ভোজ্যতেলে সিন্ডিকেটের থাবা
বাজার নিয়ন্ত্রণে কঠোর পদক্ষেপ কাম্য
সম্পাদকীয়
প্রকাশ: ১৩ ডিসেম্বর ২০২৪, ১২:০০ এএম
প্রিন্ট সংস্করণ
অব্যাহত মূল্যস্ফীতির কারণে ভোক্তাদের যখন দম বন্ধ হওয়ার মতো পরিস্থিতি সৃষ্টি হয়েছে, তখন কিছুদিন পরপর ভোজ্যতেল, চিনিসহ নিত্যপণ্যের কৃত্রিম সংকট সৃষ্টি করা হচ্ছে। ফলে ভোক্তাদের অবর্ণনীয় দুর্ভোগ পোহাতে হচ্ছে। ব্যবসায়ীদের কথামতো দুই ধাপে শুল্ক-কর কমানো হলেও গত এক মাসে ভোজ্যতেলের দাম ভোক্তার সহনীয় পর্যায়ে আসেনি। উলটো দাম বাড়ানোর জন্য ব্যবসায়ীরা সিন্ডিকেট করে সয়াবিন তেল বাজার থেকে উধাও করেছেন। সর্বশেষ সরকারিভাবে লিটারে ৮ টাকা বাড়ানো হলেও মাসব্যাপী ২৮ টাকা বাড়তি দরে বিক্রি করা হয়েছে। এভাবে অসাধু ব্যবসায়ীরা ভোক্তার পকেট থেকে বিপুল অঙ্কের অর্থ লোপাট করেছে। অতিসম্প্রতি হঠাৎ বাজার থেকে হারিয়ে যায় বোতলজাত তেল। দাম বাড়ানোর ঘোষণার পরও অনেক স্থানে সংকট কাটেনি। অতীতেও বিভিন্ন নিত্যপণ্যের কৃত্রিম সংকট সৃষ্টি করা হয়েছিল। ব্যবসায়ীদের দাবি, আন্তর্জাতিক বাজারে সয়াবিন তেলের দাম বেড়েছে। আন্তর্জাতিক বাজারে কোনো পণ্যের দাম বাড়লে আগে আমদানি করা পণ্যও বাড়তি দামে বিক্রি করা হয়। এটা গ্রহণযোগ্য নয়।
অতীতে অবৈধভাবে ভোজ্যতেল মজুত করায় বিভিন্ন প্রতিষ্ঠানকে জরিমানা করা সত্ত্বেও বারবার কৃত্রিম সংকট সৃষ্টি করা হয়েছে। এতেই স্পষ্ট, যারা কারসাজি করে, তারা বেপরোয়া হয়ে উঠেছে। পবিত্র রমজান সামনে রেখে অসাধু ব্যবসায়ীসহ কিছু ব্যক্তি এখন থেকেই ভোজ্যতেলের সংকট তৈরির চেষ্টা করছে। বস্তুত বাজার থেকে বাড়তি মুনাফা হাতিয়ে নিতে কারসাজি করছে সিন্ডিকেট। সম্প্রতি দেশে খাদ্য মূল্যস্ফীতি ১৪ শতাংশের কাছাকাছি পৌঁছে গেছে। এদিকে রমজান শুরু হতে এখনো কয়েক মাস বাকি থাকলেও ইতোমধ্যে বাজারে অসাধু ব্যবসায়ীদের কারসাজি শুরু হয়ে গেছে। কয়েক বছর ধরেই লক্ষ করা যাচ্ছে, অসাধু ব্যবসায়ীরা রমজান শুরুর কয়েক মাস আগে থেকেই ছোলা, ভোজ্যতেল, চিনি প্রভৃতি পণ্যের দাম বাড়ানো শুরু করে। সিন্ডিকেট করে বাজারকে অস্থিতিশীল করে তোলে। অতীতে অসাধু ব্যবসায়ীদের কারসাজি রোধের বিষয়ে কর্তৃপক্ষ অনেক আশ্বাস দিলেও বাস্তবে কোনো কার্যকর পদক্ষেপ নেয়নি। এখন পরিবর্তিত পরিস্থিতিতে কোনো স্বার্থান্বেষী মহল যাতে বাজার অস্থিতিশীল করতে না পারে, সেজন্য কর্তৃপক্ষকে জোরালো পদক্ষেপ নিতে হবে। কর্তৃপক্ষ বাজারে অভিযান পরিচালনা করলেও ভোক্তা এর সুফল পান না। কাজেই আগে সরষের ভেতরের ভূত তাড়াতে যথাযথ পদক্ষেপ নিতে হবে।