বেসরকারি হাসপাতালের লাগামহীন চিকিৎসা ব্যয়ের কারণে দেশের দরিদ্র ও স্বল্প আয়ের মানুষ জটিল রোগে আক্রান্ত হলে সাধারণত সরকারি হাসপাতালের সেবা নিতেই বেশি আগ্রহী হয়। এ ক্ষেত্রে ক্যানসারে আক্রান্ত রোগীরা সাধারণত জাতীয় ক্যানসার গবেষণা ইনস্টিটিউট ও হাসপাতালের শরণাপন্ন হয়ে থাকে। অন্য অনেক সরকারি হাসপাতালের মতো এ প্রতিষ্ঠানে চিকিৎসাসেবা নিতে গিয়ে রোগীদের দুর্ভোগের শিকার হওয়ার বিষয়টি বহুল আলোচিত।

জানা যায়, শয্যা সংকটের কারণে এ হাসপাতালে চিকিৎসাসেবা নিতে গিয়ে রোগীদের অবর্ণনীয় দুর্ভোগের শিকার হতে হয়; কেমোথেরাপি নিতে আসা রোগীদের বিড়ম্বনার শিকার হতে হয়। হাসপাতালটিতে রেডিওথেরাপি দেওয়ার ছয়টি মেশিনের সবকটিই অকেজো পড়ে আছে। এ কারণে থেরাপি নিতে আসা রোগীদের কতটা দুর্ভোগের শিকার হতে হয়, তা সহজেই অনুমেয়।

হাসপাতালটির পরিচালক বলেছেন, ৫০০ শয্যার হাসপাতালটিতে প্রতিদিন গড়ে ২ হাজার রোগী চিকিৎসা নেন। কাজেই রোগীর চাপ কমাতে জেলা-উপজেলা পর্যায়ে যাতে ক্যানসারে আক্রান্ত রোগী সুলভে আধুনিক সেবা পান তা নিশ্চিত করা দরকার। সারা দেশের সব সরকারি হাসপাতালের সরঞ্জাম সংকট জরুরি ভিত্তিতে দূর করার উদ্যোগ নেওয়া হবে, এটাই কাম্য।

দেশে ক্যানসার চিকিৎসায় বিশেষজ্ঞ চিকিৎসক সংকট প্রকট আকার ধারণ করেছে। কাজেই এ বিষয়ক বিশেষজ্ঞ চিকিৎসক তৈরি করতে দ্রুত পদক্ষেপ নিতে হবে। বিশেষজ্ঞরা বলছেন, প্রাথমিক পর্যায়ে শনাক্ত করা গেলে ক্যানসারে আক্রান্ত প্রায় ৫০ শতাংশ রোগীকে সুস্থ করে তোলা সম্ভব। কাজেই প্রাথমিক পর্যায়েই যাতে ক্যানসার শনাক্ত করা যায়, সেজন্য কার্যকর উদ্যোগ নেওয়া দরকার। দেশে সব ধরনের জটিল রোগের চিকিৎসা যাতে সুলভে পাওয়া যায়, এটিও নিশ্চিত করা দরকার।

যেসব কারণে ক্যানসার ও অন্যান্য জটিল রোগে আক্রান্ত হওয়ার আশঙ্কা বাড়ে, সে বিষয়ে জনগণকে সচেতন করে তোলার পদক্ষেপ নিতে হবে। সরকারি হাসপাতালে আসা ক্যানসার রোগীদের সেবা পাওয়ার জন্য দীর্ঘ সময় অপেক্ষা করতে হয়। এতে কোনো কোনো রোগীর অবস্থা এমন পর্যায়ে চলে যায় যে, ওই অবস্থা থেকে তাকে সুস্থ করে তোলা কঠিন হয়ে পড়ে। কাজেই সরকারি হাসপাতালগুলোর এ সীমাবদ্ধতা দূর করার জন্য দ্রুত পদক্ষেপ নিতে হবে। বস্তুত যে কোনো রোগে আক্রান্ত ব্যক্তিকে সরকারি হাসপাতালে গিয়ে যাতে দুর্ভোগের শিকার হতে না হয়, তা নিশ্চিত করা দরকার।