আইনশৃঙ্খলা নিয়ে উদ্বেগ, অপরাধ দমনে কার্যকর পদক্ষেপ কাম্য
সম্পাদকীয়
প্রকাশ: ১৭ নভেম্বর ২০২৪, ১২:০০ এএম
প্রিন্ট সংস্করণ
রাজধানীসহ দেশের বিভিন্ন স্থানে আইনশৃঙ্খলা পরিস্থিতির এখনো কাঙ্ক্ষিত উন্নতি হয়নি। প্রতিদিনই চুরি-ডাকাতি-রাহাজানি ও হত্যাকাণ্ডের একাধিক ঘটনা গণমাধ্যমে প্রকাশ পাচ্ছে। কিছু ঘটনা তো রীতিমতো আতঙ্কজনক। শুক্রবার দিনদুপুরে রাজধানীর আজিমপুরের মেডিকেল স্টাফ কোয়ার্টারের একটি বাসায় ঢুকে ডাকাতরা নগদ দেড় লাখ টাকা, চার ভরি স্বর্ণালংকার ও অন্যান্য মালামালের সঙ্গে একটি দুধের শিশুকেও নিয়ে যায়।
পরদিন শিশুটিকে রাজধানীর মোহাম্মদপুর থেকে উদ্ধার করে র্যাপিড অ্যাকশন ব্যাটালিয়ন (র্যাব)। এ সময় একজনকে আটক করা হয়। এর আগের দিন অর্থাৎ বৃহস্পতিবার ধানমন্ডিতে নিজ বাসায় ডাকাতের ছুরিকাঘাতে নিহত হন যুক্তরাজ্য প্রবাসী এক চিকিৎসক। এছাড়া নড়াইলের কালিয়ায় পূর্বশত্রুতার জেরে হামিদা নামের ৬ বছরের এক শিশু হত্যার শিকার হয়। সকালে বাড়ির পাশে হত্যার হুমকি দেওয়া একটি চিরকুট পাওয়ার কয়েক ঘণ্টার মধ্যেই সন্ধ্যার দিকে শিশুটির লাশ উদ্ধার করে তার স্বজনরা। একই দিন নোয়াখালীর কোম্পানীগঞ্জে দুর্বৃত্তের ছুরিকাঘাতে প্রাণ যায় এক যুবদল নেতার। অন্যদিকে, বগুড়ার দুপচাঁচিয়ায় গৃহবধূ উম্মে সালমা খাতুনকে হত্যার পর ডিপ ফ্রিজে রাখার ঘটনা নতুন মোড় নিয়েছে। তদন্তে পুলিশ জানতে পেরেছে, নিহতের ছেলে নয়, অনৈতিক কাজে বাধা দেওয়ায় বাড়ির এক ভাড়াটিয়া নারী এ হত্যাকাণ্ড ঘটিয়েছে।
এসব ঘটনায় আইনশৃঙ্খলা পরিস্থিতি নিয়ে জনমনে উদ্বেগ বাড়ছে। এ প্রেক্ষাপটে অপরাধ দমনে সংশ্লিষ্টদের আরও মনোযোগ দেওয়া দরকার বলে মনে করছেন বিশেষজ্ঞরা। মূলত হত্যা, নৈরাজ্য ও বিশৃঙ্খলা থেকে সমাজ ও দেশের মানুষকে সুরক্ষা দেওয়ার জন্যই আইনশৃঙ্খলা বাহিনী গঠন করা হয়েছে। মানুষ তাই সংগত কারণেই এ বাহিনীর কাছ থেকে প্রয়োজনীয় নিরাপত্তা প্রত্যাশা করে। এ ব্যাপারে আইনশৃঙ্খলা বাহিনীর যে দায়বদ্ধতা রয়েছে, তা তাদের যথাযথভাবে পরিপালন করা উচিত।
বলার অপেক্ষা রাখে না, নৃশংস হত্যাকাণ্ডসহ বিভিন্ন অপরাধের মাত্রা কমাতে হলে প্রথমে এর পেছনে থাকা কারণগুলো চিহ্নিত করে তা নিরসনে উদ্যোগ নিতে হবে। অপরাধীদের আইনের আওতায় এনে শাস্তি নিশ্চিত করা গেলে হত্যাসহ সামাজিক অপরাধ কমে আসবে-এতে কোনো সন্দেহ নেই। অবশ্য আইনের শাসন প্রতিষ্ঠার পাশাপাশি জবাবদিহিতা প্রতিষ্ঠাও জরুরি। আইনশৃঙ্খলা পরিস্থিতির অবনতিতে সমাজে নানা ধরনের বিশৃঙ্খলা দেখা দিলে দেশের অর্থনৈতিক উন্নয়ন বাধাগ্রস্ত হতে পারে, যা মোটেই কাম্য নয়। রাজধানীসহ সারা দেশে হত্যা-খুনসহ সব ধরনের অপরাধ ও নৈরাজ্যকর পরিস্থিতি নিরসনে সরকার কার্যকর পদক্ষেপ নেবে, এটাই প্রত্যাশা।