ওসমানী বিমানবন্দর সম্প্রসারণ, আর যেন মেয়াদ বাড়াতে না হয়
সম্পাদকীয়
প্রকাশ: ২৪ অক্টোবর ২০২৪, ১২:০০ এএম
প্রিন্ট সংস্করণ
ছবি: সংগৃহীত
নির্ধারিত সময়ে ও প্রথম প্রাক্কলিত ব্যয়ে যে কোনো সরকারি প্রকল্প বাস্তবায়িত হওয়ার কথা থাকলেও বাস্তবে তা লক্ষ করা যায় না। দফায় দফায় প্রকল্পের মেয়াদ বাড়ানো যেন নিয়মে পরিণত হয়েছে। পাশাপাশি বৃদ্ধি পায় ব্যয়। জানা যায়, আবারও মেয়াদ বাড়ানো হয়েছে সিলেট ওসমানী আন্তর্জাতিক বিমানবন্দর সম্প্রসারণ প্রকল্পের কাজ। এর আগে দুই দফা মেয়াদ বাড়ানো হয়েছিল প্রকল্পটির। গত ৫ বছরে কাজ শেষ হয়েছে মাত্র ২২ শতাংশ। এখন তৃতীয় দফায় মেয়াদ বাড়ানো হয়েছে ২০২৫ সাল পর্যন্ত। ২০১৮ সালের ৭ নভেম্বর ২ হাজার ৩০০ কোটি টাকায় এ প্রকল্প অনুমোদন পায়। নানা অজুহাতে এখন ব্যয় বেড়েছে প্রায় ৮০০ কোটি টাকা। এদিকে ঠিকাদারের বিরুদ্ধে অভিযোগ উঠেছে, কাজ শেষ না করেই তারা ২৫০ কোটি টাকার বেশি উত্তোলন করেছেন। বিগত আওয়ামী লীগ সরকারের আমলে নেওয়া এ প্রকল্পের বিরুদ্ধে শুরু থেকেই নানা অনিয়ম-দুর্নীতির অভিযোগ উঠেছিল। ত্রুটির কথা বলে কয়েক দফায় নকশা পরিবর্তন করা হয়। এ ভুলের জন্য যে বা যারা দায়ী, তাদের আইনের আওতায় আনতে হবে। সাবেক এক প্রকল্প পরিচালকের বিরুদ্ধেও দুর্নীতির অভিযোগ করেছিলেন ঠিকাদার। সেই অভিযোগ কেন আমলে নেওয়া হয়নি, তা খতিয়ে দেখা দরকার। প্রকল্পের ঠিকাদার কর্তৃপক্ষের বক্তব্য-তারা নিয়মনীতি মেনে ২১৩ কোটি টাকার বিল নিয়েছেন। তবে তৎকালীন প্রকল্প পরিচালকের দুর্নীতির কারণে তারা এক বছরের বেশি সময় কাজ করতে পারেননি।
প্রকল্পের আওতায় আন্তর্জাতিক মানসম্পন্ন ফুয়েলিং সিস্টেম স্থাপন করার কথা রয়েছে। এছাড়া পূর্ণাঙ্গ আন্তর্জাতিক মানের টার্মিনাল ভবন নির্মাণ, নিরবচ্ছিন্ন বিদ্যুৎ সরবরাহের জন্য পৃথক সাবস্টেশন স্থাপন, নিরাপত্তার জন্য ফায়ার ফাইটিং সিস্টেমসহ আরও কিছু কাজ রয়েছে। এই মেগা প্রকল্পের মূল কাজ শুরু হয় ২০২০ সালে। শেষ হওয়ার কথা ছিল ২০২২ সালে। ওই সময়ে শেষ করতে না পারায় পরে সময় বাড়ানো হয়। প্রকল্পটির কাজ ২০২৩ সালের ২৭ মে শেষ হওয়ার কথা ছিল। কিন্তু কাজ শুরু করতে গিয়ে নকশার ত্রুটির বিষয়টি সামনে আসে। বর্তমানে এ প্রকল্পের খরচ ৪১ শতাংশ বেড়ে দাঁড়িয়েছে ৩ হাজার ২০০ কোটি টাকায়। ২০২৫ সালে নির্ধারিত মেয়াদে কাজ শেষ হবে কি না, তা নিয়েও তৈরি হয়েছে অনিশ্চয়তা। প্রকল্পটি যাতে নির্ধারিত সময়ে সম্পন্ন করা যায়, তা নিশ্চিত করতে হবে। রোধ করতে হবে সরকারি প্রকল্প বাস্তবায়নে সব ধরনের অনিয়ম-দুর্নীতি।