ডিসি-এসপি দ্বন্দ্ব
জনস্বার্থে পারস্পরিক সুসম্পর্ক বজায় রাখা উচিত
![Icon](https://cdn.jugantor.com/uploads/settings/icon_2.jpg)
সম্পাদকীয়
প্রকাশ: ০২ ফেব্রুয়ারি ২০২৫, ১২:০০ এএম
প্রিন্ট সংস্করণ
![ডিসি-এসপি দ্বন্দ্ব](https://cdn.jugantor.com/assets/news_photos/2025/02/02/image-32713-1727791235-679e8d5b98881.jpg)
ছবি: সংগৃহীত
আগামী ১৬ ফেব্রুয়ারি অনুষ্ঠেয় জেলা প্রশাসক (ডিসি) সম্মেলন উপলক্ষ্যে তিন শতাধিক প্রস্তাব জমা দেওয়া হয়েছে মন্ত্রিপরিষদ বিভাগে। তিন দিনের ডিসি সম্মেলনে যেসব প্রস্তাব দেওয়া হয়েছে, সেগুলোর মধ্যে কোনো কোনোটি জেলা প্রশাসক ও পুলিশ সুপারের ছায়াদ্বন্দ্ব উসকে দিতে পারে। কারণ পুলিশের এসিআর প্রসঙ্গে প্রস্তাব দিয়েছেন কয়েকজন ডিসি। অতীতে পুলিশ কর্মকর্তাদের নিয়ে ডিসিরা বার্ষিক প্রতিবেদন প্রদান করতেন, যা এক সময় অকার্যকর হয়ে যায়। বস্তুত মাঠ প্রশাসনে ডিসি ও পুলিশ সুপারের (এসপি) মধ্যে দ্বন্দ্বের বিষয়টি বহুল আলোচিত। ডিসি-এসপির ছায়াদ্বন্দ্বে কখনো কখনো জেলার সেবামূলক কার্যক্রমের স্বাভাবিক গতি কমে যায়। ডিসি ও এসপির ছায়াদ্বন্দ্ব জেলার সেবামূলক বিভিন্ন কর্মকাণ্ডে সরাসরি প্রভাব ফেলতে পারে। কাজেই ডিসি-এসপি পরস্পরকে সহযোগিতা করলেই ভালো ফলাফল মিলবে। যেমন এসপি জেলার বাইরে গেলে ডিসিকে তা জানিয়ে যাবেন এবং ডিসি কোনো থানা পরিদর্শনে গেলে এসপিকে তা অবহিত করবেন। এভাবে জনস্বার্থে ডিসি ও এসপির উচিত পারস্পরিক সুসম্পর্ক বজায় রাখা। বস্তুত জেলার সামগ্রিক দায়িত্ব রয়েছে ডিসির ওপর। জেলায় আইনশৃঙ্খলার অবনতি হলে বা কোনোভাবে জনস্বার্থ ক্ষুণ্ন হলে ডিসির পাশাপাশি এসপির সুনামও ক্ষুণ্ন হয়। মাঠ প্রশাসনের সব বিভাগের সমন্বয়ক হচ্ছেন জেলা প্রশাসক। কাজেই সংশ্লিষ্ট সবার উচিত তাকে সহযোগিতা করা।
অতীতে রাজনৈতিক সরকারের আমলে অনেক ডিসি জনসেবার পরিবর্তে রাজনীতিকদের বিশেষ সেবা নিয়েই ব্যস্ত সময় কাটাতেন। অতীতে ডিসি সম্মেলন সামনে রেখে সেসব ডিসির কাছ থেকে জনস্বার্থসংশ্লিষ্ট প্রস্তাব আসত কম। ডিসিরা যাতে প্রকৃত জনসেবক হয়ে উঠতে পারেন, সে ব্যাপারে নিজেদের আন্তরিকতা বাড়ানো উচিত। এ বিষয়ে সরকারের তরফ থেকেও ডিসিদের প্রয়োজনীয় দিকনির্দেশনা দেওয়া জরুরি। আগামীতে দেশে রাজনৈতিক সরকার গঠনের পর রাজনৈতিক বিবেচনায় ডিসি নিয়োগ সম্পূর্ণরূপে বন্ধ করতে হবে এবং ডিসিরা যাতে স্বাধীনভাবে তাদের দায়িত্ব পালন করতে পারেন, তেমন পদক্ষেপ নিতে হবে। বস্তুত ডিসি সম্মেলন ও তাদের প্রস্তাবকে সরকার গুরুত্বসহ দেখে থাকে। এ সম্মেলনে উত্থাপন করা প্রস্তাব বাস্তবায়নের হার কেন কম, তা খতিয়ে দেখতে হবে এবং সম্মেলনে উত্থাপন করা প্রস্তাব বাস্তবায়নের যেসব বাধা রয়েছে, তা দূর করার জন্য পদক্ষেপ নিতে হবে।