চট্টগ্রামের জলাবদ্ধতা নিয়ন্ত্রণ প্রকল্প
সুফল প্রাপ্তি নিশ্চিত করতে হবে
সম্পাদকীয়
প্রকাশ: ২০ জানুয়ারি ২০২৫, ১২:০০ এএম
প্রিন্ট সংস্করণ
চট্টগ্রাম মহানগরীর বন্যা নিয়ন্ত্রণ প্রকল্প বাস্তবায়নে পদে পদে অনিয়মের অভিযোগ উঠেছে। নিয়মবহির্ভূতভাবে মেয়াদ শেষ হওয়ার ৬ মাস পর সংশোধন প্রস্তাব দেওয়া হয়। ৫৫ কোটি টাকা সাশ্রয়ের কথা বলা হলেও চতুরতার আশ্রয় নিয়ে এ বিষয়ক উন্নয়ন পরিকল্পনায় ব্যাপক পরিবর্তন আনার কথা বলা হচ্ছে। কাজেই বিষয়টি খতিয়ে দেখা দরকার। প্রকল্পের গুরুত্বপূর্ণ কাজ ফ্ল্যাড ও রিটেইনিং ওয়াল নির্মাণ। এ দুটি কাজ ঘিরে নানা প্রশ্ন উঠেছে। বেশির ভাগ কাজ শেষ না করেই কিলোমিটারপ্রতি ফ্ল্যাডওয়াল নির্মাণ ব্যয় বাড়ানোর প্রস্তাব করা হয়েছে। অথচ ৫ বছরে ৫ ভাগ কাজও শেষ হয়নি। অন্যদিকে রিটেইনিং ওয়ালের কাজ প্রায় শেষ হলেও এখন অতিরিক্ত প্রায় ২৭৯ কোটি টাকা বাড়ানোর কথা বলা হচ্ছে। চট্টগ্রামের এমন গুরুত্বপূর্ণ প্রকল্প ঘিরে অনিয়মের অভিযোগ উঠেছে। প্রকল্পের এসব চিত্র বেরিয়ে আসে ১৮ ডিসেম্বর অনুষ্ঠিত ‘চট্টগ্রাম মহানগরীর বন্যা নিয়ন্ত্রণ, জলমগ্নতা বা জলাবদ্ধতা নিরসন ও নিষ্কাশন উন্নয়ন’ প্রকল্পের প্রকল্প মূল্যায়ন কমিটির (পিইসি) সভায়। সভা থেকে বিভিন্ন প্রশ্নের ব্যাখ্যাসহ সংশোধিত প্রকল্প প্রস্তাব নতুন করে পাঠাতে বলা হয়েছে। বিশেষজ্ঞদের মতে, চট্টগ্রামের জন্য সবচেয়ে গুরুত্বপূর্ণ এ প্রকল্পে এমন নিয়মের ব্যত্যয় কাম্য নয়। একটু বৃষ্টি হলেই চট্টগ্রাম শহর ডুবে যায়। ড্রেনে পড়ে মানুষের মৃত্যুর ঘটনাও ঘটেছে। এ নগরীর জলাবদ্ধতা নিরসনে বছরের পর বছর কাজ চলছে, অথচ নগরবাসীর দুর্ভোগের অবসান হচ্ছে না।
চট্টগ্রাম নগরীর জলাবদ্ধতা নিরসন কার্যক্রম পরিদর্শন করেছেন অন্তর্বর্তী সরকারের তিন উপদেষ্টা। শনিবার দুপুরে নগরীর খাল খনন কার্যক্রম পরিদর্শন করেন উপদেষ্টা মুহাম্মদ ফাওজুল কবির খান, উপদেষ্টা সৈয়দা রিজওয়ানা হাসান ও উপদেষ্টা ফারুক-ই-আজম। পরিদর্শন শেষে বিদ্যুৎ, জ্বালানি ও খনিজসম্পদ উপদেষ্টা এ সম্পর্কে বলেছেন, এখানে সিটি করপোরেশন, সিডিএ শুধু নয়, ওয়াসা আছে, পোর্ট আছে, পানি উন্নয়ন বোর্ড-সংশ্লিষ্ট সবাইকে নিয়ে বসা হবে। এটা এককভাবে কেউ সমাধান করতে পারবে না। এ বিষয়ে পরিবেশ, বন ও জলবায়ু পরিবর্তনবিষয়ক উপদেষ্টা সৈয়দা রিজওয়ানা হাসান বলেছেন, প্রকল্পগুলো বাস্তবায়নে সংস্থাগুলোর সমন্বয়ের ক্ষেত্রে বড় সমস্যা আছে। আমরাও মনে করি, এ বিষয়ক প্রকল্পগুলো বাস্তবায়নে সংস্থাগুলোর সমন্বয়ে যাতে কোনো সমস্যা সৃষ্টি না হয়, তা নিশ্চিত করতে হবে। প্রকল্প বাস্তবায়নে যাতে কোনো রকম অনিয়ম না হয়, তাও নিশ্চিত করতে হবে। চট্টগ্রামে পাহাড় কাটা বন্ধ না হলে জলাবদ্ধতা নিরসনবিষয়ক কোনো প্রকল্প থেকেই কাঙ্ক্ষিত সুফল মিলবে না। পলিথিনের কারণে ড্রেন, খাল সব ভরাট হয়ে যায়। কর্তৃপক্ষকে এসব দিকেও দৃষ্টি দিতে হবে।