Logo
Logo
×

সম্পাদকীয়

আরেক আতঙ্ক নিপাহ

ডেঙ্গুর মতোই গুরুত্ব দাবি রাখে

Icon

সম্পাদকীয়

প্রকাশ: ২১ ডিসেম্বর ২০২৪, ১২:০০ এএম

প্রিন্ট সংস্করণ

আরেক আতঙ্ক নিপাহ

ফাইল ছবি

বৃহস্পতিবার রাজধানীর মহাখালীতে সরকারের ‘রোগতত্ত্ব, রোগ নিয়ন্ত্রণ ও গবেষণা ইনস্টিটিউট’ আয়োজিত ‘নিপাহ ভাইরাসের বিস্তার এবং ঝুঁকি’ বিষয়ক এক মতবিনিময় সভা অনুষ্ঠিত হয়। সেখানে জানানো হয়, দেশে চলতি বছরের জানুয়ারি থেকে ডিসেম্বর পর্যন্ত নিপাহ ভাইরাসে আক্রান্ত পাঁচজনের সবাই মারা গেছেন। অর্থাৎ মৃত্যুর হার শতভাগ। উল্লেখ্য, ২০২৩ সালে এ ভাইরাসে আক্রান্ত হয়েছিলেন ১৩ জন এবং মারা গিয়েছিলেন ১০ জন। সে বছর মৃত্যুর হার ছিল ৭৭ শতাংশ।

ফিরে তাকালে দেখা যায়, নিপাহ ভাইরাসের রোগী সর্বপ্রথম শনাক্ত হয়েছিল ১৯৯০ সালে মালয়েশিয়ায়। বাংলাদেশে এ রোগ প্রথম দেখা দেয় ২০০১ সালে। তখন থেকে এ পর্যন্ত মোট ৩৪৩ জন নিপাহ ভাইরাসে আক্রান্ত হয়েছেন। এ রোগের ক্ষেত্রে বাংলাদেশ দক্ষিণ এশিয়ার দেশগুলোর মধ্যে শীর্ষে অবস্থান করছে। অথচ এ রোগটি সম্পর্কে সাধারণ মানুষ খুব একটা জানে না। এ রোগের প্রধান বাহক বাদুড়। সাধারণত খেজুরের কাঁচা রস থেকে রোগটির ভাইরাস মানুষের মধ্যে বেশি সংক্রমিত হয়। শীতকালেই সাধারণত খেজুরের রস পান করা হয়, বিভিন্ন স্থানে উৎসব করেও। ফলে শীতকালই নিপাহ ভাইরাস রোগের ক্ষেত্রে সবচেয়ে আতঙ্কময় সময়। সমস্যা হচ্ছে, এ ভাইরাসের কোনো ওষুধ নেই, টিকাও নেই। উপসর্গ দেখেই চিকিৎসা দেওয়া হয়। তবে আশার কথা, যুক্তরাজ্যের অক্সফোর্ড বিশ্ববিদ্যালয়, থাইল্যান্ডসহ মোট চারটি দেশে টিকা তৈরির গবেষণা হচ্ছে। আগামী ২০২৭ থেকে ২০২৯ সালের মধ্যে এ টিকা বাজারে আসার সম্ভাবনা রয়েছে। তবে টিকা আবিষ্কার না হওয়া পর্যন্ত আমাদের তো নির্বিকার বসে থাকা চলে না। রোগটির লক্ষণ সম্পর্কে সবারই ধারণা থাকা দরকার। এ রোগের প্রাথমিক লক্ষণ হলো এনকেফেলাইটিস। আক্রান্ত ব্যক্তির শ্বাসকষ্ট দেখা দিতে পারে। শরীরের তাপমাত্রা বেড়ে যেতে পারে। রোগীর খিঁচুনিও হতে পারে। কোনো কোনো ক্ষেত্রে রোগী আবোল-তাবল বকতে পারেন, এমনকি অজ্ঞানও হয়ে যেতে পারেন। এ ধরনের পরিস্থিতি দেখা দিলে সংশ্লিষ্ট ব্যক্তিকে নিকটস্থ হাসপাতালে নিতে হবে অবশ্যই। রাজধানীর রোগীর ক্ষেত্রে আইসিডিডিআর’বি সবচেয়ে উপযুক্ত চিকিৎসালয়। এমনিতেই দেশে ডেঙ্গুর প্রাদুর্ভাব আশঙ্কাজনক। এর সঙ্গে নিপাহ ভাইরাসের সংক্রমণ বেড়ে গেলে স্বাস্থ্য খাতে বিপর্যয় নেমে আসবে। সুতরাং এ রোগটির ব্যাপারে আক্রান্ত ও তার পরিবার এবং চিকিৎসকদের সতর্ক অবস্থান নিতে হবে।

Jamuna Electronics

Logo

সম্পাদক : আবদুল হাই শিকদার

প্রকাশক : সালমা ইসলাম