ছাব্বিশে চির নতুন যুগান্তর
আমাদের অবস্থান সত্য ও ন্যায়ের পক্ষে
সম্পাদকীয়
প্রকাশ: ০১ ফেব্রুয়ারি ২০২৫, ১২:০০ এএম
প্রিন্ট সংস্করণ
ফাইল ছবি
সত্য প্রকাশে আপসহীনতার প্রমাণ রেখে যুগান্তর আজ ২৫ পেরিয়ে ২৬তম বছরে পদার্পণ করল। এ আনন্দঘন মুহূর্তে আমরা শুভেচ্ছা জানাই যুগান্তরের অগণিত পাঠক, লেখক, বিজ্ঞাপনদাতা, এজেন্ট, হকার ও শুভানুধ্যায়ীকে। তাদের সমর্থন ও সহায়তা ছাড়া তীব্র প্রতিযোগিতাপূর্ণ সংবাদপত্র জগতে যুগান্তরের প্রতিষ্ঠা ও অগ্রগতি সম্ভব হতো না। এ আনন্দঘন মুহূর্তে আমরা গভীর শ্রদ্ধার সঙ্গে স্মরণ করছি যুগান্তরের স্বপ্নদ্রষ্টা ও যমুনা গ্রুপের প্রয়াত চেয়ারম্যান মুক্তিযোদ্ধা নুরুল ইসলামকে।
যুগান্তর দেশের শীর্ষস্থানীয় দৈনিক। প্রকাশের অল্পদিনের মধ্যেই এটি পাঠকের নজর কাড়তে সক্ষম হয়। ক্রমেই হয়ে ওঠে সব মহলে আলোচিত ও প্রশংসিত একটি দৈনিক। ‘সত্যের সন্ধানে নির্ভীক’ যুগান্তরের এ অগ্রযাত্রা অব্যাহত রয়েছে এখনো। এর প্রধান কারণ বস্তুনিষ্ঠ খবর এবং মতপ্রকাশে পত্রিকাটির বলিষ্ঠ ও সাহসী ভূমিকা। দীর্ঘ পথপরিক্রমায় এজন্য যুগান্তরকে কম মূল্য দিতে হয়নি। রাজনৈতিক ও সামাজিকভাবে প্রতিপত্তিশালী বিভিন্ন মহল থেকে বাধা এসেছে বারবার। সত্য প্রকাশ করায় ক্রুদ্ধ হয়ে যুগান্তর কর্তৃপক্ষের ওপরও আঘাত হেনেছে স্বার্থান্বেষী মহল। তবু সঠিক ভূমিকা পালন থেকে যুগান্তরকে বিরত করা যায়নি। অন্যায়ের কাছে মাথানত করিনি আমরা। গত ১৫ বছরের ফ্যাসিবাদী শাসনের সময়ও আমরা চাঞ্চল্যকর দুর্নীতির খবর ও নিবন্ধ ছেপে সত্যনিষ্ঠতার ধারাবাহিকতা বজায় রাখতে কুণ্ঠাবোধ করিনি। নতুন একটি বর্ষে পা রাখার সময় আমরা আবারও সেই অঙ্গীকার ব্যক্ত করছি।
একটি দৈনিক পত্রিকাকে প্রতিদিনই পাঠকের প্রত্যাশা পূরণে ভূমিকা রাখতে হয়; দিতে হয় পরীক্ষা। প্রকৃত সংবাদপত্রের দায়িত্ব পালন করে যুগান্তর আগামীতেও সে পরীক্ষায় উত্তীর্ণ হওয়ার প্রত্যয় রাখে। পত্রিকাটির সব বিভাগের কর্মীরা এ লক্ষ্যে উজ্জীবিত ও একাত্ম। যুগান্তর আপস না করে জনস্বার্থে সত্যনিষ্ঠ সাংবাদিকতা করে আসছে। দেশে গণতন্ত্র প্রতিষ্ঠা এবং একে সংহত ও গণমুখী করার ক্ষেত্রে গণমাধ্যমের যথাযথ ভূমিকার বিষয়েও যুগান্তর সজাগ। আমরা বিশ্বাস করি, প্রকৃত সংবাদপত্র কখনো জনআকাঙ্ক্ষার বিপরীতে অবস্থান নিতে পারে না। সরকার পরিবর্তন হতে পারে; কিন্তু জনগণ ও দেশ স্থায়ী। যুগান্তরের কাছে দেশের স্বার্থ সবসময়ই সবকিছুর ঊর্ধ্বে স্থান পেয়েছে। যুগান্তর নিরপেক্ষভাবে সমস্যার কথা তুলে ধরার পাশাপাশি দেশের সম্ভাবনার ওপরও জোর দিয়ে এসেছে। এটা করতে গিয়ে সময়ে সময়ে মহলবিশেষ দ্বারা আক্রান্ত হলেও পত্রিকাটি অর্জন করেছে জনগণের আস্থা। এটাই যুগান্তরের সবচেয়ে বড় কৃতিত্ব।
শুরু থেকেই খবর ও মন্তব্য প্রকাশের ক্ষেত্রে আমরা আঁকড়ে ধরেছি দলনিরপেক্ষতার নীতি। ঘটনার গভীরে গিয়ে সত্যানুসন্ধানের ক্ষমতা যুগান্তরকে করে তুলেছে বিশিষ্ট। ঘটনা, ইস্যু বা বিষয়ের ওপর সম্ভাব্য সব দৃষ্টিকোণ থেকে নিবন্ধ প্রকাশ আমাদের সবসময়ের নীতি। দায়িত্বশীল সাংবাদিকতার বিষয়ে যুগান্তর আন্তরিক। সরকার ও বিরোধী দলসহ সংশিষ্ট সব মহলের সমালোচনা করতে গিয়ে আমরা সবসময়ই দায়িত্বশীল। ভালোকে ভালো ও মন্দকে মন্দ বলতে দ্বিধান্বিত নই। এক কথায়, পজিটিভ জার্নালিজম বা ইতিবাচক সাংবাদিকতা বলতে যা বোঝায়, যুগান্তর তেমনই একটি দৈনিক পত্রিকা। জনগণ চায় সম্ভাব্য সব ধরনের উন্নয়ন। এ লক্ষ্য অর্জনে সংবাদপত্রকে সহায়ক শক্তি হিসাবে পাশে দেখতে চায় তারা। আমাদের মতো দেশে, যেখানে গণতান্ত্রিক প্রতিষ্ঠানগুলো বিকশিত নয়, সেখানে সংবাদপত্রের সাহসী ও দায়িত্বশীল ভূমিকার প্রয়োজন বেশি। এটা গভীরভাবে উপলব্ধি করেই পথ চলছি আমরা। পাঠকসহ সংশ্লিষ্ট সবাইকে আরও নিবিড়ভাবে সম্পৃক্ত করে বলিষ্ঠতার সঙ্গে এগিয়ে যাবে যুগান্তর-প্রতিষ্ঠাবার্ষিকীতে এটাই আমাদের অঙ্গীকার।