দাবি আদায়ে রেলপথ অবরোধ
জনদুর্ভোগ সৃষ্টিকারী কর্মসূচি পরিহার করতে হবে
সম্পাদকীয়
প্রকাশ: ১৯ ডিসেম্বর ২০২৪, ১২:০০ এএম
প্রিন্ট সংস্করণ
দাবি আদায়ে অথবা প্রতিবাদের অংশ হিসাবে সড়কপথ অবরোধের সঙ্গে আমরা পরিচিত। সাম্প্রতিক সময়ে দাবি আদায়ে অথবা প্রতিবাদের অংশ হিসাবে রেলপথ অবরোধের ঘটনাও লক্ষ করা যাচ্ছে। এমনকি ট্রেন আটক ও ভাঙচুরের ঘটনাও ঘটছে। এর ফলে রেলের শিডিউল বিপর্যয় ঘটছে। রেলওয়ের শ্রমিক সংগঠন, বিভিন্ন দপ্তর ও ব্যক্তি পর্যায়ে ব্যানার নিয়েও বিভিন্ন দাবিতে আন্দোলন হয়েছে। গত ৬ মাসে এসব দাবিতে রাজধানীসহ সারা দেশে বহুবার রেলপথ অবরোধ, ট্রেন আটক, ভাঙচুরের ঘটনা ঘটেছে। এতে রেলপথ ও ট্রেন ক্ষতিগ্রস্ত হওয়ার পাশাপাশি যাত্রীরাও আহত হয়েছেন। শিডিউল বিপর্যয়ে যাত্রীদের অনেক সময় অবর্ণনীয় দুর্ভোগ পোহাতে হয়েছে।
দেশে রাজনৈতিক-অরাজনৈতিক বিভিন্ন ধরনের সংগঠন ও পেশাজীবী তাদের দাবি-দাওয়া আদায়ে অবরোধ কর্মসূচি পালন করে আসছে। এ প্রবণতা বহুদিন ধরেই লক্ষ করা যাচ্ছে। আমরা মনে করি, জনদুর্ভোগ সৃষ্টিকারী যে কোনো কর্মসূচি পরিহার করা উচিত, তা সেটা সড়কপথ অবরোধ করেই হোক, অথবা রেলপথ। দাবি আদায়ে সাধারণ মানুষকে জিম্মি করার এ কৌশল অগ্রহণযোগ্য। কোনো সংগঠন বা পেশাজীবীর যৌক্তিক দাবি আদায়ে এমন কৌশল অবলম্বন করা উচিত নয়, যা নিরপরাধ মানুষের দুর্ভোগের কারণ হয়ে দাঁড়ায়। এমনিতেই সড়কের অব্যবস্থাপনা, দুর্ঘটনা ও বেহাল গণপরিবহণের কারণে কোথাও যাত্রাকালে মানুষকে নানা দুর্ভোগ পোহাতে হয়। এর ওপর আন্দোলন-অবরোধের কারণে যান চলাচল বন্ধ হয়ে গেলে তার প্রভাব হয় মারাত্মক। বস্তুত দাবি আদায়ে সড়ক ও রেলপথ অবরোধের মতো কর্মসূচি কোনোভাবেই কাম্য নয়। যে কোনো দাবি আদায়ের যৌক্তিক পথ হচ্ছে সংশ্লিষ্ট কর্তৃপক্ষের কাছে তা তুলে ধরা। আলোচনার মাধ্যমে সমাধানের চেষ্টা করা।
আমরা জানি, যানজটের কারণে স্বাভাবিক অবস্থাতেই রাজধানীর এক স্থান থেকে অন্য স্থানে যেতে ঘণ্টার পর ঘণ্টা লেগে যায়। সড়ক বা রেলপথ অবরোধের মতো কর্মসূচির পালন করা হলে নগরীর যানজট পরিস্থিতি কতটা অসহনীয় হয়, তা কারও অজানা নয়। এ বাস্তবতায় সবার প্রতি আমরা আহ্বান জানাই, যৌক্তিক দাবি আদায়ে বিকল্প পন্থা আন্দোলন করুন, তাতে মানুষের আপত্তি থাকার কথা নয়। কিন্তু মানুষকে কষ্ট দিয়ে সড়ক-রেলপথ অবরোধ করবেন না। এ ব্যাপারে সবাইকে সহনশীলতার পরিচয় দিতে হবে।