Logo
Logo
×

সম্পাদকীয়

নৌরুট নয় তবুও খনন প্রকল্প

প্রকল্প বাস্তবায়নে স্বচ্ছতা নিশ্চিত করতে হবে

Icon

সম্পাদকীয়

প্রকাশ: ২৭ জানুয়ারি ২০২৫, ১২:০০ এএম

প্রিন্ট সংস্করণ

নৌরুট নয় তবুও খনন প্রকল্প

বিগত আওয়ামী লীগ সরকারের আমলে অনেক অপ্রয়োজনীয় প্রকল্প বাস্তবায়নের অভিযোগ রয়েছে। তখন প্রকল্পের খরচ বেশি দেখিয়ে অর্থ লুটপাটের ঘটনাও ঘটেছে। বিগত সরকারের আমলে প্রকল্প বাস্তবায়নের নামে নানা ধরনের কারসাজির অভিযোগও রয়েছে।

আওয়ামী লীগ সরকারের আমলে বিগত ১৫ বছরে দেশে প্রকল্প বাস্তবায়নে অপচয়ের বিষয়টি বহুল আলোচিত। সরকার ঘোষিত কোনো নৌরুট নয়; যাত্রী ও পণ্যবাহী নৌযান চলাচল করে না বললেই চলে। কাছাকাছি উজানে নেই নদীবন্দর এবং স্থলবন্দর। চলে গ্রামীণ ছোটখাটো নৌযান। শুষ্ক মৌসুমেও পানির গভীরতা থাকে ৩.৫-৪ ফুট।

এমন নদী খননে বাস্তবায়ন করা হচ্ছে ৩৪২ কোটি ২৬ লাখ টাকার একটি প্রকল্প। কার্যপরিধি লঙ্ঘন করে এটি বাস্তবায়ন করছে বিআইডব্লিউটিএ। এত বিপুল অঙ্কের অর্থের প্রকল্প নেওয়ার আগে সমীক্ষার নিয়ম থাকলেও তা অনুসরণ করেনি সংস্থাটি। ঠিকাদার নিয়োগেও হয়েছে কারসাজি।

এসব কাজের সঙ্গে জড়িতরা কি অধরাই থাকবেন? আলোচিত প্রকল্পটি হচ্ছে-‘মিঠামইন উপজেলার ঘোড়াউতরা, বোলাই-শ্রীগাং নদীর অংশবিশেষ, ইটনা উপজেলার ধনু নদী ও নামাকুড়া নদী এবং অষ্টগ্রাম উপজেলার ধলেশ্বরী নদীর অংশবিশেষের নাব্য উন্নয়ন ও পুরুদ্ধার’। এ পর্যন্ত প্রকল্পে ব্যয় হয়েছে ১৮ কোটি টাকা।

প্রকল্পভুক্ত নদী কিশোরগঞ্জ-৪ আসনের অন্তর্ভুক্ত এলাকায় অবস্থিত। ওই আসনে বারবার সংসদ-সদস্য নির্বাচিত হয়েছেন মো. আবদুল হামিদ। তিনি রাষ্ট্রপতি থাকাবস্থায় ২০২২ সালে এ প্রকল্প অনুমোদন করে তৎকালীন আওয়ামী লীগ সরকার। এ ধরনের প্রকল্প ‘রাষ্ট্রীয় অর্থের অপচয়’ বলে মন্তব্য করেছেন নদীরক্ষা কমিশনের সাবেক চেয়ারম্যান ড. মনজুর আহমেদ চৌধুরী।

নথিপত্র পর্যালোচনা করে দেখা গেছে, অসত্য তথ্যের ভিত্তিতে এ প্রকল্প নেওয়া হয়। এ প্রকল্প নেওয়ার আগে বাস্তবে কোনো সমীক্ষা চালায়নি বিআইডব্লিউটিএ। গত ৫ আগস্ট দেশের পটপরিবর্তনের পর এ প্রকল্পের প্রয়োজনীয়তা রয়েছে কিনা তা খতিয়ে দেখতে একটি কমিটি গঠন করে নৌপরিবহণ মন্ত্রণালয়।

কমিটির সদস্যরা এ প্রকল্পের প্রয়োজনীয়তা নেই বলে জানিয়েছেন। গত বছরের সেপ্টেম্বরে একনেক বৈঠক শেষে ব্রিফিংয়ে পরিকল্পনা ও শিক্ষা উপদেষ্টা ড. ওয়াহিদ উদ্দিন মাহমুদ বলেছেন, বিগত সরকারের নেওয়া অপ্রয়োজনীয় রাজনৈতিক প্রকল্প যাচাই-বাছাই করে বাদ দেওয়া হবে। বড় প্রকল্পগুলোয় সময় কেন বাড়ানো হলো এবং আন্তর্জাতিক মানদণ্ডের অতিরিক্ত অর্থ ব্যয় হলো, সেগুলো যাচাই করা হবে।

আমরাও মনে করি, দেশে চলমান সব সরকারি প্রকল্পের খুঁটিনাটি আবার যাচাই করা দরকার। প্রকল্পগুলো নিরীক্ষা করে দুর্নীতি ও অনিয়মের তথ্য পাওয়া গেলে জড়িতদের বিরুদ্ধে দ্রুত যথাযথ ব্যবস্থা নিতে হবে। প্রকল্প বাস্তবায়নে ভবিষ্যতে কেউ যাতে দুর্নীতি ও অনিয়মের সুযোগ না পায় তাও নিশ্চিত করতে হবে।

Jamuna Electronics

Logo

সম্পাদক : আবদুল হাই শিকদার

প্রকাশক : সালমা ইসলাম