খেলাপি ঋণ নবায়নে নতুন বিধান
কেন্দ্রীয় ব্যাংকের নির্দেশনার বাস্তবায়ন কাম্য
সম্পাদকীয়
প্রকাশ: ০৫ ডিসেম্বর ২০২৪, ১২:০০ এএম
প্রিন্ট সংস্করণ
ফাইন্যান্স কোম্পানিগুলোর বিতরণ করা লিজ বা ঋণ শ্রেণিকরণ বা খেলাপি হিসাবে চিহ্নিত করার ক্ষেত্রে প্রচলিত বিধিবিধান মানা হচ্ছে না। কোম্পানিগুলো যে প্রক্রিয়ায় লিজ বা ঋণকে বস্তুগত সম্পদ দেখিয়ে খেলাপিযোগ্য লিজ বা ঋণকে নিয়মিত দেখাচ্ছে, তা গ্রহণযোগ্য নয়। প্রচলিত নীতিমালা অনুসরণ করে ফাইন্যান্স কোম্পানিগুলোকে তাদের বিতরণ করা ঋণ বা লিজ খেলাপি হিসাবে চিহ্নিত করার নির্দেশ দিয়েছে বাংলাদেশ ব্যাংক। এখন থেকে কোনো খেলাপি ঋণ বা লিজকে নিয়মিত করতে হলে অনাদায়ী কিস্তির অর্থ নগদ আদায় করে খেলাপিমুক্ত করতে হবে। এ বিষয়ে মঙ্গলবার কেন্দ্রীয় ব্যাংক থেকে একটি সার্কুলার জারি করে ফাইন্যান্স কোম্পানিগুলোর প্রধান নির্বাহীদের কাছে পাঠানো হয়েছে। এ নির্দেশনা অবিলম্বে কার্যকর করার কথা রয়েছে। সার্কুলারে বলা হয়, এখন থেকে ফাইন্যান্স কোম্পানিগুলোকে লিজ বা ঋণ শ্রেণিকরণ বা খেলাপি হিসাবে চিহ্নিত করার ক্ষেত্রে প্রচলিত নীতিমালা অনুসরণ করতে হবে। খেলাপি ঋণের সংজ্ঞা আরও কঠোর করা হয়েছে। নতুন সংজ্ঞা অনুযায়ী কোনো ঋণ বা ঋণের কিস্তি নির্ধারিত সময়ের মধ্যে পরিশোধিত না হলে পরদিন থেকেই মেয়াদোত্তীর্ণ হবে। পরিশোধ বা নবায়ন করা না হলে তিন মাস পর্যন্ত ঋণ মেয়াদোত্তীর্ণ থাকবে। তিন মাস পর থেকে তা খেলাপি হিসাবে চিহ্নিত হবে। এ বিষয়ে সম্প্রতি বাংলাদেশ ব্যাংক থেকে একটি সার্কুলার জারি করে বাণিজ্যিক ব্যাংকগুলোর প্রধান নির্বাহীদের কাছে পাঠানো হয়েছে। নতুন এ নির্দেশনা আগামী বছরের ১ এপ্রিল থেকে কার্যকর হওয়ার কথা রয়েছে।
এর আগে ঋণখেলাপিদের বিরুদ্ধে কঠোর বার্তা দিয়েছেন অর্থ উপদেষ্টা ড. সালেহউদ্দিন আহমেদ। সম্প্রতি এক অনুষ্ঠানে ‘ঘটিবাটি বিক্রি করে’ খেলাপিদের কাছ থেকে অর্থ আদায় করতে ব্যাংকগুলোর প্রতি আহ্বান জানান তিনি। অর্থ উপদেষ্টা মনে করেন, আর্থিক খাতের দুরবস্থার কারণ হলো আর্থিক প্রতিষ্ঠান ও ব্যাংকগুলোর যথাযথ নিয়ম পালন না করা। আর বাংলাদেশ ব্যাংকের মনিটরিংয়ের কথা থাকলেও তা না করা। তার মতে, এটিই এ খাতের সবচেয়ে বড় দুর্বলতা। বস্তুত ব্যাংক এবং ব্যাংকবহির্ভূত আর্থিক প্রতিষ্ঠানে খেলাপি ঋণ দুরারোগ্য ব্যাধির রূপ নিয়েছে। কাজেই এসব খাতে স্বাভাবিক অবস্থা ফিরিয়ে আনতে হলে দ্রুত কার্যকর পদক্ষেপ নিতে হবে। বন্ধ করতে হবে ঋণখেলাপির সংস্কৃতি।