Logo
Logo
×

সম্পাদকীয়

পাঠ্যবই প্রকাশে জটিলতা, শিক্ষাক্ষেত্রে গতি ফেরাতে হবে

Icon

সম্পাদকীয়

প্রকাশ: ০২ জানুয়ারি ২০২৫, ১২:০০ এএম

প্রিন্ট সংস্করণ

পাঠ্যবই প্রকাশে জটিলতা, শিক্ষাক্ষেত্রে গতি ফেরাতে হবে

ফাইল ছবি

গতকাল সারা দেশের বিদ্যালয়গুলোতে নতুন বই বিতরণ শুরু হলেও প্রথম দিনে সব শিক্ষার্থী সব বই হাতে পায়নি। গত কয়েক বছর ধরে লক্ষ করা যাচ্ছে, প্রাথমিক ও মাধ্যমিক স্তরের শিক্ষার্থীদের বিনামূল্যের পাঠ্যবই নিয়ে নানা জটিলতা সৃষ্টি হয়। এ বছর জটিলতা আরও বেড়েছে। নতুন বই সব শিক্ষার্থীর হাতে দিতে না পারায় পাঠ্যবইয়ের অনলাইন ভার্সন প্রকাশের উদ্যোগ নিয়েছে সরকার। এ কার্যক্রম বুধবার রাজধানীর আন্তর্জাতিক মাতৃভাষা ইনস্টিটিউটে উদ্বোধন করেন শিক্ষা উপদেষ্টা ওয়াহিদউদ্দিন মাহমুদ। হতদরিদ্র পরিবারের শিক্ষার্থীরা যে অনলাইন ভার্সনের সুবিধা নিতে পারবে না, তা বলাই বাহুল্য। কাজেই যত দ্রুত সম্ভব প্রাথমিক ও মাধ্যমিক স্তরের সব শিক্ষার্থীর হাতে বিনামূল্যের পাঠ্যবই তুলে দেওয়ার উদ্যোগ নেওয়া হবে, এটাই প্রত্যাশা।

পাঠ্যবইয়ের অনলাইন ভার্সন উদ্বোধন অনুষ্ঠানে প্রধান অতিথির বক্তব্যে শিক্ষা উপদেষ্টা বলেছেন, যারা বই ছাপাতে প্রতিবন্ধকতা তৈরি করেছেন, তাদের তালিকা করা হচ্ছে। শিক্ষাসহ সব মন্ত্রণালয়ে শুদ্ধি অভিযান পরিচালনার পরিকল্পনা আছে জানিয়ে তিনি বলেছেন, বেশ কয়েক বছর ধরে মুদ্রণশিল্পের ব্যবসায়ীদের সঙ্গে জড়িত হয়ে যারা দুর্নীতিগ্রস্ত হয়ে পড়েছিল, তাদের অনেককে বদলি করা হয়েছে। তিনি আরও বলেছেন, শিক্ষা মন্ত্রণালয়ে আগের কর্মকর্তা-কর্মচারীরা যারা দুর্নীতিগ্রস্ত ছিল, তাদের বিরুদ্ধে অনুসন্ধানের জন্য দুদককে বলা হবে। আমরা মনে করি, প্রাথমিক ও মাধ্যমিক স্তরের শিক্ষার্থীদের বিনামূল্যের পাঠ্যবই তৈরির কাজে বিভিন্ন পর্যায়ে যত ধরনের দুর্নীতি হয়ে থাকে, সেসবের সঙ্গে জড়িত সবাইকে দ্রুত আইনের আওতায় আনা দরকার। শিক্ষা উপদেষ্টা বলেছেন, আগে নবম ও দশম শ্রেণিতে শুধু সাধারণ গণিত ও সাধারণ বিজ্ঞান পড়ানো হতো। এখন উচ্চতর গণিত ও উচ্চতর বিজ্ঞানও পড়ানো হবে। আমরা মনে করি, আগামী দিনের চ্যালেঞ্জ মোকাবিলায় শিক্ষা খাতে বিনিয়োগ বাড়ানো দরকার। মানসম্মত ও ত্রুটিমুক্ত বই সময়মতো শিক্ষার্থীদের হাতে তুলে দেওয়া সম্ভব না হলে তাদের দক্ষ জনশক্তিতে রূপান্তরের কাজে জটিলতা সৃষ্টি হবে। পরিবর্তিত বিশ্ব পরিস্থিতিতে বর্তমান ও আগামী প্রজন্মকে উপযুক্ত করে গড়ে তুলতে সময়মতো যথাযথ পদক্ষেপ নিতে হবে।

জানা যায়, নতুন শিক্ষাবর্ষে নতুন শিক্ষাক্রম বাদ দিয়ে পুরোনো শিক্ষাক্রমে ফিরছে প্রাথমিক ও মাধ্যমিক শিক্ষা। রাজনৈতিক পটপরিবর্তনের পর এবার পাঠ্যবইয়েও অনেক পরিবর্তন এসেছে। অনেক বিষয়বস্তু সংযোজন-বিয়োজন হয়েছে। বস্তুত মানসম্মত বই শিক্ষার্থীদের দক্ষ জনশক্তি হিসাবে গড়ে তুলতে সহায়ক হবে। একইসঙ্গে তারা যাতে উচ্চ নৈতিকতা ও উন্নত মূল্যবোধের চর্চায় আগ্রহী হয়, সে বিষয়ে তাদের উদ্বুদ্ধ করতে হবে। এসব বিষয়ে সমাজ যদি পিছিয়ে থাকে, তাহলে শিক্ষার্থীরা কতটা এগিয়ে যেতে পারবে, সে প্রশ্ন থেকেই যায়। ইতঃপূর্বে দেখা গেছে, প্রকাশিত পাঠ্যপুস্তকগুলোতে কোথাও একটি অধ্যায়ের অংশবিশেষ নেই, আবার কোথাও এক পৃষ্ঠার সঙ্গে পরবর্তী পৃষ্ঠার মিল নেই। ভুলে ভরা এমন পাঠ্যপুস্তক নিয়ে অতীতে শিক্ষার্থী, অভিভাবক ও শিক্ষকদের নানা বিড়ম্বনায় পড়তে হয়েছে। ভুলে ভরা পাঠ্যপুস্তক শিক্ষার্থীদের লক্ষ্যে পৌঁছার ক্ষেত্রে বড় বাধা হয়ে দাঁড়াতে পারে। কাজেই মানসম্মত ও ত্রুটিমুক্ত বই প্রকাশে কর্তৃপক্ষকে মনোযোগী হতে হবে। শিক্ষার্থীদের বিনামূল্যের পাঠ্যবই নিয়ে যাতে কোনো রকম দুর্নীতি না হয়, তাও নিশ্চিত করতে হবে।

Jamuna Electronics

Logo

সম্পাদক : আবদুল হাই শিকদার

প্রকাশক : সালমা ইসলাম