জুলাই গণ-অভ্যুত্থান স্মৃতি জাদুঘর
কচ্ছপগতি কাম্য নয়
সম্পাদকীয়
প্রকাশ: ২৪ জানুয়ারি ২০২৫, ১২:০০ এএম
প্রিন্ট সংস্করণ
অতীতে লক্ষ করা গেছে, সরকারের নানা উদ্যোগ সত্ত্বেও নির্ধারিত সময়ে বিভিন্ন প্রকল্পের কাজ শেষ করা সম্ভব হয়নি। অর্থাৎ সরকারি প্রকল্প বাস্তবায়নে ধীরগতির বিষয়টি বহুল আলোচিত। লক্ষ করা যাচ্ছে, কচ্ছপের পিঠে স্বপ্নের যাত্রা শুরু করেছে জুলাই গণ-অভ্যুত্থান স্মৃতি জাদুঘর প্রকল্পের কাজ।
গণভবনকে জাদুঘর রূপান্তরের সিদ্ধান্ত বাস্তবায়নে মন্থরগতির বিষয়টি দুঃখজনক। জানা যায়, গত চার মাসে গণপূর্ত মন্ত্রণালয় থেকে গণভবনের বরাদ্দপত্র বুঝে পেয়েছে সংস্কৃতি মন্ত্রণালয়। গণ-অভ্যুত্থান স্মৃতি জাদুঘর জাতীয় জাদুঘরের বিশেষ সেল হবে, নাকি স্বতন্ত্র জাদুঘর হবে-সে বিষয়ে এখনো কোনো সিদ্ধান্ত হয়নি।
জুলাই গণ-অভ্যুত্থান স্মৃতি জাদুঘর নির্মাণের ঘোষণার চার মাস অতিবাহিত হলেও প্রকল্প বাস্তবায়নে জোরালো তৎপরতা লক্ষ করা যাচ্ছে না। সরকারের উপদেষ্টাদের এ বিষয়ক কিছু বক্তব্য-বিবৃতি দৃষ্টিগোচর হলেও ঢিমেতালেই চলছে সিদ্ধান্ত বাস্তবায়ন। ইতোমধ্যে চার মাসেরও বেশি সময় পার হলেও নীতিনির্ধারণী পর্যায়ের কাজও শেষ হয়নি। জাদুঘরের নকশা তৈরি, প্রকল্প গ্রহণ এবং প্রকল্প অনুমোদন-এসব প্রক্রিয়ার পরই বাস্তবায়ন কাজ শুরু করতে হবে। বর্তমান সরকারের মেয়াদে কাজটি শুরু না হলে জুলাই গণ-অভ্যুত্থান স্মৃতি জাদুঘর তৈরির স্বপ্ন অধরাই থাকতে পারে।
গত বছরের ৫ সেপ্টেম্বর উপদেষ্টা পরিষদের বৈঠকে গণভবনকে ‘জুলাই গণ-অভ্যুত্থান স্মৃতি জাদুঘর’ করার সিদ্ধান্ত নেয় অন্তর্বর্তী সরকার। জুলাই গণ-অভ্যুত্থান স্মৃতি জাদুঘরে গত ১৬ বছরে বাংলাদেশে যে নিপীড়নের স্মৃতিচিহ্ন রয়েছে, সেগুলো সংরক্ষণের কথা রয়েছে। পাশাপাশি এ জাদুঘরে ছাত্র-জনতার বিজয়ের স্মৃতিচিহ্নও সংরক্ষণের কথা রয়েছে। স্মৃতিচিহ্ন সংরক্ষণের পাশাপাশি গবেষণার ক্ষেত্র হিসাবেও এ জাদুঘর গড়ে তোলা হবে। আমরাও মনে করি, জুলাই গণ-অভ্যুত্থান স্মৃতি নিয়ে বিস্তারিত গবেষণা হওয়া দরকার।
আমরা এটাও মনে করি, এ বিষয়ক গবেষণায় এ জাদুঘর গুরুত্বপূর্ণ অবদান রাখবে। হাজারও শহিদ, পঙ্গু ও ক্ষতিগ্রস্তদের স্মৃতি ধরে রাখতে যে উদ্যোগ, এ প্রকল্প বাস্তবায়নে অতীতের মতো ধীরগতি কাম্য নয়। এ বিষয়ে ঊর্ধ্বতন কর্তৃপক্ষ দৃষ্টি দেবে, এটাই প্রত্যাশা। দুঃখজনক হলো, অন্তর্বর্তী সরকার শুরু থেকে গণ-অভ্যুত্থানে নিহত পরিবারগুলোকে যথাযথ ক্ষতিপূরণ ও আহতদের সুচিকিৎসা করানোর প্রতিশ্রুতি দিয়েও সে কাজে পুরোপুরি সফল হতে পারেনি।
বর্তমান সরকারের দায়িত্ব গ্রহণের এত সময় পরেও নিহত-আহতদের সব পরিবার যথাযথ ক্ষতিপূরণ না পাওয়ায় এ নিয়ে নানা প্রশ্ন উঠেছে। সরকারের সব প্রকল্প কাঙ্ক্ষিত মাত্রায় গতিশীল থাকবে, এটাই প্রত্যাশা।