Logo
Logo
×

সম্পাদকীয়

অবিশ্বাস্য দুর্নীতি: টাকা ফেরত আনা অগ্রাধিকারে থাকতে হবে

Icon

সম্পাদকীয়

প্রকাশ: ০৩ ডিসেম্বর ২০২৪, ১২:০০ এএম

প্রিন্ট সংস্করণ

অবিশ্বাস্য দুর্নীতি: টাকা ফেরত আনা অগ্রাধিকারে থাকতে হবে

অর্থনীতির অবস্থা মূল্যায়নে গঠিত শ্বেতপত্র প্রণয়ন কমিটির প্রতিবেদনে যেসব তথ্য উঠে এসেছে, তাতে পাঠকের চোখ কপালে উঠে যাওয়ার কথা। কী ভয়ানক তথ্য! ২০০৯ থেকে ২০২৩ সাল পর্যন্ত ১৫ বছরে দেশ থেকে ২৩৪ বিলিয়ন ডলার পাচার হয়েছে। অর্থাৎ প্রতিবছর গড়ে পাচার হয়েছে ১৬ বিলিয়ন ডলার, টাকার অঙ্কে ১ লাখ ৮০ হাজার কোটি টাকা। এক হিসাবে পাচারকৃত এই অর্থ দিয়ে ৭৮টি পদ্মা সেতু নির্মাণ করা সম্ভব।

প্রতিবেদনটি শ্বেতপত্রসংক্রান্ত কমিটির প্রধান সিপিডির বিশেষ ফেলো ড. দেবপ্রিয় ভট্টাচার্য প্রধান উপদেষ্টার কাছে জমা দিয়েছেন। প্রতিবেদনে বলা হয়েছে, আলোচ্য সময়ে সবচেয়ে বেশি দুর্নীতি হয়েছে ব্যাংক, বিদ্যুৎ-জ্বালানি, উন্নয়ন প্রকল্প, শিক্ষা ও স্বাস্থ্য খাতে। ২৯টি প্রকল্পের মধ্যে সাতটি বড় প্রকল্প পরীক্ষায় দেখা গেছে, প্রতিটিতে অতিরিক্ত ১০ হাজার কোটি টাকার ব্যয় বেশি। ব্যয়ের সুবিধা বিশ্লেষণ না করে ব্যয় প্রায় ৭০ শতাংশ বাড়ানো হয়েছে।

প্রতিবেদনে আরও বলা হয়েছে, ১৫ বছরে বার্ষিক উন্নয়ন কর্মসূচিতে (এডিপি) ৭ লাখ কোটি টাকার বেশি ব্যয় হয়েছে। প্রতিবেদনটি তৈরি করায় প্রধান উপদেষ্টা এই যুগান্তকারী কাজের জন্য কমিটিকে ধন্যবাদ জানিয়ে বলেছেন, প্রতিবেদনের তথ্যগুলো স্কুল-কলেজ-বিশ্ববিদ্যালয়ের পাঠ্যপুস্তকে অন্তর্ভুক্ত করে শিক্ষার্থীদের পড়ানো উচিত।

শেখ হাসিনার প্রধানমন্ত্রিত্বকালে যে বিপুল অঙ্কের টাকা পাচার হয়েছে, তা নিঃসন্দেহে আমাদের অর্থনীতির বড় ক্ষতি করেছে। এই পরিমাণ টাকা দেশে থাকলে দেশ আরও এগিয়ে যেত বৈকি। এখন প্রয়োজন টাকাগুলো ফেরত আনার ব্যবস্থা করা। অন্তর্বর্তীকালীন সরকার অবশ্য জাতির কাছে প্রতিজ্ঞাবদ্ধ হয়েছে, তারা পাচারকৃত টাকা ফেরত আনার ব্যবস্থা নেবেন। আমাদেরও কথা হলো, টাকা ফেরত আনার ব্যাপারে সর্বাত্মক চেষ্টা নিতে হবে। এক্ষেত্রে বিদেশি রাষ্ট্র, ব্যাংক, সংস্থা ইত্যাদির সহযোগিতার প্রয়োজন রয়েছে অবশ্য। আমরা আশা করব, যথাযথ কূটনৈতিক প্রচেষ্টার মাধ্যমে আমরা এ সহযোগিতা পাব। পুরো টাকা না হলেও পাচারকৃত টাকার সিংহভাগই যদি ফেরত আনা সম্ভব হয়, তাহলেও একটা কাজের কাজ হবে। দ্বিতীয় কথা, দুর্নীতির টাকায় দেশের অভ্যন্তরে যেসব অবৈধ সম্পদ গড়ে তোলা হয়েছে, সেই সম্পদও অধিগ্রহণ করতে হবে। এ কাজটি বিদেশ থেকে টাকা ফেরত আনার চেয়েও সহজ। অন্তর্বর্তী সরকার এসব কাজে সাফল্য অর্জন করবে, এটাই প্রত্যাশা।

Jamuna Electronics

Logo

সম্পাদক : আবদুল হাই শিকদার

প্রকাশক : সালমা ইসলাম