সয়াবিন তেলে শুল্ক অব্যাহতি
ভোক্তা পর্যায়ে সুফল নিশ্চিত করতে হবে
সম্পাদকীয়
প্রকাশ: ১৮ ডিসেম্বর ২০২৪, ১২:০০ এএম
প্রিন্ট সংস্করণ
ছবি: সংগৃহীত
রমজানে ভোজ্যতেলের দাম সহনীয় রাখতে নতুন বছরের ৩১ মার্চ পর্যন্ত আমদানিতে শুল্ক, রেগুলেটরি ডিউটি ও অগ্রিম আয়কর শতভাগ অব্যাহতি দিয়েছে সরকার। পাশাপাশি ভ্যাট ১৫ শতাংশ থেকে কমিয়ে ৫ শতাংশ করা হয়েছে। এ বিষয়ে জাতীয় রাজস্ব বোর্ড (এনবিআর) তিনটি প্রজ্ঞাপন জারি করেছে। আদতে সরকার বাজারে নিত্যপণ্যের দাম সহনীয় পর্যায়ে রাখতে চায়, এ লক্ষ্যেই এমন সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়েছে। সেক্ষেত্রে বাজারে কিছুটা ইতিবাচক প্রভাব পড়াই স্বাভাবিক। তবে অতীতে আমরা দেখেছি, শুল্ক কমানোর পরও ব্যবসায়ীরা নানা অজুহাতে যৌক্তিক হারে দাম কমান না। খুচরা পর্যায়েও অতিমুনাফার লোভে কৃত্রিম সংকট সৃষ্টি করে ভোক্তার কাছ থেকে বাড়তি অর্থ আদায়ের প্রবণতা থাকে। কাজেই শুল্ক কমানোর এ সিদ্ধান্ত ভোক্তা পর্যায়ে সুফল বয়ে আনবে কিনা, সে প্রশ্ন থেকেই যাচ্ছে। সেক্ষেত্রে বাজারে সাশ্রয়ী মূল্যে পণ্যের জোগান নিশ্চিত করা এবং শুল্ক কমানোর সুফল ভোক্তার কাছে পৌঁছানো হবে সরকারের জন্য বড় চ্যালেঞ্জ। শুল্ক কমানোর ইতিবাচক প্রভাব ভোক্তা পর্যায়ে না পড়লে বরাবরের মতো এর সুবিধা যাবে ব্যবসায়ীদের পকেটে।
বস্তুত, যে কোনো পণ্যের দাম বাড়তে থাকলে প্রথমে ব্যবসায়ী বা আমদানিকারকদের মূল লক্ষ্যই থাকে শুল্ক-কর কমানো। তারা সরকারের বিভিন্ন মহলের সঙ্গে দেন-দরবার করে শুল্ক-কর কমাতে সক্ষম হন। অথচ যে কারণে শুল্ক-কর কমানো হয়, তার ইতিবাচক প্রভাব বাজারে দেখা যায় না। আমরা দেখেছি, পণ্যের দাম নিয়ন্ত্রণে শেষ অস্ত্র হিসাবে শুল্ক কমায় সরকার। তবে শুল্ক কমানোর সুফল যে ভোক্তা পায় না, অতীতে চালসহ নানা পণ্যের ক্ষেত্রে বাজারে এর প্রমাণ মিলেছে।
সয়াবিন তেল বিক্রির ক্ষেত্রে দুর্নীতি ও জালিয়াতি দমনও জরুরি। এক তথ্য বলছে, দেশে সয়াবিনের তুলনায় তুলনামূলক কম দামের পাম অয়েল আমদানি হয় বেশি। অথচ বাজারে পাম অয়েল তেমন পাওয়া যায় না, বেশিরভাগই সয়াবিন তেল। একশ্রেণির অসাধু ব্যবসায়ী সয়াবিনের সঙ্গে পাম অয়েল মিশিয়ে সয়াবিন তেল নামে বিক্রি করে। বাজারের এসব কারসাজি বন্ধ করা জরুরি। সরকারের দেওয়া সুবিধাগুলো নিয়ে যেসব অসাধু ব্যবসায়ী বাজারে কারসাজি করছে, কঠোর তদারকির মাধ্যমে আগে তাদের চিহ্নিত করতে হবে। এ জন্য চাই বাজার তদারকি কঠোর করা। শুল্ক অব্যাহতির সুফল নিশ্চিত করতে সরকার সবার আগে অসাধু সিন্ডিকেট শক্ত হাতে দমন করবে, এটাই প্রত্যাশা।