Logo
Logo
×

সম্পাদকীয়

ক্রমবর্ধমান শিক্ষিত বেকার

বর্তমান শিক্ষা পদ্ধতি কতটা দায়ী?

Icon

সম্পাদকীয়

প্রকাশ: ০৪ নভেম্বর ২০২৪, ১২:০০ এএম

প্রিন্ট সংস্করণ

ক্রমবর্ধমান শিক্ষিত বেকার

প্রতীকী ছবি

দেশের প্রচলিত শিক্ষা কর্মের সঙ্গে সংযোগ স্থাপন করতে পারছে না। ফলে শিক্ষিত বেকার তরুণের সংখ্যা জ্যামিতিক হারে বেড়ে চলেছে। বাংলাদেশ উন্নয়ন গবেষণা প্রতিষ্ঠান (বিআইডিএস), বাংলাদেশ পরিসংখ্যান ব্যুরোসহ (বিবিএস) বিভিন্ন সংস্থার সাম্প্রতিক প্রতিবেদন থেকে জানা যায়, কর্মের সঙ্গে সংযোগ স্থাপন করতে পারছে না দেশের প্রচলিত শিক্ষা। এজন্য দিন দিন শিক্ষিত ও তরুণ বেকারের চাপ বাড়ছে। ফলে সম্ভাবনাময় এ জনগোষ্ঠীর মধ্যে বেড়ে যাচ্ছে হতাশা। এমন পরিস্থিতিতে দেশ ডেমোগ্রাফিক ডিভিডেন্ট বা জনমিতির সুবিধা থেকে বঞ্চিত হচ্ছে। বিশেষজ্ঞদের মতে, শিক্ষিত তরুণরা বেকার থাকায় রাষ্ট্রীয় ও ব্যক্তি খাতের সম্পদের অপচয় হচ্ছে। তরুণদের দক্ষতা বৃদ্ধি এখন বড় চ্যালেঞ্জ হিসাবে দেখা দিয়েছে। এ সমস্যার সমাধানে শিক্ষার মান বাড়ানোর পদক্ষেপ নিতে হবে এবং কর্মমুখী শিক্ষার ওপর গুরুত্ব বাড়াতে হবে। বস্তুত দেশে শিক্ষিত-তরুণ বেকার বৃদ্ধির বিষয়টি উদ্বেগজনক। আমাদের দেশে প্রায় ৮৫ শতাংশ কর্মসংস্থানই তৈরি হয় অপ্রাতিষ্ঠানিক খাতে। সেখানে বেতন ও সুযোগ-সুবিধা তুলনামূলক কম। যারা শিক্ষিত তারা মানসম্মত কর্মের সঙ্গে যুক্ত হতে চায়। ‘যেনতেন’ কাজের সঙ্গে তারা যুক্ত হতে চান না। এজন্যই দেশে শিক্ষিত বেকারের সংখ্যা জ্যামিতিক হারে বাড়ছে। শিক্ষাকে বাস্তবমুখী করা না হলে এ সংকট আরও বাড়বে। দেশের বর্তমান প্রেক্ষাপটে কারিগরি শিক্ষাকে আরও গুরুত্ব দিতে হবে এবং এ শিক্ষাকে আধুনিক যুগোপযোগী করার পদক্ষেপ নিতে হবে। বেকার তরুণদের নানা রকম সামাজিক অপরাধে জড়িয়ে পড়ার আশঙ্কা থেকেই যায়। বস্তুত দেশে বেকার তরুণের সংখ্যা অস্বাভাবিক হারে বাড়লে কী কী সমস্যা হবে তা বহুল আলোচিত।

চলতি বছরের ২৪ মার্চ প্রকাশিত বিআইডিএস’র এক প্রতিবেদনে বলা হয়েছে, দেশের শিক্ষার মান নিয়ে প্রশ্ন রয়েছে। কেননা দেশে যে শিক্ষা দেওয়া হয় তার সঙ্গে কর্মের সংযোগ নেই। প্রতিবেদনে আরও বলা হয়েছে, জাতীয় বিশ্ববিদ্যালয় থেকে গ্র্যাজুয়েশন করার তিন বছর পরও শিক্ষার্থীদের ২৮ শতাংশ বেকার থাকছেন। জাতীয় বিশ্ববিদ্যালয়ের কারিকুলামে কী ধরনের পরিবর্তন আনা দরকার তা খুঁজে বের করতে হবে। কারিকুলামে পরিবর্তনের পাশাপাশি শিক্ষার্থীদের দক্ষতা বাড়াতে যা যা করণীয় তা করতে হবে। দেশের অন্যান্য বিশ্ববিদ্যালয়ের কারিকুলামে কী ধরনের পরিবর্তন আনা দরকার তা-ও খুঁজে বের করতে হবে এবং শিক্ষার্থীদের দক্ষতা বাড়াতে যা যা করণীয় তা করতে হবে।

বিশেষজ্ঞদের মতে, বাংলাদেশ যে ডেমোগ্রাফিক ডিভিডেন্টে আছে তা আগামী ১৫-২০ বছরের মধ্যে শেষ হয়ে যাবে। তরুণ ও শিক্ষিত জনগোষ্ঠীকে এ সময়ের মধ্যে ব্যবহার করা না গেলে পরে এ সুযোগ আর আসবে না। ডেমোগ্রাফিক ডিভিডেন্ট সুযোগের অপচয় রোধে কার্যকর পদক্ষেপ নিতে হবে। দক্ষ মানবসম্পদ তৈরি করতে দরকার মানসম্মত শিক্ষা। শিক্ষিত তরুণদের যাতে বেকার থাকতে না হয়, এটা নিশ্চিত করা দরকার। টেকসই উন্নয়নের জন্য দেশের সংখ্যাগরিষ্ঠ মানুষের আর্থিক সক্ষমতা বাড়ানো জরুরি। অপ্রাতিষ্ঠানিক খাতের চাকরির প্রতি শিক্ষিত বেকার তরুণদের আগ্রহ কম। কাজেই প্রাতিষ্ঠানিক খাতের কর্মসংস্থান বৃদ্ধির পদক্ষেপ নিতে হবে। এ খাতে কাঙ্ক্ষিত মাত্রায় কর্মসংস্থান সৃষ্টির লক্ষ্যে দেশে বিনিয়োগবান্ধব পরিবেশ সৃষ্টি করতে হবে।

Jamuna Electronics

Logo

সম্পাদক : সাইফুল আলম

প্রকাশক : সালমা ইসলাম