ভুলে গেলে চলবে না, বিনা বিচারে কাউকে আটক বা বন্দি রাখা বা নির্যাতনের মাধ্যমে মেরে ফেলা সম্পূর্ণ বেআইনি। একইসঙ্গে তা দেশীয় ও আন্তর্জাতিক আইনসহ মানবতা ও মানবাধিকারের পরিপন্থি। অন্তর্বর্তী সরকার ক্ষমতা গ্রহণের পর এ বিষয়টিকে গুরুত্ব দিয়ে বেশ কিছু পদক্ষেপও গ্রহণ করেছে। এমনকি জাতিসংঘের গুম ও নির্যাতনবিরোধী আন্তর্জাতিক কনভেনশনেও স্বাক্ষর করেছে বাংলাদেশ। কাজেই গুম-খুনের বিরুদ্ধে এ সরকারের অবস্থান যে দৃঢ়, তা স্পষ্ট। এর প্রমাণ সরকারের কাজে মিলবে বলেই আমাদের প্রত্যাশা।

Jamuna Electronics
wholesaleclub

Logo

সম্পাদক : আবদুল হাই শিকদার

প্রকাশক : সালমা ইসলাম